
হুমায়ুন জহিরউদ্দীন আমীর-ই-কবীর
আবু রাইহান

হুমায়ুন কবীর ছিলেন প্রজ্ঞাদীপ্ত প্রগতিশীল লেখক! জ্ঞান ঋদ্ধ মননের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন! সংকীর্ণ মানসিকতার সাম্প্রদায়িক রাজনীতি তিনি কোনদিন করেননি! হুমায়ুন কবীরের সহাধ্যায় বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় তাঁর আত্মস্মৃতি ‘তরী হতে তীর’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘মুসলিম হওয়ার দরুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জীবনে হুমায়ুন কবীরকে বেশকিছু অপমান অসম্মানজনক মন্তব্য নীরবে সহ্য করতে হয়েছে!’ সাহিত্যিক আজহারউদ্দিন খান, ‘হুমায়ুন কবীর: এক আলোকিত ব্যক্তিত্ব’ নামক প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘তাঁর মধ্যে এমন এক উদার ও মহৎ মানবিকতা ছিল যা তাঁকে সর্বক্ষেত্রে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মানুষের প্রতি ভালোবাসায় অবিচল রেখেছিল! এই অবিচল থাকার মূল ছিল তাঁর গভীর ইতিহাসবোধ! তিনটি সংস্কৃতি- হিন্দু সংস্কৃতি, ইসলামী সংস্কৃতি ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সমন্বিত ধারা তাঁর মননকে সমৃদ্ধ করেছিল এবং যাবতীয় ক্ষুদ্রতা ও সঙ্কীর্ণতা থেকে তাঁকে মুক্ত রেখেছিল! অগাধ পাণ্ডিত্য তাকে ডগমেটিক করেনি তাঁকে মুক্তবুদ্ধির ৱ্যাসানাল করেছে!’
হুমায়ুন কবীরের জন্ম ১৯০৬ সালে ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার কেশবপুর গ্রামে! তাঁর পুরো নাম ছিল হুমায়ুন জহিরউদ্দিন আমীর-ই-কবীর! তাঁর পিতা আবুল খায়ের কবীরউদ্দিন আহমদ ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট! ব্রিটিশ সরকার থেকে খান বাহাদুর উপাধি পেলেও তিনি স্বাধীনচেতা ব্যাক্তি ছিলেন! তিনি জালিয়ানওয়ালাবাগের নেতা ডা. সৈফুদ্দিন কিচলু, মহাত্মা গান্ধী, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, কাজী নজরুল ইসলাম প্রমূখকে নিজের বাড়িতে আপ্যায়ন করেছেন! গান্ধীজীর ত্রাণ তহবিলে তাঁর পত্নী সাজেদা খাতুন নিজের হাতের দুটি সোনার বালা খুলে দান করেছিলেন! হুমায়ুন কবীরের পিতা সরকারি কাজ করলেও পড়াশুনার মধ্যে নিমগ্ন থাকতেন! তাঁর বাড়িতে বিরাট বইয়ের সংগ্রহ ছিল ! এই পারিবারিক গ্রন্থাগার হুমায়ুন কবীরের জীবনকে গড়ে দিয়েছিল! প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র থাকাকালীন নজরুলের সঙ্গে হুমায়ুন কবীরের পরিচয় হয়! ‘ধূমকেতু’র আড্ডায় মাঝে মাঝে হুমায়ুন কবীরকে দেখা যেত! বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য থাকাকালীন ১৯৩৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারির অধিবেশনে তিনি নজরুলের বাজেয়াপ্ত বইগুলির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন! কিন্তু তৎকালীন বঙ্গদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন তাঁর দাবি নাকচ করে দিয়েছিল! ১৯৫৩ সালের মে মাসে অসুস্থ নজরুলকে সুস্থ করে তোলার জন্য ‘নজরুল নিরাময় সমিতি’ কবিকে ইউরোপে পাঠাবার উদ্যোগ নেয়! এই উদ্যোগে ভারত সরকারের কাছ থেকে হুমায়ুন কবীর রাহা খরচ বাবদ অনুদান হিসেবে আড়াই হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন! তিনি তখন কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা সচিব ছিলেন! হুমায়ুন কবীর ১৯২৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে সরকারি বৃত্তি নিয়ে ১৯৩১ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান! সেখানে ইংরেজির ছাত্র হয়েও ইংরেজি না নিয়ে দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, মর্ডান গ্রেটস পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন! এশিয়াবাসীদের মধ্যে তিনি এই সম্মানের সর্বপ্রথম অধিকারী! অক্সফোর্ডে পড়তে পড়তেই জার্মান ও ফরাসি ভাষা শিখে ফেলেছিলেন! শিক্ষাবিদ হিসেবে তাঁর আন্তর্জাতিক খ্যাতি ছিল!বক্তারূপে বিশেষ সুনামের অধিকারী হুমায়ুন কবীর দেশে-বিদেশে বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণ পেয়েছেন। অক্সফোর্ডে আইনস্টাইন ও রাসেলের ওপর তিনি হার্বার্ট স্পেন্সার বক্তৃতা দিয়েছেন। এ কাজে এশীয়দের মধ্যে তিনিই প্রথম।
১৯৫৭ সালে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী আহূত কাগমারি সম্মেলনে তিনি ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।সাহিত্য,সংস্কৃতি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৫৮ সালে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৫৯ সালে আন্নামালাই বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯৬১ সালে এথেন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট এবং বিশ্বভারতী থেকে ‘দেশিকোত্তম’ সম্মাননা পান!
বিদেশ থেকে পড়াশোনা শেষ করে ফিরেই সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এর অনুরোধে তিনি অন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের লেকচারার পদে যোগ ১৯৩২ সালে! এক বছর অন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করার পর ১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী ও দর্শন বিভাগে অধ্যাপনা করেন! ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব হন! মাওলানা আবুল কালাম আজাদ তখন কেন্দ্রের শিক্ষা মন্ত্রী ছিলেন! স্বাধীনতা অর্জনে নেপথ্য কাহিনী মাওলানা আজাদের লেখার ইচ্ছে হত! কিন্তু বার্ধক্যজনিত এক ধরনের অলসতা তাঁকে আচ্ছন্ন করে রাখত! নেপথ্য কাহিনীর মধ্যে তাঁর নিজের কথা বা ভূমিকা কিরূপ ছিল তা মাঝেমধ্যে অন্তরঙ্গ জনদের কাছে বলতেন! কাগজে-কলমে সে গুলি লিপিবদ্ধ করার কথা বললে তিনি নির্লিপ্ত হয়ে যেতেন! অথচ এককালে কাগজ সম্পাদনা করেছেন,ক্ষুরধার লেখনীর দ্বারা ব্রিটিশ শাসককে নাস্তানাবুদ করেছেন!হুমায়ুন কবীরের নিরন্তর তাগাদায় তিনি লেখার বদলে মুখে বলে যাবেন তাঁর ইংরেজি অনুবাদ কবীর করবেন এই শর্তে তিনি শেষ পর্যন্ত রাজি হন! স্বাধীনতা অর্জনের নেপথ্য কাহিনী আজাদ উর্দুতে বলতেন আর ইংরেজি তরজমা করতেন হুমায়ুন কবীর! এভাবেই ‘ইন্ডিয়া উইনস ফ্রিডম’ গ্রন্থটি রচিত হয়!
১৯৫০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তিনি ছিলেন প্রথম চেয়ারম্যান! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মুলে তাঁর বড়ো ভূমিকা ছিল! ১৯৫২ সালে কেন্দ্রীয় শিক্ষা দপ্তরের পূর্ণ সচিব থাকাকালীন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের স্বীকৃতি পেয়েছিল! জহরলাল নেহেরুর পরামর্শে সরকারি চাকরি ত্যাগ করে ১৯৫৬ সালে রাজ্যসভার সদস্য হয়ে বেসরকারি বিমান চলাচল মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হন! ১৯৫৭ সালে লোকসভার সদস্য হয়ে বিজ্ঞান গবেষণা ও সংস্কৃতি বিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী হন! সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী থাকাকালে দল-মত-নির্বিশেষে সাহিত্যিকদের তিনি একটু বেশি প্রশ্রয় দিতেন! সৈয়দ মুজতবা আলী যখন বগুড়া আজিজুল হক কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় অধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করে এদেশে চলে আসেন! তখন ইন্ডিয়ান কালচারাল রিলেশন্সের প্রথম সচিব পদে তাঁকে স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা হুমায়ুন কবীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে বলে দিয়েছিলেন! হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে- ‘সাহিত্য আকাদেমি’,‘সংগীত নাটক একাডেমি’,‘ললিতকলা একাডেমি’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল! তাঁর উদ্যোগে কলকাতায় ‘রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচার’, ‘ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম’,‘এশিয়াটিক সোসাইটি’র নতুন ভবন নির্মিত হয়েছিল! কেন্দ্রের পেট্রোলিয়াম ও রসায়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী থাকাকালীন হলদিয়ায় তৈল শোধনাগার তৈরির অনুমোদন দিয়েছিলেন! তৎকালীন কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রী টি টি কৃষ্ণমাচারি চেয়েছিলেন নিজের রাজ্য তামিলনাড়ুতে এই তৈল শোধনাগার স্থাপন করতে! কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর প্রবল বিরোধিতাকে উপেক্ষা করে তিনি পরিকল্পনা কমিশনের মিটিংয়ে হলদিয়া তৈল শোধনাগার স্থাপনের পরিকল্পনা অনুমোদন করিয়ে নিয়েছিলেন! দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো হুমায়ুন কবীরের প্রচেষ্টায় হলদিয়াতে তৈল শোধনাগার গড়ে উঠলেও ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন এর কর্মকর্তারা তাঁর জন্মশতবর্ষেও একবার তাঁকে স্মরণ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি!রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘ভারতবর্ষের অধিবাসীদের দুই মোটা ভাগ হিন্দু ও মুসলমান! যদি ভাবি মুসলমানদের অস্বীকার করে এক পাশে সরিয়ে দিলেই দেশের সকল মঙ্গল প্রচেষ্টা সফল হবে তাহলে বড়ই ভুল করব!’ হুমায়ুন কবীর রবীন্দ্রনাথের এই ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে চেয়ে ছিলেন! হুমায়ুন কবীর জাতীয় কংগ্রেস যে সংখ্যালঘু কমিটি গঠন করেছিল তার সদস্য ছিলেন! ১৯৫৭ সালে এই সংখ্যালঘু কমিটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে স্বাধীনতার পূর্বে এবং স্বাধীনতার পরে মুসলিমদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুসারে বিভিন্ন রাজ্যে কত চাকরি দেয়া হয়েছে তার একটি রিপোর্ট তৈরি করার লক্ষ্যে রাজ্যগুলির কাছে তথ্য চেয়েছিল! কিন্তু অধিকাংশ রাজ্য এই সংখ্যালঘু কমিটিকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেনি! প্রখ্যাত সাংবাদিক এ জি নূরানী দিল্লির নেহেরু মিউজিয়ামে রক্ষিত দলিল-দস্তাবেজ ঘেঁটে হুমায়ুন কবীরের মন্তব্যসমূহ উদ্ধার করে ‘হুমায়ুন কবীর এন্ড সাচার কমিশন’ নামে একটি প্রবন্ধ ২০০৮ সালে ফ্রন্টলাইন পত্রিকার জানুয়ারি সংখ্যায় প্রকাশ করেছিলেন! এই প্রবন্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের আর্থিক উন্নয়ন কিভাবে করা সম্ভব সে বিষয়ে হুমায়ুন কবীর কি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন তার বিস্তৃত বিবরণ রয়েছে!যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠনের পথ ভারতে হুমায়ুন কবীর প্রথম দেখিয়েছিলেন! পশ্চিমবঙ্গে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হবার পর তিনি ইউরোপে যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন- ‘আজ বাংলায় যা করে দিয়ে গেলাম ভবিষ্যতে ভারতেও তাই হবে! এই শুরু হল যুক্তফ্রন্ট রাজনীতির যুগ! সমগ্র ভারতবর্ষ এই রাজনীতিকে অনুসরণ করবে(পালাবদলের পালা:বরুণ সেনগুপ্ত)!’
১৯৬৯ সালে ১৮ আগস্ট মাত্র ৬৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হুমায়ুন কবীর পরলোকগমন করলে তাঁকে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইউনিভার্সিটির কবরস্থানে সমাহিত করা হয়!
কলকাতায় আসার পর হুমায়ুন কবীর অধ্যাপনার সঙ্গে সাহিত্য রাজনীতি একসঙ্গে শুরু করেন! হুমায়ুন কবীরের মেধা ও মনন তাঁকে এমন এক উচ্চমার্গে উন্নীত করেছিল, যেখানে রাজনীতির ক্ষেত্রে তাঁর মত মনীষার জুড়িদার আর কেউ ছিলেন না!সাহিত্যক্ষেত্রে প্রথমত কবি হিসেবেই হুমায়ুন কবীরের আত্মপ্রকাশ ঘটে।ছাত্রাবস্থাতেই তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘স্বপ্নসাধ’ (১৯২৭)প্রকাশিত হয়! দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘সাথী’ (১৯৩১) প্রকাশিত হয় এবং তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘অষ্টাদশী’ (১৯৩৮)প্রকাশিত হয়! প্রকাশিত তিনটি কাব্যগ্রন্থে প্রকৃতি ও প্রেমবিষয়ক তাঁর স্বচ্ছ রোম্যান্টিক মানসের পরিচয় বহন করে।বন্ধুদের মতো ইউরোপীয় ধারার আধুনিকতার চর্চা না করে তিনি কাব্যক্ষেত্রে রবীন্দ্র ঐতিহ্যের অনুসরণ করেন।
“আমি যারে ভালোবাসি সে যদি থাকিত হেথা আজি
তবে এই মধ্যাহ্নের রৌদ্রস্নাত শ্যাম তরুরাজি
ভরিয়া উঠিত পুষ্পে, নিদাঘের নির্মেঘ গগনে
হৃদয় মুখরি মম বাঁশরী বাজে ক্ষণে ক্ষণে!
আলোছায়া-রচা পথে বাতাসে পাইন গন্ধ ভাসে!
দূর হতে কলকণ্ঠে কপট কলহ ধ্বনি আসে!
হাসি কথা গানের সুরে মধ্যাহ্নের পরিপূর্ণ ক্ষণ
অপূর্ব ঐশ্বর্যভারে ভরি দিত সকল জীবন!”
(আমি যারে ভালোবাসি)
“একদিন যারা কাছে ছিল, ছিল প্রিয়
কালের প্রবাহে সখি তাদের ভুলিও!
জীবনের বন্ধুর তরঙ্গাকুল পথে
হয়তো বাঁকের শেষে দৃষ্টিপথ হতে
অকস্মাৎ চলে যায় -যেমনি সহসা
একদিন এসেছিলে! নিশির তমসা
মূর্তিখানি হয়তো মুছিল অন্ধকারে
তুমি এলে লক্ষ্য ধরি রাত্রি পরপারে!”
(একদিন)
হেরিনু দিনের শেষে
গোধূলির সোনা পড়েছে আসিয়া
তোমার সোনার কেশে!
নাহি তব বেশ, নাহি কোন ভূষা,
কেবল নয়নে লাজারুণ ঊষা,
করুন বাহুর আড়ালে লুকায়ে
তরুণ দেহের লাজ,
মনের বনের সোনার হরিণী
কিশোরী দাঁড়ালে আজ!”
(কিশোরী)
“আজি মোর মনে পড়ে একদিন ভেবেছিনু মনে
রচিব এ ধরনীতে আপনার লাগি সযতনে
নিরালা বিরামকুঞ্জ! সংসারের সংগ্রামে যুঝিয়া
ঘটনার নিত্য ঘাত-প্রতিঘাতে পরিশ্রান্ত হিয়া
সেথায় আনিব টানি বিশ্রামের লাগি! সুগোপনে
ঝরিবে অমৃতধারা, দিবানিশি বরষিবে মনে…
আনন্দে ভরিবে ধরা!উজলিয়া আমার নিখিল
আসিবে প্রেয়সি মম তন্নীবালা রূপসী কিশোরী…
রহিব চাহিয়া মুগ্ধ! স্বপ্নভরা তাহার নয়নে
ঝলিবে প্রেমের আলো! প্রাণে মম কোমল গুঞ্জনে…”
(সাথী)
“কী আর এমন ক্ষতি যদি আমি চোখে চোখ রাখি
পদাবলী পড়ে থাক সাতশে জুলাই বহুদূর
এখন দুপুর দ্যাখো দোতলায় পড়ে আছে একা
চলো না সেখানে যাই। করিডোরে আজ খুব হাওয়া
বুড়ো বটে দু’টো দশে উড়ে এলো ক’টা পাতিকাক।
স্নান কি করোনি আজ ? চুল তাই মৃদু এলোমেলো?
খেয়েছ তো? ক্লাস ছিলো সকাল নটায়
কিছুই লাগে না ভালো; পাজামা প্রচুর ধুলো ভরা
জামাটায় ভাজ নেই পাঁচদিন আজ
তুমি কি একটু এসে মৃদু হেসে তাকাবে সহজে
বললাম তো কাল রাতে চাঁদ ছিল দোতলার টবে
নিরিবিলি কটা ফুলে তুমি ছিলে একা-”
(পার্শ্ববর্তিনী সহপাঠিনীকে)
তাঁর বাসনা জাগে সুধীন্দ্রনাথ দত্তের ‘প্রবাসী’ পত্রিকার অনুরূপ উচ্চমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রকাশনের! ১৯৩৮ সালে বুদ্ধদেব বসুকে সহযোগী করে ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘চতুরঙ্গ’ শুরু করেন!১৯৪৩ সালে উর্দু থেকে মসদ্দসে হার্লী-র বাংলা অনুবাদ তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব।
রবীন্দ্রনাথের প্রতি হুমায়ুন কবীরের গভীর শ্রদ্ধা ছিল! রবীন্দ্রনাথের জন্ম শতবর্ষ যাতে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে ভারতের সব রাজ্যে পালিত হয় এবং প্রতিটি রাজ্যে রবীন্দ্র ভবন নির্মিত হয় কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে তিনি সমস্ত রকম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন! হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে রবীন্দ্রনাথের জন্ম শতবর্ষে ভারতবর্ষের প্রত্যেক রাজ্যের রাজধানীতে রবীন্দ্রনাথের নামে একটি করে প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হয়েছিল!
হুমায়ুন কবীর ১৯৪৩ সালে ‘সংস্কৃতির সমন্বয়’ নামক প্রবন্ধে লিখেছেন, “ভারতীয় সংস্কৃতির ইতিবৃত্ত আলোচনা করলে দেখা যায় তা ধারাবাহিক, সংশ্লেষণমূলক ও ক্রমবর্দ্ধমান। এই ভারতবর্ষের মাটিতে অতীতকালে বহু বিপরীত উপাদানের সমন্বয় ঘটেছিল। ইসলামের আবির্ভাবে বিরোধ ও সমন্বয় মূলক সেই একই প্রক্রিয়া হাজারগুণে বৌদ্ধিক হয়ে দেখা দিল। এদেশের ইতিহাসে এই প্রথম ভারতবর্ষের ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্থানকে উপযুক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হতে হলো। এমন একটি জীবনদর্শনের মুখোমুখি এসে তাকে দাঁড়াতে হলো, যা তারই মত পরিণত ও সুনিদ্দিষ্ট। দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য তাদের ভেতরকার সংঘাত আরও বেশি প্রকট হয়ে উঠলো।… ভারতবর্ষের উপর ইসলামের প্রভাব খুব গভীর ও নিবিড় হয়ে দেখা দিয়েছিল। পুরাতন চিন্তাধারার সঙ্গে নতুন চিন্তাধারার সংযোগের ফল এই হলো যে, যাঁদের মন তীক্ষ্ণ ও অনুভূতিপ্রবণ, তাঁরা বিশ্বের সনাতন সমস্যগুলো নিয়ে আবার নতুন করে ভাববার তাগিদ বোধ করলেন। প্রাচীন রীতিনীতির অত্যাচার থেকে মানুষের মন হলো মুক্ত। হিন্দু ও ইসলামীয় চিন্তাধারার সংযোগকে চিহ্নিত করবার জন্যে দেখা দিল নতুন ধর্ম, নতুন জীবনবাদ। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই উভয় সংস্কৃতির মধ্যে মিলনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে পারে নি এই জন্যে যে, স্থানিক ব্যবধান ও দুরধিগমতা তখনো প্রবলরূপে বর্ত্তমান ছিল। রাজধানী ও পল্লীজীবনের মধ্যে চিন্তা ও সংস্কৃতির যোগ তখনও মাত্র আংশিকরূপে বিদ্যমান। নগরগুলোতে অবশ্য এই দুই সংস্কৃতির মিলন ঘটেছিল! মুসলমানের সংখ্যালঘুতার অসুবিধা তার রাজনৈতিক গুরুত্বের দারুন চাপা পড়ে গিয়েছিল। ক্ষুদ্র, সংহত ও মোটের উপর একজাতিবদ্ধ মুসলমান অভিজাত সম্প্রদায় নাগরিক সংস্কৃতিকে একটি বিশিষ্ট রূপ দিলেন। গ্রামাঞ্চলে কিন্তু তা হলো না। যাতায়াতের সুবিধা না থাকায় স্থানীয় সম্প্রদায়গুলি তাদের স্বতন্দ্র সত্তা অনেকখানি অব্যাহত রাখলো। মানুষে মানুষে নিয়মিত অদলবদল কিম্বা বিভিন্ন ভাবধারার নিয়ত বিনিময় না ঘটলে যা হয় তাই হলো ! সামাজিক ব্যবস্থার অন্তনিহিত কঠোরতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। ফলে গ্রামাঞ্চলবাসি মুসলমানেরা হিন্দু জীবনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়ল। ধর্মবিশ্বাসে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হলেও গ্রামীন সংস্কৃতি মূলত হিন্দুই রয়ে গেল! কেন না মানুষ তার ধর্মবিশ্বাস বদলালেও জীবনযাত্রা বদলালো না।… দর্শন ও অর্থনীতির ক্ষেত্র প্রথম দৃষ্টিতে পরস্পর থেকে সম্পূর্ণ বিশিষ্ট বলে মনে হলেও এই দুই ক্ষেত্রে হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে সহযোগিতার নির্ভুল প্রমাণ পাওয়া যায়। বস্তুত ভারতীয় হিন্দুর বর্ত্তমান দৃষ্টিভঙ্গির কতকটা অংশ বেদ-উপনিষদ থেকে আহৃত, আর কতকটা অংশ ইসলামের শিক্ষা থেকে নেওয়া সে সম্বন্ধে ঠিক করে কিছু বলা কঠিন। ঠিক একই ভাবে, আচার আচরণে বিশ্বাসে ও বিধিতে ভারতীয় মুসলমানের মধ্যে হিন্দু সংস্কৃতি ও দৃষ্টিভঙ্গির সুস্পষ্ট প্রভাবের প্রমাণ মেলে।”
হুমায়ুন কবীর ‘পরিচয়’ পত্রিকাতে ‘সাহিত্যে বাস্তবতা’ নামক প্রবন্ধে খেদের সঙ্গে বলেছিলেন, “সাতশো বছর ধরে হিন্দু-মুসলমান পাশাপাশি বাস করেও বাংলা সাহিত্যে মুসলমান সমাজ জীবনের চিত্র ফুটে ওঠেনি! পিয়ন, খানসামা, কোচওয়ান চরিত্র অংকনের মধ্যে মুসলমান সমাজকে পাওয়া যাবে না! গভীর অন্তরঙ্গ চরিত্র সৃষ্টি হয়নি!” তিনি নিজেই এ কাজে এগিয়ে এসেছিলেন!আধুনিকতার ধাঁচে ‘নদী ও নারী’ নামে প্রথম এবং একমাত্র উপন্যাস লিখলেন! নদী তীরবর্তী চরের মানুষের সুখ-দুঃখ এবং সংঘাতের কাহিনী! বাংলা ভাষায় উপন্যাস লেখার আগে ইংরেজি ভাষায় ‘ম্যান এন্ড রিভার্স’(১৯৪৫)নামে একটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন! এই ইংরেজি উপন্যাস থেকেই ‘নদী ও নারী’(১৯৫০) উপন্যাসের উৎপত্তি!ঢাকায় সাবেক খানের পরিচালনায় ‘নদী ও নারী’ চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয় (১৯৬৫)!
‘নদী ও নারী’ একটি অত্যন্ত হৃদয়গ্ৰাহী উপন্যাস। গ্রামের পটভূমিতে এ উপন্যাস রচিত। চরের মানুষের জীবনালেখ্য মূর্ত হয়ে উঠেছে উপন্যাসের পরতে পরতে।‘নদী ও নারী’ উপন্যাসটির পটভূমি পদ্মার প্রকৃতি এবং তার উপর ভেসে ওঠা চর। এর সমস্যাপট সেই নতুন সীমিত ভূখণ্ডটিতে মানুষের বেঁচে থাকার আবর্তন। সাহিত্যিক বুদ্ধদেব বসু লিখেছিলেন, ‘এই উপন্যাসের পদ্মা “বর্ষায় প্রখর, শরতে সুন্দর, কালবৈশাখীর ঝড়ের সন্ধ্যায় ভয়াল, অপমৃত্যুর আধার, প্রাণের পালয়িত্রী- আবার সুদীর্ঘ অনাবৃষ্টির পরে হঠাৎ বর্ষণে বন্যাস্ফীতা সর্বগ্রাসিনী”।
পল্পী মানুষের সুখ-দুঃখ হাসি-কান্না, হিংসাবিদ্বেষ উপন্যাসের চরিত্রগুলোতে সাবলীল হয়ে ধরা পড়েছে। বন্ধুত্বের গভীরতা যেমন প্ৰাণে দোলা জাগায়, তেমনি হিংসাপরায়ণতা মনকে করে তোলে বিষাদময়। একদিকে সংস্কার, অন্যদিকে বাঁচার তাগিদ! একদিকে প্ৰেম, অন্যদিকে বিদ্বেষ! সমাজের ঘটনাবহুল জীবন উপন্যাসের চরিত্রগুলোকে করে তুলেছে প্রাণবন্ত। নদীর সঙ্গে যেমন বাংলাদেশের মানুষের সম্পর্ক আবহমান কালের,নারী ছাড়াও মানুষের জীবন তেমনি অসম্পূৰ্ণ – লেখক এ সত্যই প্রকাশ করেছেন তাঁর উপন্যাসে। নজু মিয়া আর আসগর মিয়া দুই বন্ধু। তাদের জীবনের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে ‘নদী ও নারী’ উপন্যাসের কাহিনী। আমিনাকে বিয়ে করা নিয়ে দুই বন্ধুর শক্ৰতা, মালেক ও নুরুর বিয়ের প্রতিবন্ধকতা কাহিনীকে দিয়েছে নাটকীয়তা। ‘নদী ও নারী’ উপন্যাসটিকে অনায়াসে চরের মানুষের জীবন্ত জীবনালেখ্য বলে আখ্যায়িত করা চলে।অনবদ্য ভাষা এবং নদী-মানুষ-প্রকৃতি একাকার হয়ে উপন্যাসটির সরল আখ্যান একটি দার্শনিক মাত্রা পেয়েছে।বিচিত্রা,বুলবুল,চতুরঙ্গ পত্রিকায় তিনি কিছু গল্প লিখেছিলেন যেগুলি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি!প্রথম জীবনে হুমায়ুন কয়েকটি নাটকও রচনা করেছিলেন যেগুলি অভিনীত হয়েছিল, কিন্তু মুদ্রিত হয় নি।
প্রবন্ধকাররূপে হুমায়ুন কবীর ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় দর্শন, সাহিত্য, শিক্ষানীতি ও সমাজতত্ত্ব বিষয়ে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য মৌলিক প্রবন্ধ রচনা করেছেন। সেগুলির মধ্যে রয়েছে: ইমানুয়েল কান্ট (১৯৩৬), শরৎ সাহিত্যের মূলতত্ত্ব (১৯৪২), বাংলার কাব্য (১৯৪৫), মার্কসবাদ (১৯৫১), নয়া ভারতের শিক্ষা (১৯৫৫), শিক্ষক ও শিক্ষার্থী (১৯৫৭), মিরজা আবু তালিব খান (১৯৬১), দিল্লী-ওয়াশিংটন-মস্কো (১৯৬৪), Kant on Philosophy in General (১৯৩৫), Poetry, Monads and Society (১৯৪১), Muslim Politics in Bengal (১৯৪৩), Rabindranath Tagore (১৯৪৫), The Indian Heritage (১৯৪৬, ১৯৬০), Science, Democracy and Islam (১৯৫৫), Education in India (১৯৫৬), Studies in Bengali Poetry (১৯৬৪), The Bengali Novel (১৯৬৮), Education for Tomorrow (১৯৬৮), Minorities in Democracy (১৯৬৯) ইত্যাদি।তাঁর রচিত গ্রন্থসংখ্যা মোট ৪৫টি।
রাজনীতিতে না এলে সাহিত্য ক্ষেত্রকে হুমায়ূন কবীর ফুলে-ফলে ভরিয়ে দিতে পারতেন! চিন্তা মূলক বিদগ্ধ রচনা যা সামান্য দিয়েছেন তাই অসামান্য হয়ে উঠেছে!বুদ্ধিজাত ও মননধর্মী রচনাতেই তিনি তৃপ্তি পেয়েছিলেন! যা আমাদের বুদ্ধিকে তীক্ষ্ণতর ও দৃষ্টিকে উজ্জ্বল করেছে! আর তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করেছে একজন শ্রেষ্ঠ মনীষার আসনে!


আবু রাইহান
কবি, সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক ও ছোটগল্পকার আবু রাইহান-এর জন্ম সংগ্রাম ও আন্দোলনের পীঠস্থান ইতিহাস প্রসিদ্ধ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামের সরবেড়িয়া গ্রামে ১৯৭০ সালের ৩১ জানুয়ারি !
কর্মসূত্রে বন্দর শিল্পনগরী হলদিয়ার বাসিন্দা !
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যায় এম এসসি এবং মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি থেকে বায়োটেকনোলজিতে এম.টেক পাস করেছেন! পেশায় হলদিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ডিগ্রী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিনিয়র আধিকারিক !
কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রভাতী সংবাদপত্র ‘দিনদর্পণ’ পত্রিকার অ্যাসোসিয়েট এডিটর(সাহিত্য সম্পাদক)! ‘হলদিয়া সাহিত্য সংসদ’ এর সম্পাদক! ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘প্রমিতাক্ষর’ এর যুগ্ম সম্পাদক ! তিন দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিবিড় ভাবে সাহিত্যচর্চা করে চলেছে !
‘নিষিক্ত ভালবাসা’ ও ‘সংকেতময় বিস্ময়’ নামে দুটি কাব্যগ্রন্থ এবং ‘বাংলা কাব্য-সাহিত্যে ইসলামিক সংস্কৃতি ও সমাজ’ নামে একটি প্রবন্ধের বই প্রকাশিত হয়েছে ! প্রকাশের অপেক্ষায় ‘মুসলিম নবজাগরণের আলোকিত ব্যক্তিত্ব’ এবং ‘মুসলিম মনীষা ও ঐতিহ্যের পরম্পরা’ নামে দুটি প্রবন্ধের বই! এছাড়া প্রকাশের অপেক্ষায় ‘সাগরকন্যা’ নামে একটি গল্পগ্রন্থ এবং ‘অভিষিক্ত এবাদতনামা’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থ
২০০৭ সালে সাংবাদিকতার জন্য পেয়েছেন হলদিয়া পুরসভার সেরা সাংবাদিকতার পুরস্কার! ২০১৭ সালে কবিতা চর্চার জন্য পেয়েছেন ‘টার্মিনাস’ সাহিত্য পত্রিকার ‘সেরা কবির পুরস্কার’ ! ২০১৫ সালে পেয়েছেন ‘নিষিক্ত ভালোবাসা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ‘কুসুমের ফেরা’ সাহিত্য পত্রিকার ‘কবি জসীমউদ্দীন স্মৃতি পুরস্কার’! সাহিত্য সমালোচক হিসেবে ২০১৩ সালে পেয়েছেন ‘সাহিত্যের আঙিনায়’ সাহিত্য পত্রিকার ‘কবি অমিতাভ দাস স্মৃতি সংবর্ধনা’! ‘বঙ্গ প্রদেশ’ পত্রিকার পক্ষ থেকে সাহিত্য চর্চার জন্য ২০১৮ সালে পেয়েছেন ‘বঙ্গরত্ন সাহিত্য পুরস্কার’! ২০১৯ সালে পেয়েছেন বাংলাদেশের ঢাকার গাজীপুরে ষাটের দশকের বিশিষ্ট কবি সাযযাদ কাদির প্রতিষ্ঠিত বাংলা কবিতা দিবসের অনুষ্ঠানে ‘কবি সাযযাদ কাদির স্মৃতি সম্মাননা ২০১৯’, ঢাকার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে ‘মহাপৃথিবী সাহিত্য সম্মাননা ২০১৯’ এবং পাবনায় মহীয়সী সাহিত্য পাঠচক্রের সাহিত্য সম্মেলন ২০১৯-এ ‘বিশেষ সাহিত্য সম্মাননা’! কলকাতায় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘নতুন গতি’ পত্রিকার নজরুল জয়ন্তী ২০১৯ অনুষ্ঠানে পেয়েছেন কবি ও প্রাবন্ধিক হিসেবে বিশেষ সংবর্ধনা! ২০২০ সালে পেয়েছেন কলকাতার আইসিসিআর হলে বাংলাদেশের ‘রবীন্দ্র-নজরুল ফাউন্ডেশন’ এর দেওয়া ‘সংহতি সম্মাননা’ এবং মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশের বগুড়ায় অনুষ্ঠিত ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল ত্রিদেশীয় সাহিত্য সম্মেলন ২০২০ তে পেয়েছেন ‘ত্রিদেশীয় সাহিত্য সম্মাননা’! টাঙ্গাইলে মুজিব শতবর্ষ এ ‘বাংলা কবিতা উৎসব ২০২০’ তে পেয়েছেন ‘বিশেষ কবি সম্মাননা’!

লেখকের আরও লেখা
https://cialisvet.com/ tadalafil cialis
where to buy generic cialis online safely tadalafil dosage
how can i get cialis without a prescription
buy viagra online 25mg
tadalafil generic where to buy https://cialisedot.com/
over the counter ampicillin pills
levaquin pack
suhagra 100
generic super avana
how to get tamoxifen online
prozac 30
generic tadalafil from uk tadalafil price walmart
viagra
price generic viagra
best place buy viagra online
tadalafil tablets 20 mg uk
tadalafil drug cialis cost
generic sildenafil 100mg price
generic tadalafil from uk https://cialismat.com/
where to buy cialis without prescription cheap cialis pills for sale
cheapest tadalafil india
sildenafil in usa
where can i purchase viagra over the counter
where to buy generic cialis online safely buy cialis pills
trazodone 25 mg
buy prazosin online
keflex price without insurance
cheap generic lexapro online
ivermectin over the counter
buspar tablets
triamterene/hctz caps
tadalafil generic https://cialisusdc.com/
flagyl buy online
buy atarax over the counter
tadalafil blood pressure where to order tadalafil tablets
accutane generic price
albuterol 0.021
where can you buy amoxicillin over the counter
gout colchicine
cialis 2017
female viagra india
tadalafil cost walmart https://cialisicp.com/
economy pharmacy
where to buy viagra with paypal
cialis generic no prescription
disulfiram 500
buy elimite cream
5 mg buspar
buy tamoxifen
doxycycline drug
cialis 1800mg
lowest price cialis lowest price cialis
buy cialis pills generic cialis tadalafil
buy cialis online in usa
cheapest price for sildenafil 20 mg
tadalafil online usa
order female viagra online
cialis price from canada
generic sildenafil without a prescription
canadian cialis order
can i buy viagra without a prescription
tadalafil brands tadalafil without a doctor prescription
buy generic cialis online with mastercard cialis at canadian pharmacy
vermox pills
metformin for sale in usa
can you buy vermox over the counter in usa
quineprox kratom chloroquine
order cheap viagra online
tadalafil tablet 5mg
sildenafil citrate
ivermectin 1%cream
https://cialisicp.com/ buy tadalis
buy cheap neurontin online
allopurinol 100 mg tablet without prescription
ivermectin price canada
ivermectin lotion price
tadalafil dosage tadalafil price walmart
buy cialis from canadian pharmacy
best price generic cialis 20 mg
generic cialis tadalafil tadalafil cost in canada
prozac medicine in india
ivermectin 3mg tablets price
cialis india order
generic cialis in united states
https://cialisvet.com/ side effects of tadalafil
discount viagra india
dapoxetine 30 mg tablet
ivermectin otc
generic cialis online paypal
vermox tablets price
Very interesting topic, regards for posting.
provigil pills buy provigil for sale provigil 200mg cheap
order modafinil online cheap brand modafinil 100mg
provigil oral
order provigil 100mg for sale provigil cheap
how Long Does It Take For Cialis To Kick In?
levitra Or Cialis Which Is Better?
buy modafinil 100mg generic modafinil pills
Cialis How Long Towork?
Alternatively, the patient who lacks secondary sex characteristics eg, pubic hair or who has other feminizing features or features of hypogonadism may have undiagnosed Klinefelter syndrome or a variant thereof cialis online ordering However, a significant minority of patients relapse despite adjuvant anti estrogen therapy, with most patients with metastatic disease ultimately developing resistance to anti estrogen therapies