সাহিত্যিক-ছড়াকার আবুল হোসেন আজাদ এর সাক্ষাৎকার আবুল হোসেন আজাদ বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক, ছড়াকার, শিশু কিশোর সাহিত্য রচনার সাথে আছেন প্রায় পঞ্চাশ বছর । ছড়া, কবিতা, কিশোরগল্প ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে লিখেছেন প্রচুর, প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য । কুড়িয়েছেন প্রশংসা । দেশজোড়া তাঁর পরিচিতি । লেখক পরিচিতি ছাপিয়ে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা । ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ৯নং সেক্টরে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় অংশ গ্রহন করেছিলেন । তাঁকে সম্মান জানাতে ম্যানগ্রোভ সাহিত্য পরিবারের পক্ষে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈচনা গ্রামে তাঁর নিজস্ব বাসভবন ‘পান্থনীড়’-এ গিয়েছিলেন খ্যাতিমান ছড়াকার আহমেদ সাব্বির দুই গুণির কথোপকথন আজাদ ভাই শুভেচ্ছা । কেমন আছেন আবুল হোসেন আজাদ আপনি বিশিষ্টতায় অনন্য একজন শিশু সাহিত্যিক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে আপনি দেশের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। সেই প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে চাই। আবুল হোসেন আজাদ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তো আপনার অসংখ্য স্মৃতি থাকার কথা, সেটাই স্বাভাবিক। উল্লেখযোগ্য কোনো স্মৃতি কি মনে পড়ে ? আবুল হোসেন আজাদ যশোর পাবনা ও খুলনা (তৎকালীন বৃহত্তর জেলা) দেড়শো জন মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং নিতে বিমানে আরোহন করলাম। তখন আমার মনের খুশি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। বেলা একটায় রওনা হয়ে সাড়ে তিন ঘন্টা যাত্রা শেষে পূর্ব পাঞ্জাবের শাহরানপুর বিমান বন্দরে নামলাম। ওখান থেকে রাত্রি যাপন শেষে পরের দিন সকাল দশটায় ট্রেনিং সেন্টারে টেন্ডুয়ায় পৌঁছলাম। আর একটি ঘটনা একমাস ট্রেনিং শেষে আমরা সেই দেড়শোজন আবার ফিরে এলাম ভারতের পশ্চিম বাংলার ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্টে। কয়েকদিন ক্যান্টনমেন্টে থাকার পর আমাদের এবার বাংলাদেশে ঢোকার পালা। আমরা রাতের খাওয়া বিকেলে সেরে বেলা চারটার সময় রওনা দিলাম মিলিটারি ট্রাকে। আমার এবার দুর্ভাগ্য কি সৌভাগ্য জানিনা। আমাদের খুলনার দেড়শোজন যোদ্ধার জন্য একশো উনপঞ্চাশটি এস এল আর ও গুলি। একটি এস এল আর কম। বাকী এক জনের জন্য এন্টি ট্যাঙ্ক মাইন। আর সেটিই আমার কপালে পড়ল। ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে আমাদের বিদায় জানালেন তোফায়েল আহমেদ। আর সাথে এলেন নূর আলম জিকু ভাই। রাত আটটা নাগাদ আমরা সীমান্তবর্তী টাকিতে পৌঁছলাম। এবার আমাদের ইছামতি নদী নৌকা করে পাড়ি দিয়ে বংলাদেশের দেবহাটায় উঠতে হবে। জিকু ভাই বিদায়ের সময় আমাদের কপালে চুমু খেয়ে দোয়া করলেন আমরা যেন নিরাপদে পৌঁছে আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারি। আমরা ঘন্টাখানেক বাদে সর্ন্তপনে দেবহাটায় পৌঁছালাম। এবার নৌকা থেকে নেমে যার সেই হাতিয়ার পত্র নিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। আমার পিঠে সেই মাইন। বেশ ভারি। আমাদের আগে থেকে গাইড হিসেবে মুস্তাফিজ ভাই সহ অনেকে ছিলেন। অন্ধকার রাত। সোজা রাস্তা ছেড়ে আমরা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে হাঁটছি। জোনাকি পোকার মিটমিট আলো ছাড়া আর আলোর দেখা নেই। যেতে যেতে আমি কয়েকবার হোঁচট খেয়ে পড়লাম। ব্যথায় কঁকিয়ে উঠলাম। মুস্তাফিজ ভাইয়ের কাছে টর্চ ছিলো। উনি আমাকে হাত ধরে তুললেন। আমার চোখে তখন পানি। এ পানি আনন্দ ও বেদনার। আমি ভারি মাইন বইতে পারছিলাম না। মোস্তাফিজ ভাই আমার নাম ধাম সব পরিচয় নিলেন। তারপর একজন কে আমার মাইন তার পিঠে তুলে দিলেন। আমাদের নিতে এসেছিল তাদের মধ্যে একজনকে। একটু কষ্ট লাঘব হলো। কিন্তু হাঁটার ক্লান্তিতে বার বার পড়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছি। শিয়ালের ডাক শুনতে পাচ্ছি। তাছাড়া অন্য কোন সাড়া শব্দ নেই। তখন দেবহাটার পারুলিয়া ও কুলিয়ায় পাকিস্তানী সেনা ক্যাম্প। সারা রাত হাঁটতে হাঁটতে আমাদের মুজিব বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে বদর তলায় পৌঁছলাম। তখন রাঙা সূর্য ধীরলয়ে পূব আকাশে উঁকি দিচ্ছে। আমরা পৌঁছোনোর সাথে সাথে একটি পরিত্যক্ত গোয়াল ঘরে নাড়া বিছিয়ে শুয়ে পড়লাম সবাই। তখন সারা রাজ্যের ঘুম নেমে এলো চোখে সাথে সাথে। আমার জীবনের এ স্মৃতি কখনও ভোলবার নয়। তবে যুদ্ধ ক্ষেত্রের অনেক স্মৃতিও আছে। যেগুলো অন্য সময়, সুযোগ পেলে বলতে পারবো। সে সময় কি লেখালেখি করতেন ? আবুল হোসেন আজাদ যুদ্ধ থেকে যখন ফিরলেন পরিবার এবং নিজস্ব পরিমণ্ডলে, সেই সময়ের অনুভুতি সম্পর্কে জানতে চাই আবুল হোসেন আজাদ যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর চেতনা আপনাকে কেমন ভাবে প্রভাবিত করেছিল ? আবুল হোসেন আজাদ যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশের মধ্যে কেমন পার্থক্য চোখে পড়ে ? আবুল হোসেন আজাদ আজ আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ঐতিহ্য আমাদের সংস্কৃতিকে নতুন এক অবস্থান নতুন মাত্রা যোগ করেছে সন্দেহাতীতভাবে। মুক্তিযুদ্ধ কিভাবে আমাদের সাহিত্য সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে ? বিশেষ করে শিশু সাহিত্য ? আবুল হোসেন আজাদ আগামী প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় বেড়ে উঠতে হলে কী কী করণীয় বলে আপনি মনে করেন ? আবুল হোসেন আজাদ কী করলে শিশু-কিশোরদের অন্তরে দেশপ্রেম জাগানো যাবে, আপনার অভিমত– আবুল হোসেন আজাদ নিজের এলাকার শিশু কিশোররা আপনার জীবনের গল্প শুনতে চায় ? আবুল হোসেন আজাদ আপনি তো একজন ছড়াকার। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছড়া, গল্প, নিবন্ধ কোনটি বেশি লিখে স্বাচ্ছন্দবোধ করেছেন ? আবুল হোসেন আজাদ নিজেকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাবতে কেমন গৌরব অনুভব করেন। আবুল হোসেন আজাদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে যে প্রজন্ম বেড়ে উঠছে তাদের সম্পর্কে কিছু বলুন। আবুল হোসেন আজাদ আমাদের শিশু সাহিত্য সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন। আবুল হোসেন আজাদ ম্যানগ্রোভ সাহিত্য পোর্টালটি সম্পর্কে কিছু বলেন ? আবুল হোসেন আজাদ আজাদ ভাই আপনার সঙ্গে চমৎকার সময় কাটলো। ইতিমধ্যে জানা হয়ে গেল আপনার জীবনের অনেক অজানা অধ্যায়। যা সব শ্রেনির পাঠক বিশেষত এদেশের শিশুকিশোর পাঠকরা অবশ্যই উজ্জিবীত হবে। অসংখ্যা ধন্যবাদ আপনাকে ‘ম্যানগ্রোভ সাহিত্য’ পরিবারের পক্ষে। আবার কখনো সময় করে আরও অনেক কথা জেনে নেবো। সুন্দর থাকুন, সুস্থ্য থাকুন– আবুল হোসেন আজাদ
আল্লাহর রহমতে তোমাদের দোয়ায় ভালো আছি।
১৯৬৯ সালে আমি ছিলাম নবম শ্রেণির ছাত্র। তখন বাংলাদেশে সামরিক শাসক পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আয়ুব খানের বিরুদ্ধে গণ অভ্যুত্থান শুরু হয়। অভ্যুত্থানের সমর্থনে আমাদের ক্লাসের ছাত্ররা ক্লাস বর্জন করি। সেই থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর আমি একটি আত্মার টান অনুভব করি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আমার কিশোর মনকে উদ্বেলিত করে। তখন আমার বয়স ছিল সাড়ে পনের বছর। ছিলাম এস.এস.সি পরীক্ষার্থী। ২৫ মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আক্রমনের পর যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় তখন আমরা ভারতে চলে যাই পরিবারসহ। শুধু আমার দাদী ও বড় ভাই বাড়িতে ছিলেন। ওই সময় আমার এক খালার বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাটের পানিতর গ্রামে থাকতাম। সেই সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান শুনতাম ওখানকার এক দোকানে বসে। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের সংবাদ শুনে আমারও ইচ্ছে হতো এমন দুর্ধর্ষ লড়াইয়ে অংশ নিতে। সেই মনোবাসনা একদিন পুর্ন হলো বসিরহাটের ইটিন্ডায় তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এ, এফ, এন্তাজ আলী (তৎকালীন এম,এন,এ) ভাইয়ের মাধ্যেমে। উনি আমাকেও আমাদের এলাকার আরো কয়েকজন লতিফ, আজিজ, আঃ রহমান কে রিক্রুট করে উত্তর প্রদেশের টেন্ডুয়ার ট্রেনিংয়ে পাঠান।
স্মৃতি তো অনেক আছে। তবে দুটো স্মৃতির কথা বলি। যখন আমি ট্রেনিংয়ে যাওয়ার জন্য অন্যান্যদের সাথে দমদম বিমান বন্দরে লাইনে দাড়িয়ে আছি। সেই সময় ঘটল এক অপ্রীতিকর ঘটনা। আমাদের খুলনা জেলা থেকে যাবে ৫০ জন। কিন্তু গণনায় দেখা গেল লাইনে আছে ৫১ জন। ওই দলে সর্ব কনিষ্ঠ ছিলাম আমি। যেমন বয়সে তেমন উঁচুতেও। কর্তৃপক্ষ আমাকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। আমি তৎক্ষনাৎ কেঁদে ফেললাম। মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারবো না, ট্রেনিং নিতে পারবো না এটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না। আমার বন্ধু আঃ রহমান প্রতিবাদ করে উঠলো। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জেলা কমা- জাকির ভাইও আমার পক্ষে কথা বললো। আমি বাদ পড়া থেকে রক্ষা পেলাম।
হ্যাঁ, করতাম। আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়তাম তখন আমার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক ‘পাক জমহুরিয়াত’ পত্রিকার কিশোর মজলিশ পাতায়। সেটা ছিল ১৯৬৭ সাল। পাতাটির বিভাগীয় সম্পাদক ছিলেন আব্দুল হান্নান কোরাইশী। সেই সময় ঢাকা থেকে প্রকাশিত হতো ‘মাসিক মুকুল’, ‘খেলাঘর’, ‘টাপুর টুপুর’, ‘কচি ও কাঁচা’, ‘অগ্রদূত’ প্রভৃতি। এসব পত্রিকায় আমার লেখা ছাপা হয়েছে। ১৯৭১ সালে আমার মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার আগে একটি ছড়া কলকাতার ‘দৈনিক যুগান্তরে’র ছোটদের পাততাড়ি পাতায় ছাপা হয়েছে।
আমি মুক্তিযুদ্ধে গেছি ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। পুরো অক্টোবর মাস (১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর) পর্যন্ত ভারতের উত্তর প্রদেশের দেরাদুন জেলার চাকরাতা থানার টেন্ডুয়ায় প্রশিক্ষনের পর যখন বাংলাদেশে ঢুকলাম তখন খুব করে মা’র কথা মনে পড়তো। কিন্তু উপায় নেই। পরিবারের মায়া আমাকে ধরে আটকে রাখতে পারেনি। দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তারও কিছুদিন পর আমরা মুক্তিযোদ্ধার একটি দল আমাদের বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানী বাহিনীর কাছ থেকে দখল করা ক্যাম্পে থাকা শুরু করলাম। আর তখনই আমার পরিবারের মা, বাবা, ভাই, বোনের সঙ্গে দেখা হলো। সেদিন চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। যেমন মা কাঁদছিলেন তেমন আমি বাবা সবাই। আমাকে যে মা বাবা ফিরে পাবে সে আশা তারা করেন নি। আমিও না। তাই সেদিন আনন্দে আমরা সবাই চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি।
হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি এদেশে না জন্মাতেন হয়তো আমরা একটি স্বাধীন দেশ , একটি স্বাধীন পতাকা পেতাম না। বাঙালি জাতি হিসেবে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারতাম না। তাঁর চেতনাই ছিল আমাদের যুদ্ধ ক্ষেত্রের মূল প্রেরনা। তাঁর ৭ মার্চের ভাষনের ঐতিহাসিক বানী ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এই শ্লোগান কে আমাদের যুদ্ধের মূলমন্ত্র হিসেবে মনে প্রাণে বিশ^াস করে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলাম।
যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশ ছিল একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ। রাস্তাঘাট ব্রীজ সবই ছিল ভাঙাচোরা। গ্রামে গঞ্জে বাড়ী ঘরও ছিল অনেক পোড়ানো। চারিদিকে ধংসের ছবি। তারই মধ্যে নতুন উদ্যমে নতুন করে দেশকে গড়ার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে সবাই হাতে হাত লাগালো। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানী কারাগার থেকে ফিরে এলেন ১০ জানুয়ারী ১৯৭২ সাল। দেশের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জীবন দিলেন কতিপয় দুর্বৃত্তের হাতে। তারপর একুশ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে দেশের আমুল পরিবর্তন হতে শুরু হয়। বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নশীল দেশ। উন্নয়নের ছোঁয়া গ্রামে গঞ্জে শহরে নগরে সর্বত্র।
আমরা এখন গর্বিত একটি স্বাধীন জাতি, স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সাহিত্য সংস্কৃতিতে আমাদের একটি নিজস্ব ধারা গড়ে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস, নাটক, গল্প, সিনেমা প্রভৃতিতে সকল বাধা টপকে আমাদের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে এবং আজ অব্দি দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। শিশু সাহিত্যও বেশ সমৃদ্ধ হয়েছে বিশেষ করে শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাই, এখলাস উদ্দীন আহমদ, রফিকুল হক দাদু ভাই, সুকুমার বড়–য়া, হাবিবুর রহমান, খালেক বিন জয়েনউদ্দীন, লুৎফর রহমান রিটন, আমীরুল ইসলাম, ফারুক নওয়াজ, সৈয়দ আল ফারুক, সুজন বড়–য়া, আখতার হুসেন, আ.শ.ম বাবর আলী, মাহমুদউল্লাহ, আলম তালুকদার, ফারুক হোসেন, রহিম শাহ, হুমায়ন সাদেক চৌধুরী, আলী ইমাম, আবু হাসান শাহরিয়ার, কাইজার চৌধুরী, হালিমা খাতুন, রোকেয়া খাতুন রুবী, জোর্তিময় মল্লিক, রফিকুর রশীদ, জসীম মেহবুব, দুখু বাঙাল, রোমেন রায়হান, আহমেদ সাব্বির, মামুন সারওয়ার, কামাল হোসাইন, রাশেদ রউফ, উৎপল কান্তি বড়–য়া প্রমুখ।
আগামী প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় বেড়ে উঠতে হলে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। বেশি বেশি করে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। আর বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে বেশি বেশি করে তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’, তাঁর উপর লেখা বই পুস্তক পড়তে হবে। তাতে পাওয়া যাবে তাঁর সংগ্রামী জীবন। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক, বাংলাদেশের স্থাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৈচিত্রময় জীবন কাহিনী। তাঁর অকুতোভয় বলিষ্ট নেতৃত্ব আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি, বাংলাদেশ।
শিশু কিশোরদের অন্তরে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হলে আমি মনে করি আমাদের দেশের গল্প তাদের শোনাতে হবে। দেশকে ভালোবাসতে শেখাতে হবে। বাংলাদেশ সৃষ্টির আনন্দ-বেদনার ইতিহাস জানতে হবে। সেই ১৯৫২ সালের রাষ্ট্রভাষা-বাংলা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিভিষীকাময় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর গনহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ সহ ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে কিভাবে আমরা স্বাধীনতা পেলাম তার কথা।
আমি সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার অধিবাসী। তবে আমার যুদ্ধক্ষেত্র ছিল দেবহাটা থানার ভিতরে (সাতক্ষীরা জেলা) ওখানে বড় যুদ্ধ হয়েছিল পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে ভোমরা, টাউনশ্রীপুর, ভাতশালা, কোমরপুর, কুলিয়া, দেবহাটা প্রভৃতি এলাকায়। আমরা সম্মুখ যুদ্ধ ছাড়াও গেরিলা আক্রমণ চালাতাম বেশি। গেরিলা আক্রমনের ভয়ে পাক সেনারা সাধারণত বাইরে বেরুত না। সবসময় ব্যাঙ্কারে লুকিয়ে থাকত। এই ব্যাঙ্কার লক্ষ্য করে আমরা গ্রেনেড মেশিনগান হামলা চালাতাম। এই সব যুদ্ধের গল্প শিশু কিশোররা বেশি পছন্দ করে। কারন এরা এখনও কোন যুদ্ধ দেখেনি।
আমি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সবই লিখেছি। ছড়া, কবিতা, গল্প, নিবন্ধ। তবে ছড়া লিখতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি। ‘ভোমরা একটি মুক্তিযুদ্ধের জনপদ’ এই নামে ভোমরার যুদ্ধ সম্পর্কে একটি নিবন্ধ লিখেছি। যেটি ঢাকার একটি মাসিক পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অনেক গল্পও আমি লিখেছি। মুক্তি যুদ্ধের গল্প নিয়ে ‘গল্পগুলো মুক্তিযুদ্ধের’ এই নামে একটি শিশু কিশোরদের জন্য একটি গল্পের বই বেরিয়েছে।
আমি সত্যি একজন ভাগ্যবান যে আমি আমার দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে পারছি। একটি সময় ছিল, একটি সময় গেছে যখন এই পরিচয়টা বুক ফুলিয়ে দিতে পারতাম না। আমি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি ওটা যেমন আমার কাছে গৌরবের, তেমন আমার সন্তানদের কাছেও।
বর্তমান প্রজন্ম যারা বিশেষ করে শিশু কিশোর তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে দেশপ্রেমে বেড়ে উঠবে গভীরভাবে দেশকে ভালোবেসে। দেশের উন্নয়নের জন্য যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাবে। সকল সীমাবদ্ধতা ও সংকীর্ণতার গন্ডি ডিঙিয়ে তারা এগিয়ে যাবে মুক্ত মনের অধিকারী হয়ে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমাদের শিশু সাহিত্য অনেকদূর এগিয়েছে। এরমতে প্রধানত কৃতিত্বের দাবীদার দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্র-পত্রিকার শিশুদের জন্য নির্ধারিত পাতা। এছাড়া শিশু কিশোর মাসিক, সাপ্তাহিক গুলো। তবে দুঃখের বিষয় কিছু জাতীয় দৈনিক তাদের শিশুদের জন্য বরাদ্দ পাতাগুলো ছেটে ফেলেছে। এটা শিশু সাহিত্যে জন্য বড় আঘাত বলে আমি মনে করি। তবে বর্তমানে বেশ কিছু শিশু কিশোর মাসিক তাদের প্রকাশনা অব্যাহত রেখে শিশু সাহিত্যের অগ্রগতিকে সমৃদ্ধ করেছে। যেমন শিশু, ধান শালিকের দেশ, সবুজ পাতা, টইটুম্বুর, নবারুন, কিশোর বাংলা, ছোটদের সময়, কথন ফুলকুড়ি, কিশোরকণ্ঠ, কিশোর পাতা প্রভৃতি।
ম্যানগ্রোভ সাহিত্য পোর্টাল এ-সময়ের একটি চমৎকার অনলাইনভিত্তিক সাহিত্যের পোর্টাল। সমৃদ্ধ লেখা, পরিপাটি আঙ্গিক, সম্পাদনায় অনবদ্য। ‘ম্যানগ্রোভ সাহিত্য’ পোর্টালটি আরও সমৃদ্ধ হোক। শিশু-কিশোর সাহিত্যেকে আলাদা মর্যাদা দিয়ে আলাদা বিভাগ রেখেছেন, আপনাদের ধন্যবাদ। শিশুদের মেধা বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করুক এটাই আশা করি।
ধন্যবাদ তোমাকে এবং ম্যানগ্রোভ সাহিত্য-কে ।

Дивитися популярні фільми 2021-2021 року Девица
Фільми українською в хорошій
якості – онлайн без реклами Link
Фільми українською в хорошій якості – онлайн без реклами Link
Найкращі українські фільми 2021 року Link
Найкращі українські фільми 2021
року Link
Найкращі фільми 2021 Link
Найкращі українські фільми 2021
року Вечер с Владимиром Соловьевым
Найкращі фільми 2021 z.globus-kino.ru
Дивитися фільми українською онлайн filmiwap.store
Фільми та серiали 2020 українською мовою в HD якості Захар Беркут
Фільми та серiали 2020 українською
мовою в HD якості link
Have you ever thought about including a little bit more than just your articles?
I mean, what you say is valuable and all. However just imagine
if you added some great photos or videos to give your posts
more, “pop”! Your content is excellent but with pics and
videos, this blog could undeniably be one of the best in its field.
Excellent blog!
Фільми та серiали 2020 українською мовою в
HD якості link
yutube
Я – легенда 2
RRR смотреть онлайн
Нові сучасні фільми дивитися українською мовою онлайн в хорошій якості HD Link
Дивитися фільми українською мовою онлайн в HD якості Link
Дивитися фільми онлайн в HD якості
українською мовою Link
Не пропустіть кращі новинки кіно українською 2021 року Парад 9 мая 2022 год
Нові сучасні фільми дивитися українською мовою онлайн в хорошій якості HD
Link
Фільми та серiали 2020 українською мовою в
HD якості Link
Фільми українською в хорошій якості –
онлайн без реклами Link
Всі фільми новинки 2020 року онлайн українською в хорошій
якості Link
Не пропустіть кращі новинки кіно українською 2021 року Link
Найкращі фільми 2021 2022
Link
Психолог онлайн. Консультация Психолога онлайн
– 3549 врачей, 3909 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация
Когда необходим прием психолога? – 6058 врачей, 6642 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Психолога онлайн – 3529 врачей, 4448 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Психолога – 4532 врачей,
3909 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Прием психолога? – 4137 врачей, 7383 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Прием психолога? – 5184 врачей, 4603 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Когда необходим прием психолога? – 3118 врачей, 6543 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Психолога онлайн – 7334
врачей, 7580 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Психолога онлайн – 3959 врачей, 3566 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Когда необходим прием психолога? –
4423 врачей, 4158 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Когда необходим прием психолога? – 3898 врачей,
4759 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Психолога онлайн – 3413 врачей, 5372 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Когда необходим прием психолога? – 4945 врачей, 5074
отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Когда необходим прием психолога? – 7029
врачей, 4656 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Когда необходим прием психолога?
– 6679 врачей, 5851 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Когда необходим прием психолога? – 7409 врачей, 5650 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Прием психолога? – 3606 врачей, 3394 отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Когда необходим прием психолога? – 6361 врачей, 7834
отзывов.
Психолог онлайн. Консультация Когда необходим прием психолога? – 6655 врачей, 6802 отзывов.
Neonatal Nurs cheapest cialis Monitor Closely 1 tranylcypromine will increase the level or effect of atogepant by affecting hepatic intestinal enzyme CYP3A4 metabolism