রেখ হৃদয়ে বাংলাদেশ
মৃন্ময় মণ্ডল
এ বড় বিচিত্র টান
এ এক কষ্টের ক্রন্দন
এ যেন হ্যামলেট বিচ্ছেদ
এ যেন ওফেলিয়া বিসর্জন।
অলিম্পিয়া লুসির টলমল চোখ
ভোরের আকাশে ঝুলন্ত মেঘ
শেষ স্নাপটি হতে পারতো
পৃথিবীর শ্রেষ্ট ফটোগ্রাফ।
ভেতরে জেগে উঠেছে বিষন্ন ব্যর্থতা
শেষ পর্যন্ত ডুবে গেল বেদনায়
আকাশ থেকে নেমে এল
এক খন্ড ভিজে মেঘ ধীরে ধীরে।
চণ্ডিগড়ের দিদি বললেন:
” লুসি বসেছিল গতকাল অনেকক্ষণ
বলতে পারেন অপেক্ষায় আপনার
ওর ছেলেটিও ছিল শান্ত নিরুদ্বেগ।”
কেউ কেউ এগুলান বোঝে বিলক্ষণ
আমি দিদির চোখে চোখ রেখে
তাকিয়ে ছিলাম নিষ্পলক কিছুক্ষণ
আমার সবকিছু ভিজে যাচ্ছিল।
পুড়ে যাচ্ছিল আমার সবকিছু
উড়ে যাচ্ছিল ছাই-ভষ্ম উর্ধমুখ
ভরা মেঘের রোদ্দুরে শুকিয়ে যাচ্ছিল
গলা আর তার নিচে সতর্ক বুক।
এ সবই ছিল ভেতরের দহন
এ সবই ছিল অন্তর ক্ষরণ
বাহিরে ছিল নিস্তরঙ্গ দীঘি সরোবর
বাহিরে ছিল শান্ত সকালের ঘাসমাঠ।
সবকিছু ধরে না বেভুলো মন
মন আমার ধূর্ত শালিক। কেবলই
উড়ে উড়ে বসে হেমন্ত ধানে
সোনারোদ ধুয়ে দেয় হলুদ চোখ।
ভেঙে যায় স্মৃতি প্রথম দিনের
কাঁচের ভাঙন। হয়ত ভেসে ওঠে
একদিন হাস্যোজ্জ্বল প্রজাপতি
তেমনি দিনে এক বলেছিলে তুমি:
‘তোমার দেশ কোথায়?’
কোথায় তোমার দেশ?
তোমার ছেলেটি অপূর্ব বিহ্বলতায়
আমাকে টেনে নিয়েছিল দু’চোখে।
তোমাকে বল্লাম আমি
আমার প্রিয় মাতৃভূমির কথা
আমি বল্লাম স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা
আমি বল্লাম ত্রিশলক্ষ সহিদের কথা
আমি বল্লাম অসংখ্য মা-বোনের
নির্মম নিগ্রহের রক্তাক্ত ইতিহাস।
তোমাকে দেখলাম রুদ্ধবাক শঙ্খচিল
ভেজা চোখ অনন্ত বেদনা ভরা।
আমি আমার সমস্ত প্রেম
সমস্ত ভালোবাসায় আমার
দেশকে উচ্চারণ করলাম:
“বাংলদেশ-বাংলাদেশ-বাংলাদেশ।”
তারপর ভাঙা উচ্চারণে কয়েক বার
বল্লে তুমি ” বাংলাদেশ “। আমি যতই
শুদ্ধোচ্চারণে বলি ” বাংলাদেশ “
তুমি ততই ভেঙে যাচ্ছ ভেঙে যাচ্ছ
ভেঙে ফেলছো আমার বাংলাদেশ।
অথচ আমি তোমার দেশকে
সাবলীল মাকে ডাকার মতো
ডেকে উঠলাম: ” মেসিডোনিয়া-মেসিডোনিয়া।”
তোমার প্রতিবন্ধী সন্তান হাস্যোজ্জ্বল
আমার বুকে ঝাপিয়ে পড়লো।
আর তুমি…
তোমার প্রথম প্রেমিকের
চুম্বনের মুগ্ধতায়
উজ্জ্বল হয়ে উঠলে।
আমি আরও কয়েকবার
আমার মাকে ডাকলাম:
” বাংলাদেশ-বাংলাদেশ-বাংলাদেশ।”
তুমি এবারও ভেঙে পড়লে
ভেঙে ফেললে আমার বাংলাদেশ।
আমার তখন জ্বলছে মাথায় আগুন
আমার তখন একাত্তরের রণাঙ্গন
যুদ্ধ করছি–স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ
যুদ্ধ করছি–বাংলাদেশের শুদ্ধোচ্চারণ।
অসামার্থের গ্লানিতে তোমার চোখ অশ্রুসজল
কাঁদছে ডুকরে ডুকরে তোমার প্রতিবন্ধী সন্তান।
এই প্রথম তোমার হাতে হাত রেখে
আমি আরেকবার শুদ্ধোচ্চারণে
” বাংলাদেশ—বাংলাদেশ ” বল্লাম।
তুমি অপূর্ব জ্যোতির্ময়তায় জ্বলে উঠলে
পৃথিবীর সবটুকু শুদ্ধতায়
পৃথিবীর সবটুকু আনন্দময়তায়
তোমার উচ্চারিত ধ্বনিতরঙ্গমালা
” বাংলাদেশ—বাংলাদেশ ” বলে
আকাশ বাতাস মুখরিত করলো
ছড়িয়ে দিল সর্বত্র শব্দোৎসব।
লুসি, আমাকে যাও ভুলে নেই ক্ষতি
রেখ হৃদয়ে বাংলাদেশ অনির্বাণ।

লেখকের আরও লেখা
I have learn several just right stuff here. Definitely price bookmarking for revisiting.
I wonder how much effort you set to make such a great informative
website.
This post will help the internet viewers for setting up new website or even a weblog from start to end.
Wow, wonderful weblog format! How long have you ever been blogging for?
you make running a blog glance easy. The total look of your site
is fantastic, let alone the content material!
Great post. I was checking constantly this blog and I am
impressed! Extremely useful info specially the last part 🙂 I care for such
info a lot. I was looking for this certain info for a long time.
Thank you and best of luck.
Very descriptive post, I enjoyed that bit.
Will there be a part 2?
There’s definately a great deal to know about this topic.
I love all of the points you made.
I was wondering if you ever thought of changing the layout of your blog?
Its very well written; I love what youve got to say.
But maybe you could a little more in the way of content so people
could connect with it better. Youve got an awful lot of text for only having
1 or two pictures. Maybe you could space it out better?