নিয়মিত গদ্য
পর্ব-দুই
স ম তুহিন
মানুষ এখনও পৃথিবীর সম্পদ নয়
পূর্ব প্রকাশিতের পর
আসা যাক আর একটা ঘটনায়−
স্থান অজ্ঞাত থাক তবে কাঁটাতার এবার ভারত আর বাংলাদেশের হৃদয় ভেদ করে এ-ফোঁড় ও-ফোঁড় করা অবস্থায় স্থাপিত এবং অনড়। একে না মানা অপরাধ। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ডাকাত হয়ে সহজেই বেড়া ভেদ করে মানুষেরা আসতে পারে। এই বেড়ার দৈর্ঘ্য চার হাজার কিলোমিটার, মেঘালয় থেকে লালগোলা পর্যন্ত। বাংলাদেশ বেড়া দেয়নি, বেড়া দিয়েছি আমরা। শক্ত, নির্ভুল বেড়া। নিশ্চয় নির্ভুল−এই বর্ণনায় আসা যাক আর এক গ্রামের কথা, গ্রামের নাম ধরা যাক হালদারপাড়া। ঋত্বিক ঘটকের সিনেমা ‘তিতাস একটি নদরি নাম’-এ শেষ দৃশ্য ছিল : জেলেদের মাছের আড়ত, মাছের সিন্দুক হল নদী, সেই নদী সরে গিয়ে চড়া দেখা দিয়েছিল, সেই চড়াতে একটা বালক বাঁশি বাজাচ্ছিল, তার বাঁশির শব্দে ধান গাছ বাড়ছিল−অনিশ্চিত দোটানার জীবন জেলেজীবন থেকে স্থায়ী চাষিজীবনে এল, জেলে হল চাষি। কিন্তু এই হালদারদের বাড়ি ভারতে, গ্রাম ভারতে, কিন্তু মাছের সিন্দুক ভারতে থাকলেও শূন্য লাইন ঠিক রাখার জন্য উভয়ের মাঝে যে কাঁটাতারের বেড়া, একে লঙ্ঘন করা যাবে না।
কাঁটাতারের ও পাশে আধ মাইলের বেশি জায়গা ভারতের। তাদের নিজেদের দেশের, তবুও সেখানে যেতে গেলে তাদের উপার্জনের জায়গায় যেতে গেলে সেপাইদের কাছ থেকে ঠিক সকাল সাতটায় গেট-পাস নিতে হয়, তার পর ঢুকতে পারবে কাঁটাতারের বেড়া ভেদ করে নিজের দেশে। কিন্তু তা অন্য দেশের মতো যেন ভিন্ন দেশ, চোর হয়ে ঢুকতে হয়, তাই প্রত্যহ জোটে প্রত্যেকের পাছায় একটা করে লাথি− শুধু নিজের দেশে ঢুকতে, তাদের নিজস্ব পুকুরে মাছ ধরতে। শুধু এ কথা মনে করিয়ে দিতে তুমি আমাদের কাছে পরাধীন, তোমাদের কখনও স্বাধীনতা নেই, নিজেদের দেশেও নিজেদের উপার্জনের জায়গায় যেতে। এর জন্য তোমাদের চোর হতে হবে, অপরাধী হতে হবে এই ভঙ্গিমায় আসা যাওয়া করতে হবে। লাথি বগলে নিয়ে ঢোকা হল ; এবার মাছ ধরা− মাছ ধরা যখন শেষ হওয়ার মুখে, ও দেশ থেকে এবার সত্যই ভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে আসবে বিডিআর-রা− খিস্তি দিয়ে সব দেখতে চাইবে, সেই মাছের অর্ধেক ভাগ ওদের, এই পুকুরের অর্ধেক ভাগ তাদেরও। শুধু মাছ দিলেই হবে না সেই সঙ্গে খেতে হবে পশ্চাদ্দেশে একটা করে চওড়া ভারী বুটের লাথি − ওদের বয়স গোনা যায় ওদের লাথি খাওয়ার এই সংখ্যা গুনে।
এই হল সীমানা, শূন্যরেখা− না, এইভাবেও কাঁটাতার সীমানাকে সংজ্ঞায় আনতে ভুল হয়ে যাবে। এবার তবে আর একটা ঘটনা। যদিও এই সব ঘটনার কোনও হিসেব থাকে না।
ডাকাত আসে অনায়াসে সেই বেড়ার গর্ত দিয়ে এপারে, লক্ষ্য একমাত্র গরু চুরি করা নয়, যাওয়ার সময় বেশ কিছু বাড়িতে ডাকাতি করা−সব বন্দোবস্ত করে দেয় দু’পারের সেপাইরা। একশোটা গরু পার করে দিতে পারলে প্রত্যেকের পাওনা পঞ্চাশ টাকা, বাকি মোট টাকার অর্ধেক করে পাওনা দু’দেশের রক্ষী সেপাইদের, এতে ওদের আয় মাথা পিছু পঞ্চাশ টাকার বেশি হয়। তাই ডাকাতি হতে দেওয়া বাড়তি রোজগারের ভিতর পড়ে, এটা হতে দেওয়া নিজস্ব আইনের ভিতর পড়ে, অবশ্য দুই দেশেরই একই আইন। তাই ডাকাতি করা আইন যতক্ষণ তুমি না মরো। মরলেই, হত্যা হয়ে গেলে অনেক হ্যাপা তখন জটিল আইন অজগর সাপের মতো গিলে খেতে আসবে, কেননা তখন তুমি অনুপ্রবেশকারী।
গরু পার করার সময় ডাকাতি হয় এটা আইনসিদ্ধ। তাই এ পারের মানুষেরা সজাগ থাকে। ধনী যারা তাদের বন্দুক থাকে, গরুচোরদেরও বন্দুক থাকে। গুলি বিনিময় সাধারণ ঘটনা। সে দিনও তাই ঘটেছিল। কিন্তু এ পারের কর্তার কিছুটা ভুল হয়ে গিয়েছিল। ক্ষোভে ও বীরত্বে একাই ছাদে উঠে গিয়েচিল আর ভুল করে টর্চটা হাতের চাপে জ¦লে উঠেছিল, সেই আলোতে দু’পক্ষের গুলি− দুটো গুলির শব্দ, একটা এ পারের অন্যটা ও পারের। সব শান্ত হয়ে গেলে ছেলেরা ছাদে উঠে দেখে, বাবা মৃত, হাতে নেবানো টর্চটা আর বুক দিয়ে একটু ঘন রক্ত বার হচ্ছে, ব্যক্তি মৃত অথচ রক্ত তাজা।
পরের দিন যখন কর্তার দাহকার্য শেষ করে এসে বাড়ির রোক বিমর্ষ, সেই বাড়ির ছেলেরা হঠাৎ দেখে− তিনজন, এক বুড়ি, এক বউ আর একটা বালক কী যেন খুঁজছে। তাদের ধরা হয়, গাছে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। বউয়ের বয়স সতেরো, বুড়ির বয়স ষাটের বেশি, বালকের বয়স বালক। শোক আছে, পিতা মারা গেছে, শোক বেশিক্ষণ থাকে না। বুড়িকে দু’থাপ্পড়, বউটার গায়ে হাত দিতেই ওরা হাউমাউ করে কেঁদে বলেছিল : মেরো না বাবা, আর ইজ্জত কী নেবে ? এ সবের কোনও দাম আছে ? রোজই দিতে হয়, ওর স্বামী ডাকাত তাই দিতে হয়। শরীরকে হরির লুঠ না করে দিলে স্বামীর ডাকাতি করা সহজ হয় না। ওরা আর বাকি যা বলেছিল তার সংক্ষিপ্ত রূপ এ রকম :
ওর স্বামী কাল ডাকাতি করতে এসে গুলি খেয়েছে, লাশ পেতেও অনেক হ্যাপা। এ দেশের পুলিশ কেস দেবে, তার পর লাশ ফেরত যাবে ও দেশে, তাও আবার ওদের সেপাই ফেরত দিতে চাইবে না। কারণ এটা হত্যা−এই সব রিপোর্ট লিখতে হয়, তাতে দু’দেশের ভিতর যেমন সম্পর্ক খারাপ হয়, বেড়া তখন বন্ধ হয়ে যায়। তাই বাবুরা বলে দিয়েছে, এই বাগানের ভিতর ধানের গোলার নীচে বিচুলি চাপা আছে ওর স্বামীর লাশ। ‘বাবু সেই লাশটা শুধু নিতে দিন, তার পর ও দেশে চলে যাব।’ ওরা খুঁজে দেখে সত্যিই লাশ সেই ডাকাতের। রেখে গেছে বিচুলি দিয়ে। লাশ পাওয়া গেল, কিন্তু ও পারে ভিন্ন রাজ্য থেকে এমনকী সার্কাস থেকে বেচে দেওয়া হাতি বেড়া ডিঙিয়ে ধীর পায়ে এ দেশ থেকে ও দেশে যেতে পারে, কিন্তু লাশ যেতে পারে না। হাতি চালান যাচ্ছে এ দেশ থেকে ও দেশে− দুই দেশের সেপাই তাকে গার্ড অব অনার দিচ্ছে, সার্কাসের মালিক দুই দেশের সেপাইয়ের জন্যে খানাপিনার ব্যবস্থা বেশ মজাদার করে রেখেছে। এই সব স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু লাশ যাবে কীভাবে ? অনেক ভেবেচিন্তে এ বাড়ির ছেলেরাই সেই লাশকে কবর দিয়েছিল এ দেশে। ভিন্ন দেশের পরিবার অথচ তার লাশ কবর এ দেশে, এ ছাড়া কোনও পথ নেই। এই হল সীমান্ত, এই হল কাঁটাতারের বেড়া−না এখনও সংজ্ঞা টানা ঠিক হবে না। ও পার থেকে আসে সোনা, আমরা পাঠাই চাল, গম, চিনি, প্রত্যহ প্রায় একশো টন। তবেই ও পার থেকে আসে ইলেকট্রনিক যন্ত্র, সেলফোন, আমরা পাঠাই সার্কাসের জন্য হাতি আর হত্যা করা বাঘের চামড়াসমেত তার সব হাড়গোড়, এমনকী তার ছোট্ট সুন্দরপানা কানটা পর্যন্ত। ওরা পাঠায় দামি মেশিন, হেরোইন আর মেয়ে− তারা চালান যায় বেশ্যাখানায়। আমরা পাঠাই আপেল, আঙুর, আম, টমেটো আর ভালো সন্দেশ যা বড়োলোকদের খাদ্য। আর ও দেশ থেকে আসে বিক্ষোভ আর সন্ত্রাস বাঁচিয়ে রাকার উপকরণ। হাতি যাওয়ার দৃশ্য মনে করিয়ে দেয়, এক রাজা যেন অন্য রাজাকে উপঢৌকন পাঠাচ্ছেন, সীমান্তে সে দিন কি উল্লাস ! কিন্তু তার থেকে বেশ কিছুটা দূরে পড়ে আছে সতেজ যুবক, বেড়া ডিঙোতে গিয়ে বুলেট-বিদ্ধ হয়েছে, তাই লাশ− ছোটলোকদের বাড়। বন্দোবস্ত না করেই যাতায়াতের চেষ্টা− তাই লাশ।
আর কী মজাদার দৃশ্য− ছোট্ট নৌকা করে ও-পার থেকে আসছে দামি মেশিন আর কিছু হেরোইন, ওদের অবৈধ পাসপোর্ট ছিল না, তাই খবর হয়ে গিয়েছিল, এ পারের সেপাইয়ের সুনির্দিষ্ট গুলি ছুটে যায় নৌকার দিকে, মারা যায় তিনজনই− নৌকাটা একা চুপ করে থাকা বহু আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরপাক খেতে থাকে−এই ঘুরপাক খাওয়া অবস্থান এখানে। ফলে সংজ্ঞা টানা খুব সহজ নয়, আরও অপেক্ষার প্রয়োজন।
রমলা এসে গেছে খুচরো কাজ শেষ করে, ওর কাছ থেকে শুনতে হবে আরও অনেক কথা, তারই জন্য আমার এখানে আসা, জীবন হাতে নিয়ে আসা, যে কোনও মুহূর্তে আমার দিকে ছুটে আসতে পারে সেপাইয়ের গুলি, তখনই আমি হয়ে যাব কোনও সন্ত্রাসবাদীর লাশ, এটাই এখানকার নিয়ম, স্বয়ং বিচারপতিদেরও তা জানা নেই। এই রমলাকে চিনি আমি কুড়ি বছর ধরে, তাই ভয়টা এখন একটু কম। সাহস করে বলেছি আমি কী জানতে চাই, লজ্জা পাচ্ছে ভয় পাচ্ছে, সংকোচ যাচ্ছে না কিছুতেই। অবশেষে বললাম,
কিছুই বলতে হবে না, আমি জানতে চাইব না কিছুই, তুমি শুধু বলে যাবে তোমার জীবনের কথা।
সে বসে আছে, মুখ নিচু করে। বলতে ইচ্ছে হলে তবে বলো− জানো, তোমার এই লজ্জা-লজ্জা ভাব কত নকল, তা আমি জানি। তুমি সেপাইদের বশ করতে পারো, গর্ভে সন্তানের বদলে দশ ভরি সোনা নিয়ে যেতে পারো এক মহাজন থেকে আর এক মহাজনের কাছে। লজ্জা কীসের। আমি জানি, পথে থাকে অনেক সেপাই। তাদের তুষ্ট করতে হয়, দিতে হয় আনন্দ। শরীর দেওয়া এ সব তো সাধারণ ব্যাপার। পাঁচ মাইলের ভিতর কাজ করলে, তার জন্য পাও পঞ্চাশ টাকা, এই রকম পাঁচবার কাজ করতে পারো একই দিনে। অবশ্য তিন সপ্তাহ অন্তর অন্তর এই কাজ জোটে।
তবুও তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই।
আপনি তো সবই জানেন, কিন্তু এ সব তো বাইরের ঘটনা, ঘরের ভিতর অন্য ঘটনা।
সেই ঘরের ঘটনা, তোমার মনের ঘটনা, তা আমি জানি না।
কোনও বিপদ হবে না তো ?
বিপদ হলে আমার হবে, তোমার হবে না, বলো−
(চলবে)
পর্ব-এক-এর লিঙ্ক : পর্ব – এক
tadalafil online with out prescription where to buy cialis without prescription
buy generic cialis online with mastercard https://cialistrxy.com/
cialis without prescription tadalafil blood pressure
buy cialis cialis cost
lowest price cialis tadalafil order online no prescription
tadalafil blood pressure https://extratadalafill.com/
where to buy tadalafil on line tadalafil goodrx
tadalafil cost in canada tadalafil online
https://cialismat.com/ cheap cialis pills for sale
tadalafil brands buy generic cialis online with mastercard
tadalafil side effects generic tadalafil from uk
side effects of tadalafil tadalafil brands
tadalafil generic cheapest tadalafil cost
tadalafil online cialis cost
generic cialis online fast shipping tadalafil
tadalafil cost walmart tadalafil cost in canada
where to order tadalafil tablets cheapest tadalafil cost
I admire your work, appreciate it for all the interesting content.
order modafinil 200mg purchase provigil pills modafinil 100mg cost
modafinil uk modafinil 100mg pill
how Much Cialis Can You Take Daily?
order provigil 200mg online cheap provigil 100mg tablet modafinil 200mg cost
provigil oral modafinil 200mg oral
when Will Cialis Become Generic?
how To Get Another Cialis Savings Card?
how Soon Does Cialis Everyday Work?
buy modafinil generic purchase modafinil generic
Causes of blepharitis differ depending on whether it is an acute or chronic process and in the case of chronic the location of the problem cialis 5mg best price 3 with either anastrozole or letrozole
Open excisional biopsy is the surgical removal of the entire lump buy cialis daily online
how to buy cialis Clinical usefulness of a highly sensitive enzyme immunoassay of TSH