ম্যানগ্রোভ সাহিত্য নির্বাচিত চিরায়ত সাহিত্য

শিশু-কিশোর গল্প
ভগবানের টাঁকশাল : শিবনাথ শাস্ত্রী


শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক, দার্শনিক, লেখক, অনুবাদক, ঐতিহাসিক শিবনাথ শাস্ত্রীর জন্ম ৩১ জানুয়ারি ১৮৪৭ ; এবং মৃত্যু ৩০ সেপ্টেম্বর, ১৯১৯। সমাজ-সংস্কারক হিসেবে তাঁর প্রভাব শতাব্দি অতিক্রান্ত হয়েছে। বিরাট ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই জনহিতৈষী বয়স্কশিক্ষা, নারী শিক্ষা, শিশু শিক্ষা বিস্তার, নারী-মুক্তি আন্দোলন জোরদার এবং বাল্যবিবাহ রহিতকরণে ব্যাপক ত্যাগ স্বীকার করেন। যুবকদের অবক্ষয় দূরীকরণে, বিশেষ করে মদের বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধ করে তিনি যুবকদের সংগঠিত করেছিলেন। এ জন্য তিনি “মদ না গরল” নামে একটি মাসিক পত্রিকাও বের করতেন। ধর্মান্ধ ও পৌত্তিলকতার বিরুদ্ধে লড়েছেন আজীবন। ব্রাহ্মসমাজের প্রথম কিশোর পত্রিকা ‘সখা’ তাঁর হাতেই প্রতিষ্ঠা পায়। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘মুকুল’ পত্রিকা তো ইতিহাস। তাঁর রচিত “আত্মচরিত’’ এবং “রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ” গবেষণামূলক আকরগ্রন্থ। এ দেশিয় সমাজ-বির্তনের ধারা বোঝার জন্য তাঁর ওই দুটো গ্রন্থ অবশ্য-পাঠ্য।


ভগবানের টাঁকশাল
শিবনাথ শাস্ত্রী
এক গরীব ব্রাহ্মণ ছিল। সে তাহার নিজ গ্রামের এক শিব-মন্দিরে পূজারি ব্রাহ্মণের কাজ করিত। ইহাতে সে দৈনিক যে কয়টি ভিজা আলাে চাল পাইত, তাহাতেই কোন প্রকারে তাহার দিন চলিয়া যাইত। ব্রাহ্মণের একটি অতি ‘ভালমানুষ’ ব্রাহ্মণী ছিল। সে স্বামীর এত কষ্টের সংসারেও সর্বদা হাসিমুখে দিন কাটাইত। ব্রাহ্মণ যখন শিব-পূজায় বাহির হইত, সেই সময় ব্রাহ্মণী সংসারের কতকগুলি কাজ সারিয়া পাড়ার পাঁচজনের গােয়াল হইতে গােবর কুড়াইয়া আনিত ; তার পর, ব্রাহ্মণ পূজা হইতে ফিরিয়া আসিলে, স্বামীকে ভােজন করাইয়া, সেই গােবরের ঝুড়ি লইয়া তাহার কুঁড়ে ঘরের দেওয়ালের চারিদিকে ঘুঁটে দিত। শেষে অনেক বেলায় নিজে দুটি খাইতে বসিত।
ব্রাহ্মণ এত গরীব হইয়াও কখনও অর্থের জন্য আক্ষেপ করিত না। সে বলিত, “দিন ত এক রকমে কেটে যাচ্ছে, তবে আমার টাকার কি দরকার? আমি বেশ মনের সুখে আছি !” গ্রামের সকলে ব্রাহ্মণকে শিরােমণি-ঠাকুর বলিয়া ডাকিত। আর তাহার স্ত্রীকে শিরোমণি-বউ বলিত। ব্রাহ্মণ যে যথার্থ ই কোন টোলে অথবা সংস্কৃত কলেজে পড়িয়া এই উপাধি লাভ করিয়াছিল, তাহা নহে; বােধ হয়, ব্ৰাহ্মণের বংশের কোন ব্যক্তির অদৃষ্টে এই উপাধি লাভ ঘটিয়াছিল, তাই উহারা শিরােমণি-বংশ বলিয়া প্রসিদ্ধ ; এবং পর্যায়ক্রমে সকলে বিনা আপত্তিতে উহা ভােগ করিয়া আসিতেছিল !
আহারাদির পর শিরােমণি-ঠাকুর বেশ অনেকক্ষণ ঘুমাইত! তারপর, বৈকালে চণ্ডীমণ্ডপের দাওয়ায় একটি ছােট মাদুর বিছাইয়া কৃত্তিবাসী রামায়ণের যেখানে রামের অশ্বমেধ-যজ্ঞের বৃত্তান্তটা লিখিত আছে, সেই খানটা সুর করিয়া পড়িত। সেই সময় তাহার কিছুদূরে বসিয়া রামা চাষা, দানু গােয়ালা, পরাণে তাঁতি প্রভৃতি কতকগুলি নিরক্ষর নিরীহ ধর্মভীরু প্রতিবাসী তদগতচিত্তে উহা শুনিত; এবং শিরোমণি-ঠাকুর যখন উহার ব্যাখ্যা করিবার সময় বলিত যে, আজকাল আর সে রাম-রাজত্বও নাই, আর সে যজ্ঞের ঘটা এবং ভূরিভােজনের ব্যাপারটাও একেবারে উঠিয়া গিয়াছে, এখন ব্রাহ্মণের মৰ্যাদা কেহই রাখে না, সকলেই অনাচারী-অপব্যয়ী; তখন সেই শ্ৰোতৃ মণ্ডলী সমস্বরে বলিত, “ঠাকুর, ঠিক বলেছ। এখন সব ব্যাটাই অনাহারী— সকলেই অল্প-আয়ী।”
সন্ধ্যার পর শিরোমণি-ঠাকুর পুনরায় শিব-মন্দিরে ঠাকুরের শীতল আরাত দিতে যাইত এবং আসিবার কালে একঘটি দুধ ও খানকতক বাতাসা লইয়া ঘরে ফিরিত।
ঘটনাক্রমে একদিন সকালে যখন শিরােমণি-ঠাকুর শিবের পূজা করিতে বসিয়াছে, সেই সময় শিবের স্ত্রী দুর্গাদেবী সেই মন্দিরে আসিয়া উপস্থিত হইলেন ! শিরােমণি ঠাকুর যতক্ষণ পূজা করিতে লাগিল, দুর্গা ততক্ষণ মন্দিরের একধারে বসিয়া তাহা দেখিতে লাগিলেন। তার পর পূজা শেষ করিয়া ব্রাহ্মণ নিয়মিত মন্দিরের দরজায় শিকল দিয়া প্রস্থান করিল।
পূজারি চলিয়া গেলে, দুর্গা শিবকে বলিলেন, “ঠাকুর, লােকে তােমার ‘শিব’ নাম রেখে বড়ই অন্যায় করেছে। শিব অর্থে শুভ; কিন্তু তুমি তোমার নামের মাহাত্ম কিছুই রাখছো না!”
শিব বলিলেন, “দুর্গা, আজ তুমি এমন কথা বলছ কেন? আমি এমন কি কাজ করেছি, যাতে আমার এই সাধের ‘শিব’ নামের মাহাত্ম্য নষ্ট হয়েছে ?”
দুর্গাঃ ঠাকুর, তার দৃষ্টান্তের অভাব কি ? এই দেখ, তােমার এই পূজারি ব্রাহ্মণ প্রত্যহ দু’টি বেলা ভক্তিভরে তােমার পূজা-অর্চনা যথানিয়মে করে আসছে, অথচ ওর মত গরীব বুঝি আর দুটি নেই! যে তােমার এমন ভক্ত, সে যদি দুবেলা পেট ভরে খেতে না পেলে, তবে তােমাকে কোন হিসাবে ‘শিব’ ‘শিব’ বলে ডাকবে?
শিবঃ দেবি, এইজন্যে আমার ‘শিব’ নামে তুমি কলঙ্ক দিচ্ছ! কিন্তু দেখ এতে আমার কোন দোষ নেই। ব্রাহ্মণের অদৃষ্টে এতদিন দুঃখের ভােগ ছিল, কাজেই ওকে ভিজে আলো চাল খেয়ে দিন কাটাতে হয়েছে । এখন ওর অদৃষ্ট, সুপ্রসন্ন, সুতরাং আর ওকে কষ্টে সংসার চালাতে হবে না।
ইহা শুনিয়া দুর্গা হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “বটে! ভাগ্যিস, আজ আমি এই সময় এখানে এসে পড়েছিলাম তাই ত বামুনের বরাৎটা ফিরে গেল! তা যা হােক, তুমি আর দেরী করতে পারবে না, কালই ওকে কিছু পাইয়ে দাও।”
শিব বলিলেন, “আচ্ছা, তাই হবে। কালই ব্রাহ্মণকে সাত হাজার টাকা দেওয়াবো।”
মন্দিরের মধ্যে শিব-দুর্গার যখন এইরূপ কথাবার্তা চলিতেছিল, সেই সময় এক ব্যক্তি বিশ্রাম করিবার জন্য মন্দিরের রোয়াকে আসিয়া বসিয়াছিল! সে একে একে শিব-দুর্গার সমস্ত কথাগুলি শুনিল। লােকটা শিরােমণি-ঠাকুরকে বেশ চিনিত। পূজ্ঞারি ব্রাহ্মণের অদৃষ্টে একেবারে এতগুলি টাকা জমা রহিয়াছে শুনিয়া, সে হিংসায় ছটফট করিতে করিতে তৎক্ষণাৎ শিরােমণির বাড়ীর দিকে ছুটিল।
এ ব্যক্তি একজন বিখ্যাত সুদখাের মহাজন, নাম গগন দাস। গগন শিরােমণি ঠাকুরের বাড়ী গিয়া দেখিল, ব্রাহ্মণ পুইগাছের মাচা বাঁধিতেছে। গগন ব্রাহ্মণকে ডাকিল। শিরোমণি-ঠাকুর মহাজন গগনকে তাহার কুঁড়ে ঘরের দরজায় দাঁড়াইয়া থাকিতে দেখিয়া শিহরিয়া উঠিল। সে জড়িতস্বরে বলিল, “বড়বাবুর কি কিছু পুঁই ডাটার আবশ্যক হয়েছে? তা নেন না-কতটি চাই ?”
গগন হাসিয়া বলিল, “না শিরোমণি-ঠাকুর, পুঁইশাকে দরকার নেই। আপনাকে আজ একটা কথা বলতে এসেছি।”
শিরােমণিঃ তা বলুন না, কথাটা বলে ফেলুন। কিছু পেসাদ চাই কি?
গগনঃ হাঁ, অনেকটা তাই বটে! কিন্তু সেটা এখানে বলতে পারবো না। আপনাকে একবার চণ্ডীমণ্ডপে আসতে হবে।
শিরােমণি-ঠাকুর তৎক্ষণাৎ গগনের সহিত চণ্ডীমণ্ডপে গমন করিল। তখন গগন বলিল, “ঠাকুর, আমি তােমাকে আজ এই তিন হাজার টাকা দিচ্ছি, তার বদলে কাল সমস্ত দিনরাতের মধ্যে তোমার যা কিছু আয় হবে, তা আমাকে দিতে হবে। কেমন এতে রাজী আছ কিনা, বল ?”
শিরােমণি-ঠাকুর গগনের কথা শুনিয়া ফ্যা ফ্যা করিয়া তাহার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। তার পর গগন পুনরায় প্রশ্ন করাতে, ব্রাহ্মণ বলিল, “বলেন কি বড় বাবু। টাকার গরমে কি আপনার মাথাটাও তেতে উঠেছে ? আমায় তিন হাজার টাকা দিয়ে, আমার কালকের সকালের তিন পাে আলাে চাল এবং রাত্রের আধসের, দুধ, আর খান আষ্টেক বাতাসার বোঝা নিয়ে আপনি কি করবেন ? সে গুলাের যে আট আনাও দাম হবে না। আপনি আজ তামাসা করেন, না কি?”
গগন গোঁফে তা দিতে দিতে বলিল, “না ঠাকুর, তামাসা নয়। আমি সত্যিই তােমার কাছে এই প্রস্তাব করবার জন্যে, এই দেখ, টকা পৰ্য্যন্ত নিয়ে এসেছি। এখন কি বল, রাজী আছ ত? তা হলে এই থলেশুদ্ধ টাকা নেও; এতে পুরােপুরি তিন হাজার আছে।
শিরোমণি-ঠাকুর দুইবার টিকি টানিয়া, তার পর মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে বলিল, “আমার আর রাজী-গররাজী কি ? এখন আপনার যদি এমন খেয়ালই হয়ে থাকে, তা হলে থলেটা দিয়ে যান!’’
গগন তিন হাজার টাকার থলেটা ব্রাহ্মণের হাতে দিয়া বলিল, “তা হলে কাল খুব ভােরেই আমি আসছি; আমি না এলে তুমি বাড়ী থেকে বেরিও না, বুঝেছ ত?”
শিরোমণি-ঠাকুর ঘন ঘন ঘাড় নাড়িয়া বলিল, “হাঁ, তা খুব বুঝেছি। আপনি যদি আর না আসেন, তা হলে এ জন্মে আমি আর মন্দিরমুখো হচ্ছি না। বাবা, বাঁচা গেল—এখন ভুরি-ভােজন লাগিয়ে দেওয়া যাক গে !” এই বলিয়া শিরোমণি ঠাকুর অন্দরমহলে প্রবেশ করিল। গগন দাসও সাত হাজার টাকার কথা ভাবিতে ভাবিতে বাড়ী ফিলি।
পরদিন খুব ভােরে দুইজন পাইক সঙ্গে লইয়া গগন শিরােমণি-ঠাকুরের বাড়ী আসিয়া উপস্থিত হইল। ব্রাহ্মণ তখনও টাকার স্বপ্ন দেখিতে দেখিতে সুখে নিদ্রা যাইতেছিল। গগনের ডাকাডাকিতে তাহার ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল। সে তাড়াতাড়ি চক্ষু মুছিয়া বাহিরে আসিয়া বলিল, “এই যে বড় বাবু এসেছেন! তা তামাক ইচ্ছে করেন কি?”
গগন বলিল, “না না, তামাকের প্রয়ােজন নেই, তুমি শীগ্গির বেরিয়ে এস।”
শিরোমণি-ঠাকুর নিয়ম-মত নামাবলি, গামছা ও কোশাকুশি লইয়া দুর্গা, শ্রীহরি’ বলিতে বলিতে বাড়ীর বাহির হইল। তার পর সকলে শিবমন্দিরের দিকে যাত্রা করিল।
মন্দিরে আসিয়া ব্রাহ্মণ শিবপূজা করিতে বসিল, আর গগন ও তাহার পাইক দুইটি দরজার দুই পাশে বসিয়া রহিল। আন্দাজ আধ ঘণ্টা পরে, পূজা শেষ হইলে শিরােমণি-ঠাকুর নৈবেদ্যের থালাখানি আনিয়া গগনের সম্মুখে ধরিল। গগন জিজ্ঞাসা করিল, “এ কি হবে ?”
আপনার আজ সকালের পাওনা।
গগনঃ না হে না, আমি ভিজে আলাে চাল আর ছােলার জন্যে কাল তােমাকে তিন হাজার টাকা দিই নি। এ তুমি নেও, এর পর যা পাবে, আমার তাই চাই।
শিরােমণি-ঠাকুরঃ এর পর সেই সন্ধ্যার সময় আধ সের কঁচা দুধ আর আধ পয়সার বাতাসা !
গগনঃ সেটাও তােমায় এখন থেকে দিয়ে রাখুলুম। এ ছাড়া আর যা পাবে, আমার তাই চাই।।
শিরােমণিঃ এ ছাড়া অষ্টরম্ভা !
গগন হাসিয়া বলিল, “বেশ, তাই হবে। এখন যতক্ষণ না আমি তােমায় যেতে বলছি, ততক্ষণ তুমি এখানে বসে।*
শিরোমণি-ঠাকুর বসিল।
তার পর একটু একটু করিয়া সূৰ্য্য মাথার উপর উঠিল। চতুর্দিক রােদে ঝাঁ ঝাঁ করিতে লাগিল। ক্রমে পিপাসায় ব্রাহ্মণের গলা শুকাইয়া কাঠ হইয়া উঠিল। সে আর চুপ করিয়া বসিয়া থাকিতে পারিল না; গগনকে বলিল, “বড় বাবু, আমি তবে এখন আসি; এর মধ্যে যদি কিছু এসে পড়ে, তা হলে আপনি একটা পাইক পাঠিয়ে আমাকে ডাকিয়ে আনবেন। আমি আর থাকতে পাচ্ছি না, তেষ্টায় প্রাণ ছটফট কচ্ছে।”
এই বলিয়া সে উঠিয়া দাড়াইল। তার পর, যাইবার সময় বলিল, “বড় বাবু, আর কেন রােদে বেগুন-পােড়া হচ্ছেন? আপনিও এখন যান। বরং একটু বােদ পড়লে ফের আসা যাবে।”
গগন সে কথায় কান না দিয়া পূর্বের ন্যায় বসিয়াই রহিল। এদিকে বেলা বাড়িতে বাড়িতে সূৰ্য্য পশ্চিমদিকে ঢলিয়া পড়িল। ক্ষুধায় দেহ অবসন্ন, তৃষ্ণায় বুক ফাটিতেছে, মাথা টন্ টন্ করিতেছে, তথাপি গগনের উঠিবার নাম নাই । শেষে আর সহ্য করিতে না পরিয়া, সে-“ব্যাটা মিথ্যাবাদী দেবতা, তােমায় দেখাচ্ছি, দাঁড়াও!” এই বলিতে বলিতে মন্দিরের ভিতর ঢুকিল এবং পরক্ষণেই পাথরের শিবের মাথায় সজোরে এক চড় মারিল। তার পর আর একটা চড় মারিবার জন্য শিবের মাথা হইতে হাত তুলিতে যাইয়া দেখিল যে, শিবের মাথায় উহা বেশ ভাল রকমে আটকাইয়া গিয়াছে। কত সাধ্য সাধনা, কত অনুনয়-বিনয়, কত টানাটানি ঝাঁকঝাঁকি—কিছুতেই কিছু হইল না। পাইকেরা পর্যন্ত বিস্তর চেষ্টা করিল, কিন্তু কোন মতেই গগনকে বন্ধন-মুক্ত করিতে পারিল না। অবশেষে হাতের যন্ত্রণায় সে ভেউ ভেউ করিয়া কঁদিতে কাঁদিতে মন্দিরের মধ্যে শুইয়া পড়িল। এই অবস্থায় কখন যে সে ঘুমাইয়া পড়িয়াছে, তাহার ঠিকানা নাই।
গগন নিদ্রা যাইবার সময় স্বপ্ন দেখিল, এক বিকটাকার রাক্ষস-মুৰ্ত্তি তাহার হাত ধরিয়া রহিয়াছে এবং তাহার পার্শ্বে মাথায় জটা, গায়ে ভস্মমাখা এক যােগী দাঁড়াইয়া আছেন? গগন বেশ বুঝিতে পারিল যে, ঐ রাক্ষস-মূর্তিই শিবের সহচর-নন্দী আর যােগী স্বয়ং শিব। সে স্বপ্নে শিবের কাছে অনেক কান্নাকাটি করিল, কিন্তু শিব তাহার একটা কথাও শুনিলেন না। তিনি বলিলেন, “দেখ, তাের মত লােভী, স্বার্থপর, হিংসুক মহাজন এ জেলায় আর দুটি নেই ! তাের যা ধন-দৌলত আছে তা সাত পুরুষে ফুরােবে না। কিন্তু তবুও তাের লােভের শেষ নেই। কাল দুর্গার সঙ্গে আমার যে কথা হয়েছিল, তাই শুনে তুই তাড়াতাড়ি ব্রাহ্মণকে তিন হাজার টাকা দিয়ে, তার আজকের প্রাপ্য সাত হাজার টাকা আত্মসাৎ করবার পথ ঠিক করে রেখে এসেছিস। তাের প্রতি কাহারও দয়া হয় না। তবে যদি তুই ব্রাহ্মণকে এখনি আর চার হাজার টাকা দিতে পারিস, তা হলে নন্দী তাের হাত ছেড়ে দেবে ! নচেৎ আজ রাত্তিরে তাের শরীর থেকে ডান হাতখানা ছিঁড়ে ফেলতে তাকে বলে দেব!’
গগন শিবের কথা শুনিয়া ভয়ে কঁপিতে কপিতে বলিল, দোহাই ঠাকুর, আমি এখনই চার হাজার টাকা দিচ্ছি, তুমি আমায় ছেড়ে দাও।”
শিব বলিলেন, “আচ্ছা আজ তােকে ক্ষমা করলাম ; কিন্তু ছাড়া পেয়ে যদি ব্রাহ্মণকে ফাঁকি দিস, তা হ’লে তুই তিন দিনের মধ্যে মারা যাবি। আর দেখ, কাল আমি ব্রাহ্মণকে যে সাত হাজার টাকা দেবার কথা বলেছিলাম, সে কি আমি ঘর থেকে এনে দিতাম? মূর্খ, তুই কি ভেবেছিস যে, আমার একটা মস্ত টাঁকশাল আছে, সেইখানে থলে থলে টাকা তয়ের হচ্ছে ? ওরে বোকা, তাের মত যারা পরের ধন হরণ করে নিজের ঘরে পুঁজি করে, তারাই আমর এক একটা জীবন্ত টাঁকশাল! দেখ, লােভর বশে অন্ধ হয়ে ‘হা টাকা—যে টাকা’ করে চারিদিক হাতড়ে বেড়ালে, এই রকম বিপদে পড়তে হয়। এখন থেকে যাতে গরীবের দুঃখ দূর হয়, লোকে যাতে না খেতে পেয়ে মারা না যায়, তার পথ করগে যা।”
গগন তাহাতেই স্বীকৃত হইল। অমনি তাহার ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল। সে জাগিয়া উঠিয়া দেখে যে, তাহার হাত সত্য সত্যই শিবের মাথা হইতে খুলিয়া গিয়াছে। সে তখন শিবকে প্রণাম করিয়া একজন পাইককে শিরোমণি-ঠাকুরের বাড়ী পাঠাইয়া দিল।
ব্রাহ্মণ আসিলে, গগন তাহাকে নিজের বাটিতে আনিয়া, সাত হাজারের বাকী চার হাজার টাকা গুণিয়া দিয়া, মন্দিরের সমস্ত কথা বলিল ! ব্রাহ্মণ ত অবাক ! কিছুক্ষণ পরে সে ধীরে ধীরে বলিল, “বড়বাবু, তবে তুমি ভগবানের টাঁকশাল! তা হলে এখন থেকে যার যা দরকার হবে, সকলকে তােমার কাছে পাঠিয়ে দেব, কেমন ত?”
গগন বলিল, “হাঁ, ঠাকুর তাই দিও। আজ থেকে আমার যা কিছু সব পাঁচ জনের ! আমি ভগবানের টাকশাল !”
সেইদিন হইতে সুদখাের কৃপণ গগন দাসের নবজীবনের সূত্রপাত হইল! সে প্রত্যহ দীনদরিদ্রকে নিয়মিতরূপে দান না করিয়া জলস্পর্শ করিত না! ক্রমে সে দানবীর গগন দাস নামে প্রসিদ্ধ হইয়া উঠিয়াছিল।
শিবনাথ শাস্ত্রী রচিত “ভগবানের টাঁকশাল” গল্পটি যোগিন্দ্রনাথ সরকার সংকলিত ‘গল্প-সঞ্চয়’’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া


পরিকল্পনা ও সম্পাদনা : বাবলু ভঞ্জ চেীধুরী
Write more, thats all I have to say. Literally,
it seems as though you relied on the video to make your point.
You obviously know what youre talking about, why waste your intelligence on just posting videos to your blog when you could be
giving us something enlightening to read?
drugs from canada: trust canadian pharmacy – canadianpharmacyworld
https://canadiandrugs.store/# vipps approved canadian online pharmacy
canadian pharmacy ltd: accredited canadian pharmacy – my canadian pharmacy
online pharmacy store: cheapest online pharmacy – cheap meds no prescription
You’ve made some decent points there. I looked on the web for more info about the issue and found most individuals will go along with your views on this website.
https://indiapharmacy.site/# indian pharmacy
reddit canadian pharmacy safe online pharmacy best canadian online pharmacy
top online pharmacy india: top 10 pharmacies in india – reputable indian pharmacies
We’re a group of volunteers and starting a new scheme
in our community. Your web site provided us with valuable info to work on. You have done an impressive job and our
whole community will be grateful to you.
mexican border pharmacies: Top mail order pharmacies – mexican drug pharmacy
Asking questions are actually good thing if you are not understanding anything fully, except this post gives nice understanding even.
http://buydrugsonline.top/# online ed drugs no prescription
canadian online pharmacy no prescription: legal drugs buy online – meds online without doctor prescription
When someone writes an article he/she keeps the thought of a user in his/her mind that how a user can know it. So that’s why this article is great. Thanks!
wonderful submit, very informative. I’m wondering why the opposite
experts of this sector do not understand this. You must proceed your writing.
I’m sure, you have a huge readers’ base already!
http://gabapentin.life/# neurontin 100mg discount
how much is generic neurontin: buy gabapentin online – buy neurontin canada
Today, I went to the beach front with my kids.
I found a sea shell and gave it to my 4 year old daughter
and said “You can hear the ocean if you put this to your ear.” She
put the shell to her ear and screamed. There was a hermit crab inside and it pinched her ear.
She never wants to go back! LoL I know this is completely off topic but I had to tell someone!
continuously i used to read smaller articles which also clear their motive, and that is also happening with this post which I am reading at this place.
https://wellbutrin.rest/# buy wellbutrin without prescription
buy cheap clomid: Clomiphene Citrate 50 Mg – cost cheap clomid online
Hi there mates, how is the whole thing, and what you desire to say concerning this piece of writing, in my view its genuinely amazing designed
for me.
Excellent post. Keep writing such kind of info on your blog.
Im really impressed by your blog.
Hello there, You’ve performed an excellent job. I will certainly digg it
and in my view recommend to my friends. I’m sure they’ll be
benefited from this website.
Howdy! I’m at work surfing around your blog from my new iphone 4!
Just wanted to say I love reading your blog and look forward to all your posts!
Keep up the great work!
I am really loving the theme/design of your weblog. Do you ever run into any web browser compatibility problems? A small number of my blog visitors have complained about my blog not operating correctly in Explorer but looks great in Opera. Do you have any tips to help fix this issue?
Hello! I know this is kind of off topic but I was wondering if you knew where I
could get a captcha plugin for my comment form? I’m using the same blog platform as yours
and I’m having trouble finding one? Thanks a lot!
https://paxlovid.club/# paxlovid pharmacy
Paxlovid buy online http://paxlovid.club/# paxlovid buy
where can i buy ventolin over the counter: Ventolin inhaler best price – ventolin no prescription
You really make it seem so easy with your presentation but I find this matter to be actually something that
I think I would never understand. It seems too complicated and very broad for
me. I’m looking forward for your next post, I will try to get the hang of it!
https://clomid.club/# can i get clomid price
neurontin 214: 800mg neurontin – neurontin 100mg tablet
I am regular visitor, how are you everybody?
This post posted at this web site is really pleasant.
https://gabapentin.life/# neurontin 400 mg capsules
where to buy cheap clomid prices: Clomiphene Citrate 50 Mg – can i get cheap clomid prices
It’s an awesome paragraph in support of all the
internet viewers; they will obtain benefit from
it I am sure.
https://paxlovid.club/# paxlovid price
neurontin oral: cheap gabapentin – neurontin generic
http://gabapentin.life/# neurontin tablets 300 mg
farmacie on line spedizione gratuita: avanafil – farmacia online
п»їfarmacia online migliore: kamagra oral jelly consegna 24 ore – farmacia online piГ№ conveniente
acquistare farmaci senza ricetta: Avanafil farmaco – farmacia online senza ricetta
There’s definately a lot to learn about this issue. I love all the points you’ve
made.
Hi there! Do you know if they make any plugins to protect against hackers? I’m kinda paranoid about losing everything I’ve worked hard on. Any suggestions?
farmacie online affidabili comprare avanafil senza ricetta farmacia online migliore
Good web site you have here.. It’s difficult to find high quality writing like yours nowadays.
I truly appreciate individuals like you! Take care!!
https://avanafilit.icu/# farmacie online autorizzate elenco
comprare farmaci online con ricetta: avanafil prezzo – farmacia online migliore
I know this if off topic but I’m looking into starting my own blog and was curious what all is required to get set up?
I’m assuming having a blog like yours would cost a pretty penny?
I’m not very internet savvy so I’m not 100% positive.
Any tips or advice would be greatly appreciated. Appreciate it
farmacie online affidabili: kamagra oral jelly – farmacia online miglior prezzo
Wow, fantastic blog layout! How long have you been blogging for?
you make blogging look easy. The overall look of your site is excellent,
as well as the content!
farmacia online migliore kamagra gel prezzo migliori farmacie online 2023
viagra 100 mg prezzo in farmacia: alternativa al viagra senza ricetta in farmacia – viagra online spedizione gratuita
pillole per erezione immediata: viagra online spedizione gratuita – viagra originale in 24 ore contrassegno
You really make it seem really easy together with your presentation but I find
this matter to be really one thing that I feel
I might never understand. It kind of feels too complicated and extremely
wide for me. I am looking forward on your subsequent publish, I’ll try
to get the hang of it!
http://tadalafilit.store/# farmacia online migliore
farmacia online senza ricetta: kamagra – п»їfarmacia online migliore
viagra prezzo farmacia 2023: viagra prezzo farmacia – viagra prezzo farmacia 2023
farmacia online miglior prezzo: farmacia online più conveniente – acquisto farmaci con ricetta
comprare farmaci online all’estero farmacia online miglior prezzo comprare farmaci online all’estero
migliori farmacie online 2023: avanafil generico – comprare farmaci online all’estero
farmacia online senza ricetta: kamagra oral jelly consegna 24 ore – top farmacia online
comprare farmaci online all’estero: kamagra gold – comprare farmaci online all’estero
My brother suggested I would possibly like this website. He was totally right. This publish actually made my day. You cann’t consider just how so much time I had spent for this information! Thank you!
farmacia online: kamagra gel prezzo – farmacia online senza ricetta
farmacie online affidabili: avanafil prezzo in farmacia – top farmacia online
acquistare farmaci senza ricetta avanafil generico prezzo acquistare farmaci senza ricetta
migliori farmacie online 2023: farmacia online – acquistare farmaci senza ricetta
migliori farmacie online 2023: Dove acquistare Cialis online sicuro – acquisto farmaci con ricetta