কবি ওমর আলী : স্মৃতির স্বর্ণবৃষ্টি
রকিবুল হাসান
কবি ওমর আলী (২০ অক্টোবর ১৯৩৯ – ৩ ডিসেম্বর ২০১৫) বাংলাসাহিত্যের খ্যাতিমান কবি । ষাটের দশকে যারা বাংলা কবিতায় বাঁক ঘুরিয়েছেন তাদের অন্যতম প্রধান। বাংলা কবিতায় ত্রিশের অপ্রতিরোধ্য যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, চল্লিশ-পঞ্চাশ পেরিয়ে ষাটেও তার প্রভাব ছিল লক্ষ করার মতো, ওমর আলী তার ‘এ দেশে শ্যামল রঙ রমণীর সুনাম শুনেছি’ (১৯৬০) কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে নতুন কাব্যসুরের জানান দেন। এ গ্রন্থটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই পাঠক মহলে যেমন ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছিল, তেমনি বাংলা কাব্যসাহিত্যে ওমর আলীর স্থায়ী আসনটি সুনির্দিষ্ট হয়ে যায়। এ দেশে শ্যামল রঙ রমণীর সুনাম শুনেছি, ডাকছে সংসার, হৃদয় ছুঁয়ে আছে ঝড়, তোমাকে দেখলেই, আমার ভেতর খুব ভাঙচুর হচ্ছে’র মতো অনেক জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থের স্রষ্টা তিনি। তার বিখ্যাত উপন্যাস ‘খান ম্যানসনের মেয়ে’ ও ‘কুতুবপুরের হাসনাহেনা’।
ওমর আলী তার ‘এ দেশে শ্যামল রঙ রমণীর সুনাম শুনেছি’ (১৯৬০) কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে নতুন কাব্যসুরের জানান দেন
বাংলাসাহিত্যের প্রখ্যাত এ-কবি আমার প্রিয় শিক্ষক ছিলেন। প্রায় ত্রিশ বছর আগের কথা হলেও যোগাযোগ ছিল প্রায় নিয়মিত। তার সঙ্গে থেকে কথা বলেকখনও বোঝার উপায় ছিল না তিনি কত বড় মাপের কবি, কত বড় মাপের মানুষ ছিলেন। প্রথম পরিচয়েই যখন জানলেন আমি বাঘা যতীন আর ঔপন্যাসিক আকবর হোসেনের গ্রামের ছেলে, মুহূর্তেই যেন তিনি আমাকে তার হৃদয়ের স্নেহশীতলে জায়গা করে দিলেন, যা আমার জন্য সারা জীবনই অক্ষুণ্ণ ছিল। এ বছরের প্রথম দিকে তিনি গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে সরকারি উদ্যোগে জরুরি ভিত্তিতে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদানের জন্যআনাহয়। প্রিয় শিক্ষককে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলাম আমি এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক এএসএম কামালউদ্দিন। তখন হরতালের আগুনে পুড়ছে দেশ। হরতাল আর পেট্রলবোমা উপেক্ষা করে স্যারকে দেখতে গেলাম। স্যার শুয়ে আছেন। এ যেন এক অন্য মানুষ। শ্বেতশুভ্রচাদর গায়ে শুয়ে আছেন। কথা বলতে পারছেন না অনেক দিন। মাঝে মধ্যে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন, এপাশ-ওপাশ করছেন।
আমি কয়েকবার ডাকলাম, ‘স্যার।’ তিনি আমার দিকে তাকালেন। তার দু’চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে। নির্বাক আমার প্রিয় স্যার। তার মুখের চিরমাখা হাসি চোখের জলে ডুবে গেছে।
আমি এক বোকা পাখির মতো দাঁড়িয়ে থাকি। যখন ফিরছি তখন বুকের ভেতর এক গভীর বেদনা ও কষ্ট। সেই তো আমার শেষ দেখা। যার সঙ্গে আমার এত এত কথা- এত এত গল্প- আজ একটি কথাও না-বলে চোখ ভরে জল নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে আমাকে। তখনও ভাবিনি স্যারকে এ দেখাই আমার শেষ দেখা। কিছুদিন আগেও ভেবেছি স্যারকে দেখতে চরকোমরপুরে যাব। যাওয়াটা আর হয়ে ওঠেনি। এখন নিজের কাছে খুব অপরাধ বোধ হচ্ছে। নিজের কাছে সব কিছু কেমন শূন্য ও বিবর্ণ মনে হচ্ছে। তার মৃত্যুতে পিতৃসম এক প্রিয় অভিভাবক আমি হারিয়ে ফেলেছি।
কবি ওমর আলী চরকোমরপুর থেকে হেঁটে পাবনা শহরঘেঁষা বাঁধ পর্যন্ত যেতেন, কয়েক মাইল পথ। তারপর রিকশায় সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে। তিনি সেখানে শিক্ষকতা করতেন। ইংরেজি বিভাগের প্রধান ছিলেন। শিক্ষক রুমের এক কোণে বসতেন। অধিকাংশ সময় চুপচাপ থাকতেন। কখনও কখনও ওখানে বসেই কবিতা লিখতেন। সেসব সদ্য ভূমিষ্ঠ অনেক কবিতা দেখার দুর্লভ সৌভাগ্য আমার হয়েছে। দিন শেষে সন্ধ্যায় ঘরের পাখি ঘরে ফিরতেন। কখনও কখনও আমিও স্যারের সঙ্গী হতাম অনেকখানি পথ। স্যার খুশি হতেন। স্যারের শার্টের বুক পকেটে কাগজে ভর্তি থাকত। কাগজের ভারে পকেটটা ফুলে উঠত। প্রায় সব কাগজেই থাকত কবিতা । প্রকাশিত-অপ্রকাশিত নতুন কবিতা। কাঁধে একটা ব্যাগ থাকত। কখনও সেটি হাতে নিয়ে হাঁটতেন। আবার কখনও হাতে থাকত ছাতা। রোদ-বৃষ্টিতে দীর্ঘ পথে ছাতা একরকম নিয়মিতই রাখতেন তিনি। চরকোমরপুরের পথ-কী যে মায়াভরা- বালিমাখা- রাস্তার দু’পাশে সাজানো গাছ। পাখিরা উড়ছে, ফিরছে, বসছে- যেন গাঁয়ের কবির জন্য প্রতিদিনের এ এক অন্যরকম উৎসব।
একদিন স্যারের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে বললাম, ‘স্যার, এত পথ হেঁটে কলেজে যান, শহরে থেকে গেলেই তো ভালো হয়।’
স্যার বললেন, ‘আমি যদি শহরে থাকি, তাহলে এই গ্রামের কথা কে লিখবে? এই মাটির গন্ধ প্রতিদিন আমি কোথায় পাব?’ আরও বললেন, দেখ, এ গ্রাম থেকে আমার শহরে যেতে একটু কষ্ট হয় সত্যি, কিন্তু গ্রামের মানুষ আমি, সারাটা জীবন যেন গ্রামেই থাকতে পারি। গ্রামের মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিজের চোখে দেখে তাদের পাশে থেকে যেন কবিতা লিখতে পারি।’
‘… গ্রামের মানুষ আমি, সারাটা জীবন যেন গ্রামেই থাকতে পারি। গ্রামের মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিজের চোখে দেখে তাদের পাশে থেকে যেন কবিতা লিখতে পারি।’
অনেক কথা বললেন স্যার। আমি মুখ নিচু করে হাঁটছি আর গভীর মুগ্ধতায় তার কথাগুলো শুনছি। এভাবে অনেকদিন স্যারের সঙ্গে চরের পথ হেঁটেছি, শুনেছি তার কবিতার কথা, অনুভব করেছি গ্রাম আর গ্রামের সাধারণ মানুষ-লতাপাতা-পাখি তার কতখানি।
এর বেশ ক’বছর পর কবি ওমর আলী স্যারকে প্রধান অতিথি করে কলকণ্ঠ একাডেমির উদ্যোগে কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমিতে কবিতা পাঠের একটি অনুষ্ঠান করেছিলাম। স্যারকে কার্ড পাঠালাম। অনুষ্ঠানের আগের দিন স্যারকে আনতে তার চরকোমরপুরের বাড়িতে গেলাম। স্যারের বাড়িতে পা দিতেই তার পুত্র রফি বললেন, আব্বা তো সিরাজগঞ্জ ইসলামিয়া সরকারি কলেজে বদলি হয়ে গেছেন। আমার তো বাক হারানোর মতো অবস্থা। স্যার না থাকলে অনুষ্ঠানের কী হবে! আমি বললাম, স্যার কবে গেছেন? রফি বললেন, ‘আব্বা গতকালই সিরাজগঞ্জ গেছেন।’
আমি তখন কী করি! আজকের মতো তো তখন মোবাইল ছিল না। আমি তখুনি সিরাজগঞ্জের পথে রওনা দিলাম। সিরাজগঞ্জ যখন পৌছলাম, তখন বিকাল গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যা। কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক চেষ্টায় স্যারকে একটা সাধারণ মানের হোটেলে আবিষ্কার করলাম। স্যার আমাকে দেখেই শিশুর মতো একগাল হাসি দিয়ে বললেন, ‘রকিব, তুমি এখানে?’
আমি বললাম, ‘স্যার, আগামীকাল কুষ্টিয়ায় আপনার প্রোগ্রাম না?’
স্যার এবারও কী যে সুন্দর একটা হাসি দিয়ে বললেন, ‘আমি তো একদম ভুলে গেছি। বল তো এখন কী করি!’ বলেই একটু কি যেন চিন্তা করলেন। ঠিক আছে দেখছি কী করা যায়। বলেই আবার বললেন, ‘তুমি তো সারা দিন খাওনি।’ বলেই পাউরুটি আর কলা বের করে খেতে দিলেন। আমি খেতে খেতেই তিনি তৈরি হয়ে নিলেন। স্যার তখনি আমাকে নিয়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে রিকশায় রেলস্টেশনে এলেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই কীভাবে যেন প্রচার হয়ে গেছে কবি ওমর আলী রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে আছেন। মুহূর্তের মধ্যেই অনেক কবি-সাহিত্যিক-সংস্কৃতিমনা-অধ্যাপক ছুটে এলেন কবিকে দেখতে। কথা বলতে। মুহূর্তেই কী যে এক চমৎকার আড্ডা জমে উঠল স্যারকে ঘিরে। এর মধ্যেই ট্রেন চলে এলো। হুট করে জমে উঠা আড্ডাটাও হুট করেই ভেঙে গেল।
‘দেখো আমাদের গ্রামগুলো কী নিশ্চিন্ত ঘুমুচ্ছে। এসব গ্রামের সরল মানুষের গায়ে যদি কেউ এসিড মারে, এদের সঙ্গে যদি কেউ প্রতারণা করে, এদের জীবন নিয়ে যদি কেউ খেলা খেলে, বল তো কীভাবে তা সহ্য করা যায়!’
ট্রেনে স্যার আর আমি জানালার পাশে মুখোমুখি বসলাম। তখন সন্ধ্যা ডুবে গেছে। আঁধারের চাদর নেমে এসেছে। স্যার বলছেন তার জীবনের কথা, বলছেন কীভাবে কতটা কষ্ট করে নিজেকে বড় করেছেন, কীভাবে পুড়েছেন ভাতের কষ্টের আগুনে। বলছেন কবিতার কথা। এক সময় একটা ভারি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দূর আঁধারে তাকিয়ে বললেন, ‘দেখো আমাদের গ্রামগুলো কী নিশ্চিন্ত ঘুমুচ্ছে। এসব গ্রামের সরল মানুষের গায়ে যদি কেউ এসিড মারে, এদের সঙ্গে যদি কেউ প্রতারণা করে, এদের জীবন নিয়ে যদি কেউ খেলা খেলে, বল তো কীভাবে তা সহ্য করা যায়!’ আমি স্যারের দিকে নিবিড়ভাবে তাকিয়ে আছি। আর মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছি তার কথা। এ তো শুধু কথা নয়, যেন নদীর মুগ্ধ স্রোত। ট্রেন ছুটে চলেছে। স্যারের দু’চোখ কেমন যেন ভারি হয়ে উঠছে। অনেকটা সময় স্যার একদম চুপ করে থেকে আবার বললেন, তুমি আরও বড় হয়ে আমার প্রেমের কবিতাগুলো পড়ে দেখ, সেখানে অনেক নারীর নাম উল্লেখ আছে, মূলত একজন নারীকেই আমি নানাভাবে নানারূপে কবিতায় রূপ দিয়েছি।’
‘… আমার প্রেমের কবিতাগুলো পড়ে দেখ, সেখানে অনেক নারীর নাম উল্লেখ আছে, মূলত একজন নারীকেই আমি নানাভাবে নানারূপে কবিতায় রূপ দিয়েছি।’
কথায় কথায় কখন যে ট্রেন ঈশ্বরদিতে পৌঁছে গেছে, বুঝতেই পারিনি। তখন বেশ রাত। রাতের আঁধার ঠেলেই স্যার চলে গেলেন চরকোমরপুরে নিজের বাড়িতে। যাওয়ার আগে শুধু বললেন, ‘আমি গৃহকাতর মানুষ, গৃহে না ফিরলে আমার ঘুম হয় না।’
ঈদের দিন কুষ্টিয়ার অনুষ্ঠান শেষে স্যারকে নিয়ে কয়া গ্রামে চলে এলাম। শহরে গেস্ট হাউসে চমৎকার থাকার ব্যবস্থা করা সত্ত্বেও তিনি বললেন, ‘তোমার গ্রামে রাত কাটাব।’ রাতেই স্যারকে নিয়ে গ্রামে চলে এলাম। কী অদ্ভুত ব্যাপার! ভোরের আলো জ্বলতেই লুঙ্গি আর শার্ট পরে পুরো কয়া গ্রাম তিনি ঘুরলেন। তখন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির ভেতরই হাঁটছেন। ঔপন্যাসিক আকবর হোসেনের বাড়িতে গেলেন, যে ঘরে আকবর হোসেন থাকতেন, সে-ঘরে ঢুকলেন, দেখলেন এদিক ওদিক তাকিয়ে। বললেন, “আকবর হোসেন সাহেবের ‘অবাঞ্ছিত’ আমাদের অমূল্য সম্পদ।” আকবর হোসেনের বাড়ি থেকে বের হয়ে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মহানায়ক বিপ্লবী বাঘা যতীনের জন্মভিটার দিকে যখন হাঁটছি, তখন বৃষ্টি বেশ বেড়ে গেল। পথের পাশে একটা খানকা ঘরে দাঁড়ানোর কথা বলতেই স্যার বললেন, বাচ্চারা খেলছে। আমরা গেলে ওদের খেলাটা ভেঙে যাবে। আনন্দটা নষ্ট হয়ে যাবে। ওরা খেলুক। চলো ভিজতে ভিজতেই হাঁটি। যখন বাঘা যতীনের ভিটেতে এসে আমরা দাঁড়ালাম, স্যার তখন পুরো ভেজা।
গ্রামের পথ ধরে আমরা হাঁটছি। স্যার গল্প করছেন আর হাঁটছেন। একসময় বললেন, জানো একসময় অনেক খেতে পারতাম, কিন্তু খাবার তখন পাইনি। ক্ষুধার আগুনে পুড়েছি। এখন আমার অনেক টাকা। দেখ আমার পকেটে কত টাকা। যা ইচ্ছে হবে এখন তাই খেতে পারি। কিন্তু আমি তো এখন খেতে পারি না। যখন খাবার প্রয়োজন ছিল তখন খাবার পাইনি, আর এখন খাবার থাকতেও খেতে পারি না। জীবন এ কেমন রহস্যে ভরা বল তো!
স্যারের কথায় আমাদের বুকের গহীনে কষ্টের একটা ঢেউ বয়ে যায়। স্যারও বোধ হয় তা বুঝতে পারলেন। মুহূর্তেই সারা মুখে কৃত্রিম হাসির আভা ছড়িয়ে বললেন, ‘এসব কিছু না। জীবন এরকমই।’
আমাদের কোনো উত্তর থাকে না। গভীর বেদনায় এ কথাগুলো যখন আজ ভাবছি, লিখছি, তখন মৃত্তিকাগন্ধি কবি, আমার প্রিয় শিক্ষক মাটির ঘরে চিরঘুমে আচ্ছন্ন।
কবির শেষ সাক্ষাৎকার
‘কবিতা শুধু মনের খোরাকই নয়, এটি একটি জীবন দর্শনও বটে -ওমর আলী’
পঞ্চাশের দশকের অন্যতম প্রধান কবি ওমর আলীর ‘এদেশে শ্যামল রং রমণীর সুনাম শুনেছি’ নামের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থটি আবহমান বাংলায় অবস্থান করছে অনন্য মাত্রায়। তার প্রকাশিত কবিতার বই ৪৩টি, উপন্যাস ২টি। মৃত্যুর আগে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন তরুণ কবি অঞ্জন শরীফ। সাক্ষাৎকারটি নেয়ার পর তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন এবং বাকরুদ্ধ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সেই হিসেবে এটিই ছিল তার শেষ সাক্ষাৎকার।
অঞ্জন শরীফ : আপনার ‘এদেশে শ্যামল রং রমণীর সুনাম শুনেছি’ বহুল আলোচিত এই কাব্যগ্রন্থের পটভূমি সম্পর্কে বলুন
ওমর আলী : এ কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলো লিখেছিলাম মূলত পঞ্চাশের দশকে। তবে প্রকাশ পায় ১৯৬০ সালে। লেখাগুলো আমার প্রথম দিককার। তখন আমি তরুণ বয়সের মাত্র লেখালেখি শুরু করেছি। আমার বেড়ে ওঠার মূল জায়গা গ্রাম। তাই গ্রাম কেন্দ্রিকতা আমার লেখায় বেশি প্রভাব ফেলেছে। বইটির ইংরেজি অনুবাদ করেছি এবং মূল্যায়নের জন্য সুইডেনে পাঠিয়েছি। মূলত এই বইটিই আমার খ্যাতি এনে দেয়। গ্রামের সহজ-সরল নারীর সরলতা অর্থাৎ নারীর রমণীয় কমনীয় রূপটি আমাকে খুব টানে আর সে কারণেই এমন নামকরণ করেছি। এটি আমার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য কাজ।
অঞ্জন শরীফ : আপনার সময়ের কবিতা এবং বর্তমান সময়ের কবিতার মধ্যে কি কোনো মিল খুঁজে পান?
: খুব একটা মিল খুঁজে পাই না। তখনকার লেখায় সাহিত্যের আদি দর্শনের প্রভাব ছিল। এখনকার লেখার মধ্যে উচ্চমার্গীয় কোনো বৈশিষ্ট্য দেখতে পাই না। এখন সবকিছুই কেমন যেন ‘প্রফেশনাল’ হয়ে গেছে। কবিতা কোনো প্রফেশনাল বস্তু না। এটাকে সাধনা করে মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে সৃষ্টি করতে হয়।
অঞ্জন শরীফ : আপনার সমসাময়িক কবিদের সঙ্গে আপনার তেমন যোগাযোগ নেই অর্থাৎ দীর্ঘ রিলেশন গ্যাপ রয়ে গেছে। আবার ঢাকাতেও খুব কম যাওয়া হয়- এর কারণ কী?
: হ্যাঁ আমার সমসাময়িক কবিদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ নেই। সেই সময় আমরা পুরান ঢাকার বিখ্যাত বিউটি বোর্ডিংয়ে আড্ডা দিতাম। শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরী- এরা সবাই আসত। আমরা কবিতা নিয়ে অনেক আলোচনা করতাম। মূলত আমরাই আধুনিক কবিতার অগ্রযাত্রার দুঃসাহসী যাত্রী। পরে আমি পেশাগত কারণে ঢাকা ছাড়ি। তা ছাড়া আমি বিলাসবহুল জীবনযাপন খুব একটা পছন্দ করি না। সাধারণ জীবনযাপনই আমার পছন্দ এ কারণেই অনেকের সঙ্গে আমার রিলেশন গ্যাপ রয়ে গেছে।
‘মূলত আমরাই আধুনিক কবিতার অগ্রযাত্রার দুঃসাহসী যাত্রী’
অঞ্জন শরীফ : ঢাকা ছেড়ে এই অজপাড়াগায়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এতে আপনার লেখালেখিতে কোনো প্রভাব পড়েছে…
: গ্রামের ধুলোমাখা পথ আমার খুব প্রিয়। এখানকার নদী, সবুজ গাছপালা, পশুপাখি আমার রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। আর তাই আমার লেখায় এর প্রভাব পড়েছে। নাগরিক কবিতা খুব কম লিখেছি। গ্রামই ভালো লাগে।
অঞ্জন শরীফ : আধুনিক কবিতার প্যাটার্ন নিয়ে নানারকম কথাবার্তা চলছে, আপনার অভিমত কী?
: আমি মূলধারাতেই বিশ্বাসী। যেটা একটু আগেই বললাম সাহিত্যের আদি দর্শন অর্থাৎ মূল যে ধারা সেটাই আমার কাছে ভালো লাগে। আমার বিশ্বাস, যত রকম প্যাটার্নই করা হোক না কেন আদি ধারাটাই শেষ পর্যন্ত বজায় থাকবে।
অঞ্জন শরীফ : উত্তর আধুনিকতা নিয়ে বেশ মাতামাতি হয়েছে, এতে কবিতায় কী ধরনের প্রভাব পড়বে বলে আপনি মনে করেন?
: কবিতার মধ্যে যে মেসেজ থাকে সেটাই মানুষের উপকারে আসে। কবিতার প্যাটার্ন নিয়ে মানুষ মাথা ঘামায় বলে মনে হয় না।
অঞ্জন শরীফ : আধুনিক বাংলা কবিতা যেভাবে এগোচ্ছে তাতে কি বাংলা কবিতার সমৃদ্ধি ঘটবে?
: লেখার মধ্যে আরও মেধার সমন্বয় ঘটাতে হবে।
অঞ্জন শরীফ : তরুণ কবিদের কবিতা সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী ?
: তরুণেরা লিখছে এটা একটা ভালো দিক। কিন্তু এদের লেখার মধ্যে গভীরতা কম। একটা লেখা তৈরি হয়ার পর তার জন্য যে পরিমাণ শ্রমসাধনা দরকার তা তারা দিতে পারছে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে পড়তে হবে। পড়ার বিকল্প নেই। যথেষ্ট পড়াশোনা নেই বলেই কবিতা সেভাবে গড়ে উঠছে না। জ্ঞানের ভাণ্ডার যত বৃদ্ধি পাবে আশা করা যায় কবিতারও তত সমৃদ্ধি ঘটবে।
‘ সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে পড়তে হবে। পড়ার বিকল্প নেই। যথেষ্ট পড়াশোনা নেই বলেই কবিতা সেভাবে গড়ে উঠছে না। জ্ঞানের ভাণ্ডার যত বৃদ্ধি পাবে আশা করা যায় কবিতারও তত সমৃদ্ধি ঘটবে ’
অঞ্জন শরীফ : কবিতার লক্ষ্য কী হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?
: লক্ষ্য হওয়া উচিত জনগণের কল্যাণ সাধন। যিনি কবিতা লিখবেন তাকে আগে ভাবতে হবে তার লেখা থেকে দেশ এবং জাতি কিছু পাবে কিনা; তাকে অবশ্যই জ্ঞানার্জন করতে হবে। তার চিন্তা-চেতনার শক্তি হতে হবে প্রখর এবং অবশ্যই শিল্পিত।
অঞ্জন শরীফ : আপনার জীবনে পাওয়া না পাওয়া নিয়ে কোনো দুঃখবোধ আছে কী?
: আমি অতি সাধারণ মানুষ, দুঃখ-ব্যথা-বেদনা এসবই আমার সঙ্গী। কী পেয়েছি আর কী পাইনি তা নিয়ে কখনও ভাবিনি। সাহিত্যচর্চাকে ব্রত হিসেবে নিয়েছি কোনো স্বার্থসিদ্ধির জন্য নয়।
অঞ্জন শরীফ : আপনার ভক্ত-পাঠকদের জন্য কিছু বলুন।
: আমার পাঠকদের একটি কথাই বলব তারা যা পড়বেন তা আমল করবেন। কবিতা শুধু মনের খোরাকই নয় এটি, একটি জীবন দর্শনও বটে।
canadadrugpharmacy com certified canada pharmacy online certified canadian international pharmacy
world pharmacy india: best india pharmacy – online shopping pharmacy india
reputable indian online pharmacy: top online pharmacy india – india pharmacy mail order
https://canadiandrugs.store/# northern pharmacy canada
indian pharmacy online: indian pharmacies safe – mail order pharmacy india
canadian pharmacy mall: certified canada pharmacy online – legitimate canadian pharmacy online
http://mexicopharmacy.store/# mexican online pharmacies prescription drugs
mexico drug stores pharmacies mexican pharmacy mexican border pharmacies shipping to usa
buy meds online: Online pharmacy USA – mexican drug pharmacy
neurontin brand coupon: cheap gabapentin – neurontin 100mg price
https://clomid.club/# how can i get generic clomid online
buy wellbutrin in australia: Buy Wellbutrin XL online – wellbutrin prescription australia
where buy generic clomid for sale: Clomiphene Citrate 50 Mg – buy cheap clomid no prescription
paxlovid pharmacy https://paxlovid.club/# paxlovid generic
http://claritin.icu/# cheap ventolin inhaler
how to buy clomid for sale: can you get generic clomid without insurance – where can i get cheap clomid
http://gabapentin.life/# neurontin 300mg tablet cost
neurontin price comparison: generic gabapentin – generic neurontin pill
http://clomid.club/# how to get cheap clomid price
gabapentin 100mg: buy gabapentin – buy neurontin uk
http://clomid.club/# how to get cheap clomid prices
farmaci senza ricetta elenco: farmacia online – farmacia online più conveniente
farmacia online miglior prezzo: kamagra gel – farmacie online autorizzate elenco
https://sildenafilit.bid/# viagra originale in 24 ore contrassegno
acquistare farmaci senza ricetta: farmacia online miglior prezzo – farmaci senza ricetta elenco
farmacia online senza ricetta: avanafil generico prezzo – comprare farmaci online con ricetta
viagra consegna in 24 ore pagamento alla consegna: sildenafil 100mg prezzo – viagra pfizer 25mg prezzo
п»їfarmacia online migliore Avanafil farmaco farmaci senza ricetta elenco
viagra online spedizione gratuita: viagra consegna in 24 ore pagamento alla consegna – cialis farmacia senza ricetta
comprare farmaci online all’estero: Farmacie che vendono Cialis senza ricetta – farmacia online
farmacie online affidabili: cialis prezzo – top farmacia online
http://farmaciait.pro/# farmacie online sicure
farmacia online migliore: Farmacie che vendono Cialis senza ricetta – farmacia online migliore
comprare farmaci online con ricetta cialis generico consegna 48 ore п»їfarmacia online migliore
farmacia online miglior prezzo: kamagra – comprare farmaci online con ricetta
comprare farmaci online all’estero: kamagra gold – farmacia online più conveniente
viagra originale in 24 ore contrassegno: viagra prezzo farmacia – viagra originale recensioni
farmacia online migliore: kamagra oral jelly consegna 24 ore – farmacia online più conveniente
viagra generico sandoz: viagra online siti sicuri – kamagra senza ricetta in farmacia
https://kamagrait.club/# acquistare farmaci senza ricetta
farmacie on line spedizione gratuita: comprare avanafil senza ricetta – farmacia online senza ricetta
farmacie online sicure avanafil spedra farmacia online senza ricetta
farmacia online: farmacia online spedizione gratuita – farmaci senza ricetta elenco
cialis farmacia senza ricetta: sildenafil prezzo – dove acquistare viagra in modo sicuro
top farmacia online: Farmacie a roma che vendono cialis senza ricetta – farmacie on line spedizione gratuita
viagra prezzo farmacia 2023: viagra prezzo farmacia 2023 – pillole per erezione immediata
miglior sito dove acquistare viagra: viagra online spedizione gratuita – viagra online spedizione gratuita