আশুতোষ সরকার

আজ আমি কোথাও যাবােনা

আজ আমি কোথাও যাবােনা আসুক যতই কর্তব্যের অমােঘ ডাক
সুবেহ সাদিকে দাঁড়াবাে না পুবমুখী যেখানে আরক্তিম দিকচক্রবাল
যখন নীড় ছেড়ে উড়ে যায় পাখি, যখন প্রশান্তি দেয় স্বাদু প্রাতঃকাল
তৃষিত প্রত্যুষে শালীন বায়ুর জন্য আশা নেই বনানীর– শাখ বা বিশাখ

অন্যদিন-সকাল হলে, অবসর যদি হাতে, চলে যাই গাঁয়ের রাস্তায়
কখনাে মাছ ধরে জলে, কখনাে রাস্তায় বাঘ-মাছি খেলে গাঁয়ের ছেলেরা
কখনাে অপরিসর মাঠে খেলা করে ক্ষুদে ব্রাডম্যান, বা অনাগত পেলে-রা
আমিও মিশে যাই মন্দ ভালােদের সাথে– আকাঙ্ক্ষিত অনাবিল আস্থায়

অপরাহ্নে আজ যাবাে না বেইলি রােডে, দেখতে সমাজ বদলের থেটার
যাবাে না গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসা তরুণ তরুণীদের উষ্ণ নিশ্বাস ভেজা পার্কে
সংসারে বিবাদ দেখা দিলে শঙ্করাচর্যের মতাে বলবাে– সংসারে কার কে?
এমন কি আজ আর কোলে নিয়ে বসবাে না প্রিয়তমেষু হাইওয়ান গিটার।

আজ কারাে কাছে কোন প্রত্যাশা নেই, ঈশ্বরের কাছেও কিছুই চাবাে না
মক্ষিকার চোখ নিয়ে চেয়ে রবো অনিমিখ-ভাঙা পথের রাঙা ধুলাের পানে
হৃৎপিণ্ড মাঝে পিস্টনের উল্লাসকে থামাতে মন মজাবাে শীতল স্নিগ্ধ গানে
তুমি বলেছাে- ‘আমি আসছি, কিছু সময় রেখাে হাতে’ তাই আজ কোথাও যাবােনা।

এক পেরিক্লিৎস দাও

কবে সেই আদিকাল থেকে ঋষিজ মানুষগুলো সবে,
যবে পেয়েছেন প্রত্যাদেশ, বিসৃজ করেন আলো। তবে
নাছিলো কোন বিভেদনীতি সে শিক্ষণে। কিঞ্চিৎ কুয়াশা
যা ছিলো, অলোকিত সত্তার দূরবীক্ষণে ধৃত সে ধোঁয়াশা
কেটে গেছে প্রজ্ঞালোকে। অন্য শ্রমণ,শিষ্য ও প্রশিষ্যাদি
হেঁটে গেছে সে মহাসড়কে। ভ্রমণ করেছে অন্ত-আদি
বিহীন শাশ্বত সত্য পথ। স্বভাবেই বিলিয়েছে সে শ্রী
শ্রীহীন পরবর্তীকে তারা। এভাবেই দীপ্ত বিশ্বের নৃ।

অনেক বছর গত হলো ধরনীর নরনারী তবু
ক্ষণেক সত্যের পথে রহে। সরণীর সরাইয়ে কভু
দেখা মেলে আশীর্বাদপ্রাপ্ত। বাকি যারা তন্দ্রাচ্ছন্ন ওই
একা চলে অর্ধসত্যে ভুলে। নাকি তারা সত্যহীন বৈ
নয় কিছু। এ আলো-আঁধারি ক্ষয় করো প্রভু, তুলে নাও।
হয় ধ্বংস করো আঁধিয়ার, নয় এক পেরিক্লিৎস দাও।

আশুতোষ সরকার