কবিতা

আশিস মিশ্র

 

বিন্দু

শেষ বিন্দুর পর আর কিছু নেই
এবার নতুন করে শুরু হোক তবে।
যদিও অসম্ভবে পা রেখেছো তুমি
তবু্ও তোমার এই জন্মভূমি
আনন্দে আহ্লাদে চিরস্থায়ী হোক।

কিছু নেই কিছু নেই এমন বলো না
কিছু আছে কিছু আছে এমন করে বলো।

 

সিঁড়ি

এখানেই সব শেষ নয়
আরও কিছু আছে;
যেমন গাছে গাছে ফুল ;
তোমার সত্তায় রয়েছি আকুল।

এই সব শেষ নয়
তোমার ভেতর রয়েছে আমারও সঞ্চয়।

 

বন্ধু

বন্ধু সকলে নয়, বন্ধু কয়েকজন
আমার দুঃখ সকলের নয়।

যদি বলো পরাজয়
স্বীকার করার আগে
সমস্ত অনুরাগে
জড়িয়ে নিয়েছি তোমাকে।

কে আর কাকে
হত্যা করবে বলো ;
একসঙ্গে এসেছি, একসঙ্গে চলো।

অন্ধকার

অন্ধকার দাও, ঘোর অন্ধকার
না হলে সব বৃথা এই সব।

সাহস করে বলো
আলো এসে ছুঁয়ে যাবে।

অন্ধকার দাও, অন্ধকারই আলো
অনিত্য নয়, নিত্যই জমকালো।

বাগান

সব কিছু ফলে না তোমার বাগানে
কিছু কিছু ফলে থাকে, সফল ফলে থাকে।

তার মানে এই নয় যে
বহু আকাঙ্খায় আরও কিছু পেতে গিয়ে
সব হারিয়ে ফেলবে তুমি।

মন খারাপ করো না, এই ভূমি
তোমাকে ধ্বংস করবে না ;
সোনা নয়, সোনা নয়
রূপোর মতো কিছু পেলেও জানবে
ওই তোমারই সব।

বইগুলি

বইগুলি বাইরে এসে দেখছে ;
ওদের নিয়ে চলো নির্জনে।
একা কোনও জায়গায় গোপনে
এসে পড়ো, সব পড়ে শেষ করো আজ।

তুমি তো জানো, তোমার শরীর শরীর নয়
শুধু বইয়ের কোলাজ।

অবসাদ

অবসাদ কিছুটা টকমিষ্টি ফলের মতো।
কাটিয়ে দিলাম এতো গুলো দিন।
কত কিছু পেলাম
দিলাম আরও কিছু।

মনে হয় একটা কিছু দিতে বাকি
যেন লিচুর মতো কোনো আশা করে আছো তুমি।

দেবো, সব দেবো সাজিয়ে থালায়
দেখো, ঠিক করে দেখো
সঠিক শিল্পীর কাজের শেষে
অবসাদ ছুটে ছুটে পালায়।

খেলা

শূন্য হয়ে বসে থাকা কি যায়?
মনে করো ওরাও আছে কাছে
অথচ দেখতে পাচ্ছো না কাউকে।

অদৃশ্যে যা আছে, দৃশ্যে তার সামান্য কিছু
পথ উঁচু নীচু হয়ে নেমে গেছে যেদিকে
সেদিকে গিয়ে দেখো খেলা করছে ডাহুকে ডাহুকে।

 

যাওয়া

দেখো, পৌঁছতে পারবে কিনা।
এমন ভাবতে ভাবতে চলে গেলে
আর ফিরে তাকালে না পেছনে।

পেছনের সব পড়ে থাকে
এই তো তোমার আশ্চর্য যাওয়া।

এই তো তোমার আশ্চর্য যাওয়া।

 

অনন্ত

অনন্ত বলে যে আছে
তাকে আমি চিনি না।
তবুও আমাদের ছেলেবেলার
সেই অনন্তের কথা মনে আছে।

সেও আজ আমার আড়ালে
কতদিন দেখা নেই তার।
বোধহয় অনন্ত কোথাও বসে
বাজাচ্ছে সেতার।

তার সুর ভেসে আসছে।