একটি মশা ও একটি পিঁপড়ের গল্প : সিরাজুল ইসলাম

গল্প

একটি মশা ও একটি পিঁপড়ের গল্প

সিরাজুল ইসলাম

১.
পুরনো গৃহস্থবাড়ির এক কোণে মেঝের নিচে পিঁপড়ের বাসা। শত শত পিঁপড়ের বাস সেখানে। তবে ওপর থেকে খুব একটা বোঝার উপায় নেই। সবই মাটির নিচে। পিঁপড়েগুলোর একটা দল প্রতিদিন খাবারের সন্ধানে বের হয়। খাবার সংগ্রহ করে আবার বাসায় ফিরে যায়।

পিঁপড়ের এই আসা-যাওয়ার মধ্যে একটা মশার সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয় মানে মশাটা সন্ধেবেলা বনবন করে ঘুরছিল কারও রক্ত খাবে বলে। কিন্তু সেদিন কোনো মানুষজন না পেয়ে পিঁপড়েটাকে একা পেয়ে তার কাছে যেয়ে বসে। সে ভেবেছিল যদি পিঁপড়েটার রক্ত খাওয়া যায়। কিন্তু কাছে যেয়ে দেখে পিঁপড়ের দেহে হুল ফোটানোর মতো কোনো জায়গা নেই। হুল ফোটাতে পারলে রক্ত না হোক রক্তরস কিছু পাওয়া যাবে। আর তাতেই তার পেটের খিদে কিছুটা হলেও মিটবে। কিন্তু তা হলো না। তাই কুশল বিনিময় করে মশা পিঁপড়েটাকে বন্ধু হওয়ার প্রস্তাব দিল। পিঁপড়ে সরলমনে মশার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেল।

মশার ভয় একমাত্র বাড়ির গিন্নিমাকে। তার সামনে পড়লে আর রক্ষে নেই। মশাটার বাবা-মা, ভাই-বোনসহ অনেক আত্মীয়স্বজনকে গিন্নিমা তার বড় হাতের থাপ্পড়ে পিষে মেরেছে। মায়াদয়া করেনি। এখন সন্ধে হলেই কয়েল জ্বালিয়ে রাখে। মশাটা তাই জানালা দিয়ে আসতে পারে না। এ সময় পিঁপড়ের সাথে তার সম্পর্কটা খুব কাজে দেবে। চুরি-চামারি করে অন্য পথে ঢুকতে গেলে গিন্নিমার সামনে পড়ে কিনা এ ভয়টা তার খুব। তাই মশাটা তার পিঁপড়ে বন্ধুটাকে বলে রেখেছে- বন্ধু, তুমিতো সারাক্ষণ এ-ঘর ও-ঘর করো। মানে ঘরেই থাকো। আমার মতো উড়ে উড়ে বাড়ির বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা নেই তোমার। মাঝেমধ্যে ঘরের দরজা-জানালার ওপরে বসো। এখানে সেখানে ঘুরঘুর করো। গিন্নিমা কখন কোথায় থাকে খবরটা যদি আমাকে একটু জানাও, তবে খুবই উপকার হয়। আমি নিজে এসে তোমার কাছ থেকে শুনে যাবো।

আচ্ছা তাই হবে। পিঁপড়ে জবাব দেয়।
এরপর মশাটা বলতে শুরু করে, তুমি কত ভাগ্যবান। গিন্নিমার রান্নাঘরে কতকিছু থাকে। তুমি রাতের বেলা আরামে সেগুলো খাও। চিনি, মিছিরি, গুড়ো দুধ, আম, কাঁঠাল, গুড়। আমি কিছুই পাইনে। কাঁঠাল খেতে ইচ্ছে করে খুব। ছোটোবেলায় একদিন মা-র সাথে বেরিয়ে গিন্নিমার পাকা কাঁঠাল খেয়েছিলাম। সেদিনই গিন্নিমার এক থাপ্পড়ে মা চলে গেল। আমি কোনোরকমে দ্রুত পালিয়ে জীবনরক্ষা করি। গিন্নিমা না থাকলে সেই সুযোগে আমি ছেলেটার গা থেকে একটু রক্ত খেতে পারি। কিন্তু জীবনের মায়া বড় মায়া। পুরো গুষ্টি গেছে গিন্নিমার হাতের চড়ে। আমি এখন বড় এতিম, অসহায়। চোদ্দোগোষ্ঠীর মধ্যে শুধু আমি একা বেঁচে আছি। আমার দুর্দিনে এখন তুমি-ই বল-ভরসা। অনেকে না জেনে মনের আনন্দে ঘরে ঢোকে। কেউ মরে আবার কেউ পালিয়ে যায়। ভয়ে আর আসে না।

মশার কাতরস্বরে পিঁপড়েটা গলে যায়। সে মনে-প্রাণে মশাটাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে। তারপর উত্তরে পিঁপড়ে বলে- আমি খুব সতর্ক থাকি বন্ধু। বাচ্চাদের আমি কিছুই বলিনে। আমি দেখেছি, গিন্নিমার কাছে তার ওই পুঁচকে ছেলেটা সবচেয়ে আদরের। ওর কিছু হলে হুলস্থুল বাধিয়ে দেবে। তুমি ছুঁলেই ওদের জ্বর হয়। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এসব বলে। তখন সব শেষ করে দেবে। সারা ঘরবাড়িতে স্প্রে করে তছনছ করে দেবে। ধ্বংস করে দেবে আমাদের বাসা, আস্তানা। তুমি এমন কিছু কোরো না যাতে ওরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তা হলে তোমাকে মারার জন্য ওরা অতো সিরিয়াস হবে না।

মশাটা বলে, কিন্তু আমি কী করবো বন্ধু। আমার পেটে তো রক্ত চাই। রক্ত ছাড়া আমার পেট ভরে না। তা ছাড়া পেটের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার জন্যও প্রাণীর রক্ত প্রয়োজন। এ বাড়িতে গরু-ছাগল নেই যে সেখান থেকে নেব। তাই অগত্য মানুষ ধরি। ফুল-পাতার রস, পঁচা পানি, ঘুটে-গোবর খেয়ে কিছুই হয় না।বলি, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনো। হেবিট চেঞ্জ করো। মানুষ এটাকে বলে, লাইফস্টাইল মডিফিকেশন। তা না করলে পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারবে না। অনেক মানুষ এখন এটা করছে।

তুমি মানুষের অনেককিছু জানো দেখছি।

বেঁচে থাকতে গেলে জানতে হচ্ছে। একটা মাছি একসময় আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চেয়েছিল। আমি রাজি হইনি। কারণ মাছির নামে হাজার বদনাম। ওরাও তোমাদের মতো অনেক রোগ-ব্যাধি ছড়ায়। মানুষ বিরক্ত হয়। অনেক আগে কোন্ লেখক যেন তার একটা লেখায় লিখেছিলেন- ‘রেতে মশা দিনে মাছি, এই নিয়ে কেলকাত্তায় আছি।’ তা হলে বোঝো! তোমাদের দুজনের নামের সাথে বদনামও লেগে আছে। আমাদেরও অনেক দোষ। তবে মাটির নিচে থাকি। ওপর থেকে বোঝা যায় না। তাই কিছুটা রক্ষে। আমরা আবার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষে করি বলে গবেষকরা বলে থাকেন। অনেক ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খাই। তারপরও নিস্তার নেই। একবার গিন্নিমা স্বামীকে দিয়ে বাজার থেকে পিঁপড়েমারা ওষুধ আনিয়েছিলেন। বলবো কি তোমারে, বহু সৈনিক পিঁপড়ে সেদিন মারা গিয়েছিল। তবে আমাদের বাসাটা মাটির বেশ নিচে। আমরা কিছু জ্যান্ত ছিলাম। রানিমা সেখান থেকে বংশবিস্তার করে আবার আগের পর্যায়ে এনেছে।

তোমাদের মারতে পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন তো কোনো উদ্যোগ নেয় না। যেখানে থাকো ওই ঘরটা একটু সামলে চললেই হয়। কিন্তু আমাদের ওপর বহুমুখী আক্রমণ চলে। এমনকি আকাশ থেকে বিমানে করে ওষুধ ছিটানো হয়। বাড়ি বাড়ি নেওয়া হয় নানান ব্যবস্থা; পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন থেকে ওষুধ ছিটানো; ঝোপঝাড়, গাছপালা কেটে পরিষ্কার করা হয়। মানে আমাদের আবাসন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে দেওয়া হয়। বলোতো এমন হলে আমারা থাকবো কোথায়? মানবাধিকার যদি থাকে, তবে মশাধিকার থাকবে না কেন? আমাদেরও তো জীবন আছে। পৃথিবীর আলো-বাতাসে আমাদেরও তো অধিকার আছে!

চুপ করো। থামাও তোমার কথা। তোমার হুলে মানুষের কতশত রোগ হয় জানো?

জানি। ম্যালেরিয়া, গোদ, পীতজ্বর, চিকুনগুনিয়া। এখন আবার ডেঙ্গু হচ্ছে।

সবগুলোই সিরিয়াস। মানুষ মারা যায়। আতঙ্কে থাকে। আচ্ছা, তুমি কি জানো, এক মশার দংশনে এতগুলো রোগ হয় কেন?

আমি যদ্দুর শুনেছি মশারা তিন শ্রেণির। অ্যানোফিলিস, কিউলেক্স ও এডিস। এক এক মশার দংশনে এক এক রোগ হয়। অ্যানোফিলিস মশার দংশনে ম্যালেরিয়া হয়। আর কিউলেক্স মশার দংশনে গোদরোগ ছাড়াও খটমট নামের জাপানি কী যেন একটা রোগ হচ্ছে এখন।

জাপানি এনসেফালাটিস।

ঠিক ধরেছো। তুমি তো সব জানো দেখছি!

কর্তামশাই বাসায় গিন্নিমার সাথে বলাবলি করেন। তাই শুনেছি।

সম্প্রতি আমাদের মধ্যে এডিস মশার বাড়-বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে। মানুষ ওটাকে ভয় পাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। ওটার দংশনে ভাইরাসঘটিত যে অসুখটি হচ্ছে, তা হলো ডেঙ্গু। তবে মোদ্দা কথা হলো, পুরুষ মশারা সাধারণত ফল-ফুলের নির্যাস ও পাতার রস খেয়ে থাকে। আর স্ত্রী মশারা ডিম পাড়ার আগে প্রাণীর রক্তপান আবশ্যক হয়ে পড়ে বলে মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীর দেহে হুল ফুটিয়ে রক্তপান করে।

তুমিতো আবার মেয়ের জাত। ডিম পাড়ার সময় রক্ত দরকার।

ওইটেই জ্বালা দোস্ত। পুরুষ হলে ফুলের নির্যাস পান করতাম। ঝামেলা থাকতো না। বনে-বাদাড়ে পাতার আড়ালে বসে থাকতাম।

সেখানেও তো জ্বালা! ব্যাঙের বাচ্চাগুলো জ্বালায় না তোমাদের!

জ্বালায় না মানে! সুযোগ পেলে খপ করে ধরে গপ করে খেয়ে ফেলে। একদিন আমরা দু বন্ধু একটা পাতার আড়ালে বসে আছি। দু বন্ধু মানে তুমি তো বোঝো বন্ধু। এ বয়সে একটু ইয়ে-টিয়ে মানে ভাবসাব হয়। তো আমার সেই বন্ধু আর আমি গল্প করছি। এরই মধ্যে কোন্ ফাঁকে এক বড় কুনো ব্যাঙ লতাপাতা কাঁপিয়ে থপথপ করে এগিয়ে এল। আমি সেটা দেখতে পেয়ে সমূহ বিপদ আঁচ করে বন্ধুকে বললাম, পালাও পালাও শিগগির পালাও। আমি উড়ে গেলাম বটে, কিন্তু ও আর পারলো না। আমার চোখের সামনে ব্যাঙটার গালে চলে গেল। কষ্টে আমার হাত-পা অসাড় হয়ে গেল। কতদিন যে মন খারাপ করে এদিক-ওদিক ঘুরেছি, বলতে পারব না। এখনও ওর জন্য খুব কষ্ট হয়। প্রথম প্রেম তো!

তা ঠিক। ভোলা যায় না। আমাকেও একবার একটা তেলাপোকা মানে আরশোলা ধরবে বলে টার্গেট করে। লাল আরশোলা! আমি বুঝলাম, শালা একটু একটু করে আগাচ্ছে। আমি বিপদটা বুঝে কোনোরকম দেরি না করে ঘরের মেঝের একটা ফাটলে ঢুকে পড়ি। মনে মনে বললাম, ভাগ্যিস ফাটলটা ছিল। তবে আমিও তক্কে তক্কে আছি। আমি নিশ্চিত গিন্নিমার চোখে পড়লে ওর মরণ নিশ্চিত। সেদিন যেখানেই পড়ে থাকুক শালা, আমার অন্য সাথীদের ডেকে এনে ওকে বাসায় নিয়ে যাবো। যে মুখে আমাকে ধরতে চেয়েছিল ওই মুখেই আমি সজোরে একটা কামড় বসাবো। বলবো, জ্যান্তে তো পারলাম না, তাই মরণের পর মরণকামড় দিলাম তোর মুখে।

বেশতো প্রতিজ্ঞা তোমার দোস্ত!

প্রতিজ্ঞা নয়। মনের ঝাল ঝাড়া।

তাই বলে লাশের ওপর? এটা অন্যায়। মড়ার ওপর খাড়ার ঘা চলে না।

আমাদের কাজ তো মড়া খাওয়া। মড়া খেয়ে পরিবেশদূষণ থেকে পৃথিবীকে রক্ষে করি। আর তুমি যে জ্যান্ত প্রাণীর রক্ত খাও! এ বাড়ির মধ্যে কার রক্ত বেশি খাও তুমি?

তুমি খুব রেগে গেছো মনে হচ্ছে। আমি তো আর তোমার কোনো ক্ষতি করিনে। তোমার রক্ত খাইনে। আমি তক্কে তক্কে থাকি গিন্নিমার ওই পুঁচকেটাকে ধরব বলে। কারণ ওইটাকে ধরলে রিস্ক কম। তবে দিনে আসিনে। রাতে যখন শোয় তখন জানালা দিয়ে টুপ করে ঢুকে পড়ি।

মশারি টাঙানো থাকে না?

থাকে। আমি ভুলেও মশারির মধ্যে ঢুকিনে।

কেন?

তা হলে মরণ নির্ঘাত। আর বের হতে পারবো না। গিন্নিমা এক থাপ্পড়ে নাড়িভুড়ি বের করে দেবে। তাই মশারির বাইরে থেকে পুঁচকেটার হাত খুঁজি। ওর হাতটা মশারির গায়ে লাগলেই দেরি করিনে। হুল ফুটিয়ে এক নিঃশ্বাসে রক্ত চুষে নিই। একটু নড়াচড়া করে। যেদিন গিন্নিমা বুঝতে পারে সেদিন মশারির পাশটায় একটা কোলবালিশ দিয়ে দেয়। সেদিন ফিরে যাই। উপোস থাকি।

শোবার আগে গিন্নিমা কয়েল জ্বালিয়ে রাখে না?

সবদিন কয়েল জ্বালে না। আবার সব কয়েলের ধোঁয়া আমাকে আটকাতে পারে না। মাঝে মাঝে এমন কী এক ধরনের কয়েল জ্বালায় টিকতে পারিনে। কয়েলের কথা উঠলো যখন তখন বলি- আমার একটা ভাই ছিল। বয়সে আমার পিঠোপিঠি। ও যে কোনো কয়েলের ধোঁয়ার মধ্যে নেচে বেড়াত আর গান গাইতো। বলিহারি ডানা ছিল ওর। খুব ভালো সুর বের হতো। কয়েলের ধোঁয়ায় ওর কিচ্ছু হতো না। কিন্তু কথায় বলে, অতি বাড় বেড়ো না, ছাগলে মুড়ে খাবে। তা-ই হলো। সাহস ভালো, তবে দুঃসাহস ভালো না। পুরুষ বলে ওর কত সুবিধে ছিল। প্রাণীদের রক্ত ওর খেতে হতো না। তাই বলি বাইরে থাক। ফুলে-পাতায় বসে থাক। না, মা-র সঙ্গে থাকবে। জানটা বেরিয়ে গেল গিন্নিমা-র দু হাতের জোড়া থাপ্পড়ে। উহ্! খুব দুঃখ হয় ভাইটার জন্য!
অনেকক্ষণ মশাটা চুপ করে থাকে। কথা বলতে পারে না। ভাইটার জন্য তার খুব কষ্ট হচ্ছে। পিঁপড়েটাও সেইসাথে চুপ করে থাকে। তারপর মশাটা আবার বলা শুরু করে- যেদিন ঘরে কড়া কয়েলের ধোঁয়া থাকে সেদিন আর ঘরে থাকতে পারিনে। বেড়িয়ে পড়ি অজানা উদ্দেশে। সহজে তো আর খাবার মেলে না। খুব কষ্ট বন্ধু খুব কষ্ট! প্রায়ই সারারাত উপোস থাকতে হয়। ঝোপঝাড়ের মধ্যে বসে সময় পার করবা? সেখানেও ওৎ পেঁতে আছে মাকড়শা। ছোটো ছোটো ডাল ও লতা-পাতা ঘিরে জাল বুনে বেশ আরামে বসে আছে মাঝখানটায়। অন্ধকারে দেখতে না পেয়ে যেই না জালে পাখনাটা আটকে যাবে অমনি দু লাফে এসে ধরবে শালা! এমন পা ঝাড়া পাজি। এ ছাড়া আরও একটা বড় বিপদের আশঙ্কা মাথায় রাখতে হয়। মশারির ধার ঘেঁষে চুপটি মেরে বসে থাকে টিকটিকি। বাগে পেলে ওর লম্বা জিব দিয়ে আলতো করে ধরে পেটে চালান করে দেবে। দয়ামায়া করবে না। চারিদিকে ভয় বন্ধু, চারিদিকে…

তোমার তো বন্ধু খুব সমস্যা। খাবার জমিয়েও রাখতে পারো না আমাদের মতো। আমরা যেমন খাবার জমিয়ে রাখি। যখন-তখন খেয়ে ফেলিনে। বাসায় নিয়ে যাই। অভাবের দিনে সবাই মিলে সেগুলো খাই। দলবদ্ধ বা সমাজবদ্ধ জীব বলে আমাদের বেশ সুনাম আছে। ‘কলোনি’ যাকে বলে। কলোনিতে তিন ধরনের পিঁপড়ে থাকে- রানি পিঁপড়ে, শ্রমিক পিঁপড়ে ও পুরুষ পিঁপড়ে। কলোনিতে মৌমাছিদের মতো এক বা একাধিক রানি, বহু স্ত্রী শ্রমিক এবং কয়েকটি পুরুষ সদস্য থাকাটাই নিয়ম। তবে কলোনিভেদে এটার তারতম্য হয়।

দেখেছো, তুমি পুরুষ না স্ত্রী শোনা হয়নি। তোমার নামটাও জানা হয়নি।

আমিও তোমার জাত। আমার নাম নোলক। মানে নাকের ফুল। তবে আমি শ্রমিক, এটাতেই আমার গর্ব। আবার জানোতো সব শ্রমিক পিঁপড়ে বন্ধ্যা হয়। তবে তোমার নাম কী বন্ধু?

আমার নাম নিশি। মানে রাত্রি, রজনী এসব আরও কত কি যেন হয়। তবে শ্রমিক মানে মানুষেরা মজদুর যাকে বলে সেই শ্রমিক?

না। আমরা কাজের শ্রমিক। নিজেদের কাজ আমরা সবাই মিলে করি। একসাথে থাকি, একপাতে খাই।

বেশ ভালো তো! তা হলে তুমিওতো বন্ধ্যা। তোমার কোনো বাচ্চা হবে না?

না।

দুঃখ হয় না তোমার?

হয়। তবে রানি পিঁপড়ে ছাড়া আর কেউ তো ডিম পাড়তে পারে না।

দেখো জ্বালা! রানি হতে ইচ্ছে হয় না?

কীভাবে হবো? এটা প্রকৃতির দান। প্রাকৃতিক নির্বাচন। মেনে নিতে হবে।

বলো, তোমাদের সমাজব্যবস্থা নিয়ে কিছু বলো।

কলোনিতে নতুন রানি হয়ে যে আসে তার প্রথম প্রজন্মের শাবকের প্রায় সবাই হয় স্ত্রী শ্রমিক। বাসা তৈরি, খাদ্য সংগ্রহ, রানির যত্ন ও তদারকি, নতুন শাবকদের লালনপালনের দায়িত্ব পড়ে স্ত্রী শ্রমিকদের ওপর। আর বড় আকারের শ্রমিকদের বলে সেনা পিঁপড়ে, সৈনিক। ওদের মাথাটা একটু বড় হয়। শত্রুর আক্রমণের হাত থেকে কলোনি রক্ষার দায়িত্ব থাকে ওদের ওপর।

প্রকৃতি তোমাদের কত সুবিধে করে দিয়েছে। তোমরা ‘সমাজবদ্ধ প্রাণী’ বলে খেতাব পেয়েছো। আচ্ছা, গিন্নিমার চড় খেয়েছো কখনও?

না। চড় খাইনি। তবে একবার তার পায়ের তলায় পড়েছিলাম। আমার দুটো পা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। কোনোমতে ঘষতে ঘষতে বাসায় পৌঁছে অনেকদিন শুয়ে ছিলাম। কলোনিতে সবাই আমার দেখভাল করেছে। এখনও খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলি। সেই থেকে গিন্নিমার ত্রিসীমানায় যাইনে বা মাটিতে নামিনে। বাপরে বাপ। পায়ের যা ওজন! পা-টা নরম বলে কিছুটা রক্ষে। নতুবা পৃথিবীর এই করোনাকাল দেখে যেতে পারতাম না।

তোমাদের নিয়ে মানুষ কোনো ছড়া বা কবিতা লিখেছে?

লিখেছে। নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য। ‘কাজের লোক’ শিরোনামে লেখা। মৌমাছি ও পাখির সাথে পিঁপড়েকেও খুব মূল্যায়ন করা হয়েছে। ‘পিঁপিলিকা পিঁপিলিকা, দলবল ছাড়ি একা…’। আমাদের পিঁপড়ে জাতির কাছে নমস্য ব্যক্তি ওই নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য। আমাদের তিনি সাহিত্যে স্থান দিয়েছেন। মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন।

ওতো পুরনো কবিতা।

নতুন কবিতা কোথায় পাবো? মানুষের ঘরবাড়িতে থাকি। যখন যে কবিতা পড়ে তাই শুনি। গিন্নিমা মাঝে মাঝে পুঁচকেটারে পড়ে শোনায়। ‘পিঁপিলিকা পিঁপিলিকা…’ কবিতাটা আমার খুব ভালো লাগে। যখন পড়ে মনটা ভরে যায়।

আমাদের নিয়ে কত কবিতা হয়েছে জানো?

শুনেছি। তবে খুব একটা শোনা হয়নি। গিন্নিমা একদিন একটা ছড়া খুব জোরে জোরে পড়ছিলেন। সেটাই শুনেছিলাম। কিছুটা মনে আছে। শোনাবো তোমাকে? ছড়ার নাম ‘ঢাকার মশা’।

তা শোনাও।

ঢাকার মশা ঢাকার মশা
মারো কোটি টাকা নাও,
গাঁ গেরামে যা হয় হোক
ঢাকার দিকে তাকাও।

ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে উড়ে
দিচ্ছে শু- ফুটিয়ে,
পেট পুরে রক্ত খেয়ে
পড়ছে সোজা লুটিয়ে।আর মনে নেই। ভুলে গেছি। তোমার অনেক নিন্দা-মন্দ হলো। ইগোতে লাগছে না তো? বন্ধু হয়ে বন্ধুর দোষ-ত্রুটি বলা। তবে আমার কথা নয়। সবই মানুষের মুখ থেকে শোনা।

না বন্ধু। জন্মেছি দুঃখ নিয়ে, তাড়াবো কী দিয়ে? তোমার তো বন্ধু ভালোই মেধা। কেমন মনে আছে! আমিতো সব ভুলে যাই। এত মনে করি কর্তামশাইয়ের পড়ার ঘরে ঢুকব না। কিন্তু ঠিক করতে পারিনে। ভুল হয়ে যায়। ঘর চিনতে পারিনে। কর্তামশাই লেখালেখির সময় গেলে খুব বিরক্ত হন। অ্যারোসল স্প্রেটার জন্য চিৎকার করেন। গিন্নিমা সাথে সাথে সেটা নিয়ে ছুটে যেয়ে ঘরটার আনাচকানাচ ভিজিয়ে দেন স্প্রে করে। তাই চিৎকার শুরু হলেই পড়ি কি মরি করে জানালা দিয়ে বের হয়ে যাই। আবার একটা চাইনিজ ব্যাট এনে রেখেছে। নতুন যন্ত্র। ইলেকট্রিক চার্জ হয়। ওটার পাল্লায় পড়লে আর রক্ষে নেই। চটপট শব্দ করে পুড়িয়ে নিমেষেই ছাই করে দেবে। বুঝতে না পেরে বহু মশার অকালে জীবন গেছে ওটায়। কিছুদিন ছিলাম কর্তামশাইয়ের কমপিউটারের পিছনে টেবিলের ফাঁকে। ওরে বাবা! কমপিউটার সারাবার মিস্ত্রি এসে মাকড়শার জাল ও ঝুলকালি দেখে এমন ঝাটান ঝাটালো, থাকতে পারলাম না। কোনোরকমে জানটা নিয়ে পালিয়েছি। বলা যায় সারাক্ষণ নিরাপত্তার অভাব। কখন কী হয়! ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। একটু রিস্ক হলেও সিপিইউ-টার ভেতরে থাকা যায়। ঢোকার ছিদ্র আছে। তবে ভেতরে খুব গরম। এসি রুম হলে অসুবিধে ছিল না। আবার রুম যদি এসি হয় তবে এয়ার টাইট হবে। সেক্ষেত্রে ঘরে ঢোকা মানে জেনেশুনে বিষ পান করা। তোমার জীবন তো আর এতটা অনিরাপদ নয় বন্ধু?

আছে। তবে তোমার মতো এতটা নয়। একবার ডাইনিং টেবিলের ওপর উঠেছিলাম। চিরকাল তো টেবিলের নিচেয় থেকে গেলাম। উঠে দেখি কী আছে সেখানে। দেখলাম, এক জায়গায় অনেক পিঁপড়ে গোল হয়ে কী যেন খাচ্ছে। শুনে বুঝলাম, মধু। সম্ভবত, খাওয়ার সময় একফোটা মধু গিন্নিমার হাত থেকে পড়ে টেবিলের ওপর। সেখানেই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে পিঁপড়ের দল। আমিও এগিয়ে যেয়ে মুখ লাগিয়েছি, ওমনি কোথা থেকে গিন্নিমা এসে সেটা দেখে কী একটা দিয়ে ঝাটিয়ে দিল। আমি ছিটকে যেয়ে পড়লাম নিচে। মধু খাওয়ার সাধ মিটে গেল মুহূর্তেই। ব্যথা পেয়েছিলাম খুব। তবু কাটিয়ে উঠেছি। বেঁচে আছি, এটুকু অনেক। তবে কী বলব বন্ধু তোমারে। কোনোদিন মধুতো খাওনি। একটুখানি খেয়েছিলাম। খুব মজার। খুবই…

২.
একদিন সন্ধেয় কর্তামশাইয়ের ঘরে ঢুকে টেবিলের তলায় নিশি আশ্রয় নেয়। অতি সতর্কতার সাথে ফাঁক বুঝে কর্তামশাইয়ের গোঁড়ালিতে কয়েকবার হুল ফোটানোর চেষ্টা করে। দু একবার সফলও হয়। আর তাতে সামান্য পরিমাণ রক্ত তার পেটে যায়। নিশি তার পেট ভরানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। কর্তামশাই নড়াচড়া করতে করতে পায়ে বারবার হাত দিয়ে চুলকোতে থাকেন। আর তখনই নিশি একটুখানি সরে যেয়ে বসে। সুযোগ বুঝে আবার আসে।
এভাবেই চলছিল মশা ও কর্তামশাইয়ের দড়িটানাটানি। এক পর্যায়ে কর্তামশাইয়ের হাতের চড়ের কিয়দংশ নিশির গায়ে লাগে। তৎক্ষণাৎ নিশি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কাকতালীয়ভাবে খাবারের সন্ধানে টেবিলের পায়ার কাছেই ছিল নোলক। কী যেন একটা নড়াচড়া করছে দেখে সে দ্রুত সেদিকে এগিয়ে যায়। দেখে, তার বন্ধু নিশি। অন্য কেউ হলে নোলক ওটাকে খাবার বিবেচনা করে দলবল ডেকে কলোনিতে নিয়ে যেত। কিন্তু এ যে তার বন্ধু- নিশি! তাই বন্ধুকে বাঁচানোর লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালাতে সে আরও কয়েকজন শ্রমিক পিঁপড়েকে ডেকে আনলো। কোনোরকমে কলোনিতে নিতে পারলে সেবা-শুশ্রƒষা করে সারিয়ে তোলা যাবে। নোলক বললো, বন্ধু, আমরা তোমাকে আমাদের বাসায় নিয়ে যাচ্ছি। তোমার ভয় নেই। এ মুহূর্তে তোমার সেবা দরকার। বারবার বলেছিলাম, সাবধানে থেকো। কিন্তু কিসে যে কী হয়ে গেল! দেখছি তোমার একটা ডানা ভেঙে গেছে। দুটো পা-ও বেশ ক্ষতিগ্রস্ত। পেটের এক জায়গায় বেশ বসে গেছে। আগে তোমাকে বাসায় নিয়ে যাই তারপর দেখা যাবে। বাসায় অনেকরকম চিনিযুক্ত খাবার, ফল-ফুলের রস, পচনশীল মৃত প্রাণী, নানা কীটপতঙ্গের দেহ নিঃসৃত মিষ্টিরস ইত্যাদি আছে। যেটা পছন্দ হয় খেয়ে আগে একটু সুস্থ হও।
কিন্তু নিশি ভাবলো, নোলক তাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে বাসায় নিতে পারলে সবাই মিলে ভাগযোগ করে ছিঁড়ে খাবে। সে নোলকের সাথে যাবে না বলে হাত-পা ছুঁড়ে জানিয়ে দিল। কয়েকবার ওঠবার চেষ্টাও করলো সে। কিন্তু পারলো না।
এদিকে আরও একদল শ্রমিক পিঁপড়ে সারিবদ্ধভাবে আসা শুরু করলো। তাদের থামাতে নোলক এগিয়ে গেল। বুঝালো, নিশি যেতে চাচ্ছে না। ও আমাদের বিশ্বাস করতে পারছে না। ও ভেবেছে ওকে বাসায় নিয়ে আমরা খেয়ে ফেলবো। তাই তোমরা ফিরে যাও। আমিসহ আর কয়েকজন শ্রমিক থাকি। দেখি কী করা যায়।
একজন সৈনিক পিঁপড়ে হুঙ্কার দিয়ে উঠলো, যাবে না মানে! চলো দেখি সবাই মিলে চ্যাংদোলা করে ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাবো। যদি ওর বিশ্বাস না হয় তবে সত্যি সত্যি দু-তিনজন মিলে খেয়ে ফেলবো। কী বলো তোমরা?
সবাই হইহই করতে করতে আবার মশাটার দিকে যেতে উদ্যত হতেই নোলক আবার অনুরোধের সুরে তাদের নিরস্ত করলো।
এবার নোলক নিশির দিকে এগিয়ে গেল। বললো, বন্ধু, কেমন বোধ হচ্ছে তোমার শরীর?খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। হাত ও পা দুটোই ভেঙে গেছে। একটা ডানা ঝুলে আছে দেহে। পেটেও অসহ্য ব্যথা।

আমাদের সঙ্গে যাবে?

যেতে তো চাই। কিন্তু তোমাদের মধ্যেও তো ভালো-মন্দ আছে। অনেকে ভাববে খাবার এসে গেছে। নে ছিঁড়েখুড়ে খেয়ে নে।

তা ঠিক। তোমার ভাবনা অমূলক নয়। আর আমি কজনকেইবা ঠেকাবো। সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করি। সমাজে কত ধরনের পিঁপড়ে আছে- লাল পিঁপড়ে, কালো পিঁপড়ে, ডেঁয়ো পিপড়ে, বিষ পিঁপড়ে, ক্ষুদে পিঁপড়ে। সব জাতের মধ্যে আবার ভালো-মন্দ আছে। তবে মন্দের সংখ্যা খুব কম হলেও ওই দু-একটা পিঁপড়েই পুরো জাতের বদনাম কুড়িয়ে আনে।

নোলকের সঙ্গে থাকা অপর পিঁপড়েগুলো তখন আশপাশে ঘুরছে আর এলাকা দেখে বেড়াচ্ছে। এরই মধ্যে ফেরোমোন নামক রাসায়নিক সঙ্কেতের সাহায্যে নোলক টের পেলো একদল পিঁপড়ে সারি বেয়ে তাদের দিকে ছুটে আসছে। তাদের মনের ভাষা সে মুখের অ্যানটিনার সাহায্যে বুঝে নিল। তারা মশাটাকে খাবার হিসেবে ধরে নিয়ে যেতে চায়।

নোলক খুব অসহায় বোধ করলো। তবে নিশির শরীরের যন্ত্রণা ও পেটের খিদে বিবেচনা করে বন্ধুর শুঁড়টাকে নিজের পেটে ফুটানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে নোলক, মৃত্যুর আগে তার দেহের বিন্দু পরিমাণ রক্তরস দিয়ে যদি নিশির শুঁড়টা একটু ভিজিয়ে দিতে পারে।

This image has an empty alt attribute; its file name is 23579pppp-Copy.jpg

সিরাজুল ইসলাম

জন্ম ১৯৬০, সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলাধীন পারুলিয়া গ্রামে।

প্রকাশিত গ্রন্থ
আবছা আপেক্ষিক (১৯৮৬), কাব্যগ্রন্থ
দুজনে (১৯৯৪), যৌথ গল্পগ্রন্থ
দৌড় ও দোলা (১৯৯৮), যৌথ গল্পগ্রন্থ
বামাবর্ত ও অন্যান্য গল্প (২০১৭), একক গল্পগ্রন্থ

১৯৮৮ তে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় (গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর) আয়োজিত উদীয়মান সাহিত্যিকদের দেশব্যাপী সাহিত্য প্রতিযোগিতায় কবিতা ও গল্প উভয় বিষয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে শীর্ষস্থান অধিকার করে ‘একুশে সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন।

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র থেকে ১৯৯২ তে পুস্তক রচনা, অনুবাদ ও সম্পাদনা পদ্ধতি এবং ১৯৯৩ তে গ্রন্থ রূপায়ণ ও চিত্রণ বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি-র গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর গবেষণামূলক রচনা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট পত্রিকা ‘মাতৃভাষা’ ছাড়াও বাংলাদেশের অনেক প্রতিনিধিত্বশীল পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়েছে।

১৯৯৩ তে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র বাংলাদেশ আয়োজিত বাংলা চতুর্দশ শতাব্দী পূর্তি উপলক্ষে ‘গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের পূর্বশর্ত গণগ্রন্থাগার’ শীর্ষক প্রবন্ধ রচনায় জাতীয় পর্যায়ে শীর্ষস্থান অধিকার করেন এবং পুরস্কৃত হন।

সম্পাদিত পত্রিকা
বিপরীত। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ : ২৬ মার্চ ১৯৮৫; শহীদ দিবস সংখ্যা ১৯৯০ ; জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত, বৈশাখ-আষাঢ় ১৩৯৭, জুন ১৯৯০।
উচ্চারণ। ২৬ মার্চ ১৯৮৬ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০০৪।
নৈর্ঋত। শহীদ দিবস ১৯৯২, ফাল্গুন ১৩৯৮।
স্রােত। ফেব্রুয়ারি ২০০০, ফাল্গুন ১৪০৬ : নভেম্বর ২০১৯।
চিত্রণ। ১ আগস্ট ২০০১।
সঙ্কলন। অকটোবর ২০০২, কার্তিক ১৪০৯।
নবনূর। জুলাই ২০১৪, শ্রাবণ ১৪২১
কবিতাপত্র। ২১ মার্চ ২০১৬, ৭ চৈত্র ১৪২২ : ১৮ অকটোবর ২০১৭।

About S M Tuhin

দেখে আসুন

হেডস্যার আতঙ্ক : নেলী আফরিন

হেডস্যার আতঙ্ক নেলী আফরিন ০১. ‘কী আবদার! ইশকুলে যাবে না, উঁ-হ! রোজ রোজ এক অজুহাত …

5 কমেন্টস

  1. Thank you a bunch for sharing this with all people you really recognize what you are talking approximately! Bookmarked. Please also seek advice from my web site =). We will have a link trade contract among us

  2. hi!,I really like your writing so much! proportion we keep in touch more approximately your post on AOL? I need an expert in this area to solve my problem. May be that is you! Looking forward to see you.

  3. Excellent site you have here but I was curious about if you knew of any discussion boards that cover the same topics talked about in this article? I’d really love to be a part of group where I can get responses from other knowledgeable individuals that share the same interest. If you have any recommendations, please let me know. Many thanks!

  4. eskişehir escort, eskişehir escort bayan, eskişehir escort kızlar, eskişehir ucuz escort, eskişehir escort numaraları, eskişehir türbanlı escort, eskişehir escort fiyatları

  5. Very quickly this website will be famous among all blogging people, due to it’s nice posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *