আমার ভাষা মায়ের ভাষা বাবার ভাষা : আশিস মিশ্র

আমার ভাষা মায়ের ভাষা বাবার ভাষা

আশিস মিশ্র

আমি স্বাধীন। আমি জ্ঞানী নই, পণ্ডিতও নই। কোনো স্বদেশী আন্দোলনে আমার কোনো অংশগ্রহণ নেই। সামাজসেবী বলতে যা বোঝায়, তাও নই। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নেই। কিন্তু আমি দেশের নাগরিক বলেই আমার ভোটটি আমার পছন্দের পার্থীকে দিতে যেতে হয়। আমি কোনো আধ্যাত্মিক গুরুও নই। কোনো পদার্থবিদ নই। ইতিহাসবিদও নই। জীবন বিজ্ঞান সাধকও নই। তবে তা কিছুটা বুঝি। ভূগোল সম্পর্কে আমার সামান্য ধারণা আছে। আমি কোনো প্রকৃতি বিশেষজ্ঞ নই। চিকিৎসক নই। শিক্ষকতা আমার পেশাও নয়। আমি ধর্মান্ধ নই। আমি মৌলবাদীও নই। আমি দখলদার বা আগ্রাসী নই। আমি পরশ্রীকাতরও নই। আমি একজন সাধারণ মানুষ। আমি একজন সাধারণ কবিতার পাঠক। সামান্য অঙ্কন শিল্পী। তাই আমি মুক্ত। আমার ভাষাও তাই মুক্ত-ভাষা। সে ভাষা আমার মায়ের ভাষা। সে ভাষা আমার পিতৃভাষাও। তাই আমারও দুটি অদৃশ্য মুক্ত -ডানা আছে। আমি কারুর কোনো অনুমতি নিই না উড়ে বেড়ানোর। আমার বিলাসিতা আমার ভালোবাসা সবকিছু ওই ভাষার কাছে ঋণী। তা যদি কেউ কেড়ে নেয়, তাহলে আমি বিদ্রোহী। না হলে আমি মগ্ন নিজের কাছে। আমি জন্মের পর শুধু ‘নিয়েই ‘চলেছি এই জগৎ থেকে। তাই আমারও কিছু ‘দেওয়ার’ আছে এই জগৎকে। জগৎ তা কি নিচ্ছে? নাকি আমিও জগতের কাছে ব্রাত্য বা প্রত্যাখাত? তা কি আমি আমার সমস্ত সত্তার চেতনা দিয়ে অনুভব করতে পারি? আমি কি কিছু কাজ করে চলেছি? কী কাজ?

কাজ। আমারও কাজ আছে। সেই কাজেরও একটি ভাষা আছে। যে ভাষায় আমি সবসময় কথা বলি। তাই আমাকে জগত বুঝতে পারে, আমার স্বাধীন স্বরূপটি কেমন। তার মধ্যেও আমার কিছু গোপন ভাষা আছে। তা একান্ত নিজের। তার তল কেউ কখনো খুঁজে পায় না।

বাংলাভাষার অন্যতম কবি শম্ভু রক্ষিতের সঙ্গে একদিন এই ভাষা, বৈধ সম্পর্ক ও অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে সারারাত আলোচনা হয়েছিলো। আলাচনা হয় বৈধ সন্তান ও অবৈধ সন্তান নিয়ে। তার নির্যাসটি এই দাঁড়ালো যে ভালোবেসে সব সৃষ্টিই বৈধ। আর ভালোবাসাহীন কোনো সৃষ্টি অবৈধ। এবং ভাষারও কি বৈধ অবৈধ বলে কিছু আছে? কোনটা বৈধ ভাষা, কোনটা অবৈধ ভাষা? এসব আমরা অনুভব করতে পারি কি? পারি। পারি।

এই যে এতক্ষণ আমি যে ভূমিকাটি লিখলাম, তার বৈধতা ঠিক কতখানি? তা কি কোনো ভাষামানুষের মনের ভাষা? সেই মনের ভাষা তো আমি এতোদিন বলবার বা লিখবার চেষ্টা করছি । সব কবি- সাহিত্যিক তাই করেন তো। মনের ভাষার সঙ্গে মিলন ঘটিয়ে দেওয়া। যেমন করে মিলন ঘটিয়ে দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। নজরুল। বঙ্গবন্ধু। নেতাজী। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। জীবনানন্দ। শামসুর রাহমান। আল মাহমুদ। হুমায়ূন আহমেদ। জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, আরও কতো মহামানব।

এই সব ভাষা আমার। সে আমার মায়ের ভাষা। বাবার ভাষা। কারণ আমার জন্মের পর আমার ভাষাই আমার পরিচয়। তা সরিয়ে নিলে আমি এক বোবা প্রাণী। বোবা প্রাণী হয়ে বেঁচে থাকার কোনো অর্থ নেই। বোবা হওয়া তো জড় পদার্থের সমান। যেহেতু আমি এক ভাষাজীবী, তাই আমিও এক প্রাণময় বস্তু। যে বস্তুর রক্ত – মাংস আছে বলেই, সেই রক্ত-মাংসেরও একটি ভাষা আছে। তা ঝরিয়ে দিতে দিতে আমার শরীর একদিন প্রাকৃতিক নিয়মে বিলীন হয়ে যাবে মাটিতে।

সেই অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ঘটনার আগে আমি তাই মুক্ত মনে কিছু জেনে নিতে চাই। বুঝে নিতে চাই ভাষাকে। বুঝে নিতে চাই বস্তু জগতকে।
আমি বুকে ধারণ করে রাখি সেই সব কাব্যভাষা–

” ওরে ভাষা নাই ভাষা শুধু মিছে ক্রন্দন
ওরে আশা নাই আশা শুধু মিছে ছলনা


ওরে বিহঙ্গ বিহঙ্গ মোর
এখনি অন্ধ বন্ধ করো না ডানা। “

আমি বুকে ধারণ করে রাখি সেই সব কাব্যভাষা–
” বল বীর /বল উন্নত মম শীর.. “।

আমি বুকে ধারণ করে রাখি সেই সব কাব্যভাষা–

” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি।”

স্মরণীয় চরণের কাছে বসে থাকি নিরন্তর।

” হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে”।
কবিতার ভাষা যখন আমার, আমাদের ভাষা হয়ে ওঠে, তখন মহৎ কবিতার গুণ কী রকম হবে, তাও জেনে নিই। কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেছেন — ” কবিতার মধ্যে তিনটি জিনিস থাকা চাই। কাব্যগুণ, ছন্দ, মিল।”
সব কবিতায় তা থাকে না বলেই কবিতা হয়ে ওঠে অপাঠ্য। যে সংখ্যাটি এখন অজস্র। তার মধ্যে আশার আলো এই যে, পৃথিবীতে আজও মহৎ কবিতা লেখা হচ্ছে বলেই কবিতা থেকে আমরা সরে দাঁড়াইনি।

শুধু কি কবিতার ভাষা? তা নয়। মাহামানবদের মুখের ভাষাটিও আমরা বহন করে চলি যুগযুগ ধরে।
যেমন “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো”।
” যেমন — ” সত্যের জন্য আমি সব কিছু করতে পারি কোন কিছুর জন্য আমি সত্যকে ত্যাগ করতে পারি না।”
যেমন–” যত মত তত পথ”।
যেমন — ” প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থেকো। এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। “
এই ভাষা আমার। এই ভাষা আপনারও। এই ভাষাই মুক্তি দিতে পারে। অশুভ চক্রের বিনাশ ঘটে।

এখন আমার মনে পড়ছে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর একটি স্মরণীয় কথা– “যতদিন রবীন্দ্রনাথ, যতদিন নজরুল, যতদিন বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান, ততদিন বাংলাদেশের কেউ ক্ষতি করতে পারবে না। “
তাই পৃথিবীতে বাংলা ভাষার জন্য অমর ২১ শের আন্দোলনের ইতিহাস কোনোদিন ভুলতে পারবো না।
বাঙালি জাতিসত্তার এই অমোঘ বাংলা ভাষা, সে আমাদের মায়ের ভাষা, বাবার ভাষা।

তবে আমি বা আমরা তো সবসময় কাব্যভাষায় কথা বলি না। কথা বলি কথ্য ভাষায়। সেই ভাষার মৃত্যু ঘটছে চারপাশে। তার ওপর ভাষা সাম্রাজ্যবাদের আঘাত। ওপর তলার ভাষা নীচের তলার ভাষাকে নিপীড়ন করে চলেছে। তাই পৃথিবীতে ক্রমশ ভাষার মৃত্যু ঘটছে।

তাই আমরা মৃত্যুর ভাষার থেকে জীবনের ভাষার কাছে নতজানু হয়ে থাকি। এই জীবনের ভাষার কথাই তো সাহিত্য – শিল্প – সংস্কৃতি-সংগ্রামের ভাষা। তাই নিয়ে আমি ডানা মেলে দিই। আর গাইতে থাকি–

” ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে / ও বন্ধু আমার। “

বন্ধু আছে মানেই তো ভেতরে আছে বন্ধুত্বের ভাষা। তার খোঁজ করে চলেছি। সে আমার, আমাদের বন্ধুভাষা। ভাবতে ভাবতে এক বন্ধুর ফোন এলো। সে আমাকে বললো,” কী করছো আজ ঘরে বসে। চলে এসো একটু ভাসমান পদ্যপদে ডুব দিই। এমন বৃষ্টিদিন, রেনড্যান্সের উত্তরআধুনিক প্রকাশ, মনকে উতলা করেছে। একটু জলসম্পদে ওষ্ঠ ছোঁয়াবো। “
আমি বললাম, ” অন্ধকার নামুক। তবেই ডুব দেবো। তারপর গলা ছেড়ে বললাম শক্তি চট্টোপাধ্যায়–

” আমার কাছে আসতে বলো / একটু ভালোবাসতে বলো / বাহিরে নয় বাহিরে নয় / ভিতর জলে ভাসতে বলো”।

তারপর আমার মনটি একটু এলোমেলো হয়ে গেলো। সেই এলোমেলো ভাষার কাছে আমি দাসত্ব গ্রহণ করলাম কিছুক্ষণ। তখনি তা দূরে ঠেলে দিয়ে এক কবিবন্ধু হরপ্রসাদ সাহুর একটি কবিতার চরণ মনে পড়লো–

“কবি তো তোমার দাস / সেই আনন্দে তুমি লাস্যময়ী হয়ে ওঠো / হয়ে ওঠো বিচিত্রচারিণী।”

এই হচ্ছে প্রেমের কবিতার ভাষা। আপাতত সেই ভাষা থেকে বেরিয়ে পড়লাম।
এই অতিমারির সময়ে আজ ও কাল আমাদের রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন। তাই বাড়ির কাছে এক শিল্পীবন্ধুর কাছে গেলাম৷ একটু গোলমরিচ দিয়ে চা ও বিস্কিট। তখন একটি দৃশ্যের মুখোমুখি পড়লাম। শিল্পী কন্যা তৃতীয় শ্রেণী। অনলাইনে ক্লাস করছে। আর খাতায় লিখে চলেছে ঈশিতা। তনুশ্রী আমায় বললো, ও মোবাইলে যা জানে, আমি তা জানি না।

সত্যি তাই ? এই প্রজন্ম মোবাইলের ভাষা, ইন্টারনেটের ভাষা যা জানে, তা আমি বা আমরা অনেকেই জানি না। ঈশিতা ইংলিশ মিডিয়াম। বাংলায় কথা বললেও বাংলা ভাষায় লেখা টেকস্ট বই সে অতো বোঝে না। অনেক বাংলা শব্দর মানে জানে না। সে বললো, সম্পদ, প্রাচুর্য, অঙ্গ-র মানে কী? আমি তাকে বললাম। সে ঠিক বুঝতে পারলো না। মোবাইলে তার মানে জানতে চাইলো।
মনে হলো, ছোট্ট ঈশিতার কাছে আমার পরাজয় ঘটেছে। হয় সে আমার ভাষা বোঝে না। বা আমি তাকে বোঝাতে অক্ষম।

এই সব অক্ষমতার ভাষার কাছে আমি মাঝে মাঝে চলে আসি। আবার খুঁজে দেখি অন্য কিছু। তখনই আমার মনে পড়ে ইংরেজি ভাষার বিখ্যাত কবি অ্যাজরিয়াল মিতচেল একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন —

” Most people ignore most poetry because most poetry ignores most people.”

তার মানে কবিতা সকলের জন্য নয়? তাহলে কি কবিতার ভাষায় যখন কথা বলি, সে ভাষাও সবাই কি বোঝে? সকলে বোঝে না কবিতার ভাষা। তাকে বুঝতে হলে ‘কবিতা কী’, এই বোধ থাকা দরকার।

তবুও যখন কিছু প্রেমের কবিতায় মন চলে যায়, তখন তা মনে মনে উচ্চারণ করতে থাকি। মনে হয় এ তো আমারই কাব্যভাষা। যেমন–

” আজ মনে হয় বসন্ত আমার জীবনে এসেছিল
উত্তর মহাসাগরের কূলে
আমার স্বপ্নের ফুলে
তারা কথা কয়েছিল
অস্পষ্ট পুরানো ভাষায়। “– সুকান্ত ভট্টাচার্য।

যেমন —

” তোমার চোখের মতো চোখ আমি দেখিনি কখনো,
তেমন ঠোঁটের মতো ঠোঁট ওষ্ঠ করিনি স্থাপন
কোনোদিন, তোমার বুকের পাখি একদা যে-গান
শুনিয়েছে আমাকে, তেমন সুর ধ্বনিত এ জীবনে। “
— শামসুর রাহমান।

যেমন —

” আমার উদ্ভাবনার টেবিল জুড়ে তোমার আনাগোনা। আঙুল নড়ছে আর ফুটো হয়ে যাচ্ছে উপমা… “।
— আল মাহমুদ।

যেমন–

” চাই, চাই আজও চাই তোমারে কেবলই। “
–সুধীন্দ্রনাথ দত্ত।

এই ভাবে আমি তো প্রেমের ভাষা খুঁজে পাই। যা আমি পেতে চেয়েছি। আমরা পেতে চেয়েছি।

তবে এই বাংলা ভাষা সব কবিতায় থাকে না। কবিতার ভাষাও কতো বদলায়। যেমন ভানুসিংহের পদাবলী বুঝতে গেলে ব্রজবুলি ভাষা বুঝতে হবে। কবি বীতশোক ভট্টাচার্য তাঁর একটি প্রবন্ধে লিখেছেন –” কাব্যের প্রকৃতি বুঝতে গেলে কাব্যভাষা নামের উপাদানটি সবার আগে বুঝে নেওয়ার দরকার আছে। রবীন্দ্রনাথ ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে যে ভাষায় কবিতা লিখেছেন, যে ভাষার অনেকখানি রবীন্দ্রনাথের নিজের হাতেই গড়া, যে ভাষাকে তিনি ইচ্ছেমতো ব্যবহার করেছেন এবং রূপ দিয়েছেন, সেই বাংলা আগে না জানলে রবীন্দ্রকাব্য পড়ে বোঝা যাবে না। ভানুসিংহের পদাবলী বুঝতে গেলে ব্রজবুলি ভাষা বুঝতে হবে, ইংরেজি গীতাঞ্জলি পড়তে গেলে আগে ইংরেজিভাষা জেনে নেওয়া চাই। ভাষা পালটে যায়, তার সঙ্গে কাব্যভাষারও বদল ঘটে। রবীন্দ্রনাথ বিহারীলাল – হেমচন্দ্র – নবীনচন্দ্রের সময়ে যে ভাষায় কবিতা লিখেছেন সে- কাব্যভাষা একই বাংলার, তবুও ঠিক একই বাংলারও নয়। রবীন্দ্রনাথ শেষজীবনেও মনিআর উইলিয়ামসের সংস্কৃত অভিধান নাড়াচাড়া করেছেন, কারণ তিনি জানেন কবির ব্যবহৃত শব্দ শুধু জীবনে থাকে না, অভিধানেও থাকে, কবি অভিধানের মরে যাওয়া শব্দকে বাঁচাতে জানেন, অচলিত শব্দকেও তিনি কবিতায় চালিয়ে দেন। “

এখন কথা হচ্ছে এই টুকু জানার পরও আমার জ্ঞান পরিপূর্ণ হয়ে গেছে বলা যাবে না। ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান পরিপূর্ণ হতে গেলে প্রচুর পড়াশোনা ও ফিল্ডওয়ার্ক করতে হবে। শুধু অর্থনীতিবিদরা ফিল্ডওয়ার্ক করেন না, ভাষাবিদরাও ফিল্ডওয়ার্ক করেন। কিন্তু এখন এই কাজটি শুধু ঘরে বসে করা হচ্ছে, তা হলো কম জেনে বেশি বাতেলা মারার মতো ব্যাপার। এই বাতেলা মারার লোকজন সমাজে সবচেয়ে বেশি। যেমন কবিমাত্রেই তার কাব্যভাষা সম্পর্কে সচেতন নন। ওই বিষয়ে সব কবির ধারণাও স্পষ্ট নয়। কাব্যের বাকপ্রতিমা ও চিত্রের চিত্রপ্রতিমা ব্যাপারটি না জানলে সেই শিল্প তেমন পূর্ণতা লাভ করতে পারে না। প্রখ্যাত চিত্র সমালোচক মৃণাল ঘোষ তাঁর একটি প্রবন্ধে লিখেছেন –” কবিতা তৈরি হয় বাকপ্রতিমা দিয়ে। ছবি গঠিত হয় চিত্রপ্রতিমার সমন্বয়ে। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘মেটাফর’, তারই ভিন্নধর্মী প্রকাশ ঘটে বাকপ্রতিমা বা চিত্রপ্রতিমায়। “

কিন্তু আজ আমি বা আমরা এই দুই প্রতিমার সমন্বয়ে যা লিখে চলেছি, তার অবয়বটি যে সবসময় পপুলার হচ্ছে, তা নয়। পপুলার পোয়েট্রি আর ক্লাসিক পোয়েট্রির মধ্যে তফাৎ আছে বৈকি। তাই সব কবিতা কবিতা নয়। সব কবিতার ভাষাও চমকে দেওয়ার মতো হয় না।

আর আমরা কতজন পুরনো ধ্যানধারণা ভেঙে বেরতে পারছি? নতুন ভাষা খুঁজেও পাচ্ছি ক’জন? যে নতুন ভাষা তাঁর সাহিত্যে ব্যবহার করে আলোড়ন ফেলেছিলেন পিটার হান্টকে। ২০১৯ সালে তিনি নোবেলজয়ী।
তাই আমি বা আমরা যেটুকু কবিতা বাংলা ভাষায় লিখে চলেছি, সেই ভাষা কেমন হবে তা আগে ঠিক করে নিতে হবে।
জীবনের অন্তিমে এসেও রবীন্দ্রনাথ কোনো উত্তর পেলেন না। সেই কবিতা আজও বিস্ময়কর। ” প্রথম দিনের সূর্য “। সেই ১২ টি চরণের কাছে আমি আজীবন নতজানু হয়ে বসে থাকবো। আমার ভাষা, মায়ের ভাষা বাবার ভাষা খুঁজে দেখবো।

This image has an empty alt attribute; its file name is MANGROVE.jpg
This image has an empty alt attribute; its file name is ASIS-MISRA.jpg

আশিস মিশ্র

জন্ম : হলদিয়ার বড়বাড়ি গ্রামে। পূর্বমেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।

বর্তমানে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী।
এছাড়াও সম্পাদনা ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।

একক ও যৌথ মিলিয়ে ৮ টি কাব্যগ্রন্থ । সম্পাদনা দুটি বই ।
পুরস্কার ও সম্মাননা ১৯ টি।

About S M Tuhin

দেখে আসুন

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব এবং প্রথম ভাষা শহিদ আনোয়ার হোসেন : অরবিন্দ মৃধা

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব এবং প্রথম ভাষা শহিদ আনোয়ার হোসেন অরবিন্দ মৃধা   বাংলাভাষা আন্দোলন …

5 কমেন্টস

  1. If you want to get much from this post then you have to apply such techniques to your won blog.

  2. I get pleasure from, cause I found exactly what I used to be taking a look for. You have ended my 4 day long hunt! God Bless you man. Have a nice day. Bye

  3. спорттовары в интернет-магазине
    Качественные для занятий спортом по выгодным ценам в нашем магазине
    Надежность и удобство в каждой детали инвентаря в нашем ассортименте
    Спорттовары для начинающих и профессиональных спортсменов в нашем магазине
    Низкокачественный инвентарь может стать препятствием во время тренировок – выбирайте качественные аксессуары в нашем магазине
    Инвентарь для занятий спортом только от ведущих производителей с гарантией качества
    Сделайте свою тренировку более эффективной с помощью инвентаря из нашего магазина
    спорттоваров для самых популярных видов спорта в нашем магазине
    Отличное качество аксессуаров по доступным ценам в нашем интернет-магазине
    Удобный поиск и оперативная отправка в нашем магазине
    Акции и скидки на инвентарь для занятий спортом только у нас
    Прокачайте свои спортивные качества с помощью спорттоваров из нашего магазина
    Большой выбор товаров для любого вида физической активности в нашем магазине
    Качественный инвентарь для тренировок спортом для детей в нашем магазине
    инвентаря уже ждут вас в нашем магазине
    Не пропускайте тренировки с помощью инвентаря из нашего магазина
    Низкие цены на аксессуары в нашем интернет-магазине – проверьте сами!
    инвентаря для любого вида спорта по доступным ценам – только в нашем магазине
    Инвентарь для профессиональных спортсменов и любителей в нашем магазине
    магазин спортивных товаров http://sportivnyj-magazin.vn.ua/.

  4. Легкая установка
    Полиэтиленовые трубы для теплоснабжения
    труба полиэтиленовая пэ https://truba-pe.pp.ua/.

  5. You really make it seem so easy together with your presentation however I find this topic to be really something which I think I would never understand. It sort of feels too complicated and very vast for me. I am looking forward on your next post, I will try to get the hang of it!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *